ঢাকা ০৪:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঁদপুরে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে সপ্তম শ্রেণীর কিশোরীর পেটে থাকা ৭ মাসের বাচ্চা হত্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি : চাঁদপুর দি ইউনাইটেড হাসপাতালে পীর মহাসিন স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া কিশোরীর সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা বাচ্চা হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানা আক্তার সেতু অবৈধভাবে তার হাসপাতলে এভাবে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীদের বাচ্চা ঔষধের মাধ্যমে মেরে ফেলে প্রসব করায়।

Model Hospital

শনিবার বিকেলে সপ্তম শ্রেণীর কিশোরী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা জোরপূর্বক প্রসব করার খবর শুনে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক হাসপাতালে গিয়ে এর সত্যতা প্রমাণ পায়।

খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রশিদের নির্দেশে এসআই রফিক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দি ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেখতে পায়। এসময় অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী পুলিশের কাছে সবকিছু অকপটে স্বীকার করেন ও তার সর্বনাশ যে করেছে তার উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।

অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী জানান, মোবাইল ফোনে ফেসবুকের মাধ্যমে কুমিল্লা জেলার গৌরীপুরের ইমন নামে এক যুবকের সাথে পরিচয় হয়। বেশ কিছুদিন তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে ইমন চাঁদপুরে এসে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় তার সাথে অবৈধ মেলামেশায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এই খবর পরিবারের লোকজন জানতে পেরে দালালের মাধ্যমে ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেতুর সাথে ১৫ হাজার টাকা চুক্তি হয়। চুক্তি মত ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করলে সেতু সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা বাচ্চা ঔষধ ও ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলে।

এদিকে অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা কিশোরীর বাচ্চা প্রসব হওয়ার খবর শুনে সাংবাদিকরা দি ইউনাইটেড হাসপাতালে আসলে পরিচালক সুলতানা আক্তার সেতু সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানা আক্তার সেতু ঘটনাটি আড়াল করে রেখে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ৩০৩ নাম্বার কক্ষে ভর্তিরত কিশোরীর পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে জানান।

চাঁদপুর মডেল থানার এসআই রফিক জানান, মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক হলে ইমন দেখা করতে এসে মেয়ের সাথে অবৈধ মেলামেশা করেছে বলে জানিয়েছেন কিশোরী। তবে হাসপাতলে যেহেতু চিকিৎসা নিতে এসেছে এখানে ডাক্তার তাকে দেখে কিশোরীর বাচ্চা প্রসব করাবে। পরবর্তীতে এর সাথে যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পুরো ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর অবশেষে ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেতু জানান, গাইনি ডাক্তার মারিয়া হোসাইন অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে দেখে ঔষধ দিয়েছেন। পরবর্তীতে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তার বাচ্চা প্রসব করানোর জন্য তাকে ওষুধ সেবন করা হয়েছে। এই ঘটনাটি বাড়াবাড়ি না করে সমঝোতা করার অনুরোধ জানান তিনি।

এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানা আক্তার সেতু একজন কসাই। এই হাসপাতলে এযাবৎকালে অনেক অবিবাহিত কিশোর ও যুবতীর অবৈধ গর্ভপাত মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তারা করেছে। সেতু দালাল চক্রের মাধ্যমে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীদের এই হাসপাতালে এনে ওষুধ সেবন করিয়ে বাচ্চা হত্যা করে অবৈধ গর্ভপাত ঘটায়। এছাড়া সেতু বেশকিছু বাচ্চা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর পূর্বে এই হাসপাতালে কাগজপত্র জটিলতার কারণে বেশ কয়েকবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হানা দিয়ে জরিমানা আদায় করেছে। এই হাসপাতলে অবৈধভাবে বাচ্চা হত্যা করে গর্ভপাত করার ঘটনায় হাসপাতালটি সিলগালা করে দিয়ে পরিচালক সেতুর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবী জানান সচেতন মহল।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মতলব উত্তরে ইমামের রাজকীয় বিদায়

