ঢাকা ০৯:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাজীগঞ্জে জোড়া খুনের মামলায় প্রধান আসামি সোহাগ সহ মোট গ্রেফতার ১৩

হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নে পৌঢ় দম্পতি উত্তম বর্মণ ও কাজলী রানী বর্মণকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি মো. সোহাগ হোসেন’সহ ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে আটককৃত প্রধান আসামি মো. সোহাগ হোসেন ও মিজানুর রহমানকে নিয়ে ঘটনাস্থল সহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ, ওসি তদন্ত নজরুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক ইউনুস মিয়া, নাজিম উদ্দীন, আব্দুর রহমান, সুফল সিংহ সহ একাধিক ফোর্স।

সেখান থেকে হত্যাকান্ডে তাদের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়। পুলিশ জানায়, পৌঢ় দম্পতি হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃতরা হচ্ছে বড়কুল এলাকার এন্নাতলীর মো. সোহাগ হোসেন।

Model Hospital

এছাড়া মিজানুর রহমান, বাবুল, মাসুদ, রাশেদ(২৭) রাকিব(২৩), আলমাছ(৪৫), দিদার, মাসুদ, শ্যামল, হারেছ, আলামিন ও ফয়সাল। তারা উত্তর রায়চোঁ, দক্ষিণ রায়চোঁ, উত্তর বড়কুল ও টোরাগড় দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

জানা যায়, চলতি মাসের গত ৭ তারিখে হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল এলাকায় বসবাসকারী এক হিন্দু দম্পতি রাতের খাবার শেষে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পরে। পরের দিন সকালে পাশের বাড়ির সবিতা সাহা নামে নারী ফুল তোলার জন্য ঐ বৃদ্ধ দম্পতির ঘরের পাশের ফুল গাছের কাছে গিয়ে উক্ত দম্পতির কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে তাদেরকে ডাকতে থাকে। অতঃপর ঘরের ভিতরে অন্ধকার ও উক্ত দম্পতির কোন সাড়া শব্দ না থাকায় আশপাশের লোকজনদের ডেকে এনে ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পায় দম্পতিকে কে বা কারা হাত-পা ও চোখ বেঁধে হত্যা করেছে এবং ঘরের সকল জিনিসপত্র এলোমেলো করে রেখেছে। পরবর্তীতে তারা হাজীগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ দুটির সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন।

উক্ত ঘটনার পর ঐ দম্পতির মেয়ে রিনা রানী বর্মন হাজীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের খবরটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এবং খবর পেয়ে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডি পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

ঘটনাটি জানতে পেরে র‌্যাব উক্ত চাঞ্চল্যকর ও ক্লু-লেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকার কোতয়ালী থানাধীন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা থেকে আসামি মোঃ সোহাগ কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী সোহাগ উক্ত ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার সত্যতা স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরও জানায়, সে একটি চোর চক্রের সদস্য। তারা গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে বৃদ্ধ দম্পতি ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় চুরি করার উদেশ্যে ঘরের জানালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে। চুরি করার একপর্যায়ে ঐ দম্পতি সজাগ হয়ে যায় এবং তাদের চিনে ফেলে। এসময় দম্পতি ডাক-চিৎকার করার চেষ্টা করলে গ্রেফতারকৃত আসামি সোহাগ ও তার সহযোগীরা মিলে তাদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে বিছানার উপর বালিশ চাঁপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়।

হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, ১৩ জনের মধ্যে ১০ জনকে আদালদের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকী তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

ট্যাগস :

কচুয়ায় সাচার শ্রমজীবি সমবায় সমিতির নববর্ষের উদযাপন

হাজীগঞ্জে জোড়া খুনের মামলায় প্রধান আসামি সোহাগ সহ মোট গ্রেফতার ১৩

আপডেট সময় : ১০:৩০:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নে পৌঢ় দম্পতি উত্তম বর্মণ ও কাজলী রানী বর্মণকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি মো. সোহাগ হোসেন’সহ ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে আটককৃত প্রধান আসামি মো. সোহাগ হোসেন ও মিজানুর রহমানকে নিয়ে ঘটনাস্থল সহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ, ওসি তদন্ত নজরুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক ইউনুস মিয়া, নাজিম উদ্দীন, আব্দুর রহমান, সুফল সিংহ সহ একাধিক ফোর্স।

সেখান থেকে হত্যাকান্ডে তাদের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়। পুলিশ জানায়, পৌঢ় দম্পতি হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃতরা হচ্ছে বড়কুল এলাকার এন্নাতলীর মো. সোহাগ হোসেন।

Model Hospital

এছাড়া মিজানুর রহমান, বাবুল, মাসুদ, রাশেদ(২৭) রাকিব(২৩), আলমাছ(৪৫), দিদার, মাসুদ, শ্যামল, হারেছ, আলামিন ও ফয়সাল। তারা উত্তর রায়চোঁ, দক্ষিণ রায়চোঁ, উত্তর বড়কুল ও টোরাগড় দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

জানা যায়, চলতি মাসের গত ৭ তারিখে হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল এলাকায় বসবাসকারী এক হিন্দু দম্পতি রাতের খাবার শেষে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পরে। পরের দিন সকালে পাশের বাড়ির সবিতা সাহা নামে নারী ফুল তোলার জন্য ঐ বৃদ্ধ দম্পতির ঘরের পাশের ফুল গাছের কাছে গিয়ে উক্ত দম্পতির কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে তাদেরকে ডাকতে থাকে। অতঃপর ঘরের ভিতরে অন্ধকার ও উক্ত দম্পতির কোন সাড়া শব্দ না থাকায় আশপাশের লোকজনদের ডেকে এনে ঘরে প্রবেশ করে দেখতে পায় দম্পতিকে কে বা কারা হাত-পা ও চোখ বেঁধে হত্যা করেছে এবং ঘরের সকল জিনিসপত্র এলোমেলো করে রেখেছে। পরবর্তীতে তারা হাজীগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ দুটির সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন।

উক্ত ঘটনার পর ঐ দম্পতির মেয়ে রিনা রানী বর্মন হাজীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের খবরটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এবং খবর পেয়ে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডি পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

ঘটনাটি জানতে পেরে র‌্যাব উক্ত চাঞ্চল্যকর ও ক্লু-লেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকার কোতয়ালী থানাধীন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা থেকে আসামি মোঃ সোহাগ কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী সোহাগ উক্ত ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার সত্যতা স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরও জানায়, সে একটি চোর চক্রের সদস্য। তারা গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে বৃদ্ধ দম্পতি ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় চুরি করার উদেশ্যে ঘরের জানালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে। চুরি করার একপর্যায়ে ঐ দম্পতি সজাগ হয়ে যায় এবং তাদের চিনে ফেলে। এসময় দম্পতি ডাক-চিৎকার করার চেষ্টা করলে গ্রেফতারকৃত আসামি সোহাগ ও তার সহযোগীরা মিলে তাদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে বিছানার উপর বালিশ চাঁপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়।

হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, ১৩ জনের মধ্যে ১০ জনকে আদালদের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকী তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।