সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী : শিক্ষামন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি বলেছেন ‘আমার মা ও খালা শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় ছিলেন। তাই প্রজন্মের সন্তান হিসেবে আজ আমি নিজেও গর্ববোধ করছি। আর যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আজ শত বছর উদযাপন হচ্ছে এক সময় আমার খালা তার প্রধান শিক্ষক ছিলেন। এমন একটি বর্ণাঢ্য আয়োজনে অংশ নিতে পেরে দারুণভাবে উচ্ছ্বসিত আমি।’
![priyo chandpur 12 Model Hospital](https://priyochandpur.net/wp-content/uploads/2023/11/awfe.png)
শুক্রবার দুপুরে চাঁদপুর মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার শত বছর পূর্তি উপলক্ষে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের শিখন পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে শিখবে, অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন হবে। এছাড়া মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। কারণ আমরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরীক্ষার ভয়-ভীতি চাই না। আমরা চাই আনন্দময় শিক্ষা পদ্ধতি হবে এবং আনন্দময় শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানমনষ্ক হবে। তারা শুধু প্রযুক্তিবান্ধব নয়, প্রযুক্তির ব্যবহার ও উদ্ভাবনে দক্ষ হবে এবং মানবিক-সৃজনশীল মানুষ হবে। যেন তারা দেশের সুনাগরিক এবং বিশ্ব নাগরিক হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এখন শিক্ষার একটা বড় বিষয় হলো শিখতে শেখা। আমরা মনে করি যেকোনো সময় যেকোনো বয়সে মানুষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা নিতে চাইলে তার সেই সুযোগ থাকা উচিত। দেশব্যাপী সেই সুযোগ আমরা তৈরি করে দিতে চাই। সেজন্যই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সরকারের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসছে।
মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই, তার সবই সম্ভব আমাদের শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে। মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ও পারে সঠিকভাবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে। কারণ বিগত ১০০ বছরে এ প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া শেষ করে দেশ-বিদেশে অনেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত চাঁদপুর মাতৃপীঠ সরকরি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শত বছর পূর্তির এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন শতবর্ষী নারী বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সকিনা খাতুন। এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রবীণ ও নবীন মিলিয়ে নানা বয়সী কয়েক হাজার শিক্ষার্থী আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়েন।
উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক রূপালী চম্পকের উপস্থাপনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সদস্যসচিব মনিরা আক্তার। অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও দেশে এবং বর্তমান মিলিয়ে প্রায় চার হাজার শিক্ষার্থী এই শত বছর উদযাপনে যোগ দেন। শুধু তাই নয়, চাঁদপুর মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন বেশ কয়েকজন প্রধান ও সহকারী শিক্ষকও অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে চাঁদপুর মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা শহরে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করেন। পরে চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে জাতীয় সংগীত গেয়ে জাতীয় পতাকা ও বেলুন এবং পায়রা উড়িয়ে আয়োজনের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা নেচে-গেয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান।
এসময় চাঁদপুর পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অসিত বরণ দাস, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষিকা সকিনা খাতুন ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ, সাবেক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।