চাঁদপুরে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে সপ্তম শ্রেণীর কিশোরীর পেটে থাকা ৭ মাসের বাচ্চা হত্যা

আপডেট সময় : ০২:০৬:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিনিধি : চাঁদপুর দি ইউনাইটেড হাসপাতালে পীর মহাসিন স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া কিশোরীর সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা বাচ্চা হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানা আক্তার সেতু অবৈধভাবে তার হাসপাতলে এভাবে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীদের বাচ্চা ঔষধের মাধ্যমে মেরে ফেলে প্রসব করায়।

Model Hospital

শনিবার বিকেলে সপ্তম শ্রেণীর কিশোরী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা জোরপূর্বক প্রসব করার খবর শুনে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক হাসপাতালে গিয়ে এর সত্যতা প্রমাণ পায়।

খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রশিদের নির্দেশে এসআই রফিক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দি ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেখতে পায়। এসময় অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী পুলিশের কাছে সবকিছু অকপটে স্বীকার করেন ও তার সর্বনাশ যে করেছে তার উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।

অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী জানান, মোবাইল ফোনে ফেসবুকের মাধ্যমে কুমিল্লা জেলার গৌরীপুরের ইমন নামে এক যুবকের সাথে পরিচয় হয়। বেশ কিছুদিন তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে ইমন চাঁদপুরে এসে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় তার সাথে অবৈধ মেলামেশায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এই খবর পরিবারের লোকজন জানতে পেরে দালালের মাধ্যমে ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেতুর সাথে ১৫ হাজার টাকা চুক্তি হয়। চুক্তি মত ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করলে সেতু সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা বাচ্চা ঔষধ ও ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলে।

এদিকে অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা কিশোরীর বাচ্চা প্রসব হওয়ার খবর শুনে সাংবাদিকরা দি ইউনাইটেড হাসপাতালে আসলে পরিচালক সুলতানা আক্তার সেতু সাংবাদিকদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানা আক্তার সেতু ঘটনাটি আড়াল করে রেখে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ৩০৩ নাম্বার কক্ষে ভর্তিরত কিশোরীর পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে জানান।

চাঁদপুর মডেল থানার এসআই রফিক জানান, মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক হলে ইমন দেখা করতে এসে মেয়ের সাথে অবৈধ মেলামেশা করেছে বলে জানিয়েছেন কিশোরী। তবে হাসপাতলে যেহেতু চিকিৎসা নিতে এসেছে এখানে ডাক্তার তাকে দেখে কিশোরীর বাচ্চা প্রসব করাবে। পরবর্তীতে এর সাথে যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পুরো ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর অবশেষে ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেতু জানান, গাইনি ডাক্তার মারিয়া হোসাইন অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে দেখে ঔষধ দিয়েছেন। পরবর্তীতে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তার বাচ্চা প্রসব করানোর জন্য তাকে ওষুধ সেবন করা হয়েছে। এই ঘটনাটি বাড়াবাড়ি না করে সমঝোতা করার অনুরোধ জানান তিনি।

এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানা আক্তার সেতু একজন কসাই। এই হাসপাতলে এযাবৎকালে অনেক অবিবাহিত কিশোর ও যুবতীর অবৈধ গর্ভপাত মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তারা করেছে। সেতু দালাল চক্রের মাধ্যমে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীদের এই হাসপাতালে এনে ওষুধ সেবন করিয়ে বাচ্চা হত্যা করে অবৈধ গর্ভপাত ঘটায়। এছাড়া সেতু বেশকিছু বাচ্চা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর পূর্বে এই হাসপাতালে কাগজপত্র জটিলতার কারণে বেশ কয়েকবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হানা দিয়ে জরিমানা আদায় করেছে। এই হাসপাতলে অবৈধভাবে বাচ্চা হত্যা করে গর্ভপাত করার ঘটনায় হাসপাতালটি সিলগালা করে দিয়ে পরিচালক সেতুর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবী জানান সচেতন মহল।