ঢাকা ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হুমকির মুখে বেড়ীবাঁধ সড়কসহ অসংখ্য বসত ভিটা

আবারো ভাঙছে চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদী

আবারো ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে। চলতি বর্ষায় রঘুনাথপুর এলাকায় ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় ১শ’ মিটার জায়গা। ভাঙ্গন আতঙ্কে দিনপার করছে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।
২০১৭ সাল থেকে অল্প অল্প করে ডাকাতিয়ার ভাঙ্গনের কবলে বিলীন হচ্ছে পুরানবাজার, রঘুনাথপুরসহ এই অঞ্চলটি। ইতোমধ্যে প্রায় ৬শ মিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গনরোদে বরাবরের মতো এবারও আশ্বাস দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তবে স্থানীয়রা আশ্বাস নয়, চায় স্থায়ী প্রতিকার।
সম্প্রতি রঘুনাথপুরে গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১শ’ মিটার জায়গা তলিয়ে গেছে নদীতে। এছাড়া ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হুমকিতে রয়েছে অনেক বসতভিটা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ওয়াপদার রাস্তা। ভাঙ্গনরোধে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে বালিভর্তি ব্যাগ নদীতীরে ফেলছেন।
স্থানীয়রা জানান, ডাকাতিয়া নদীর উত্তর পাড়ে অসংখ্য ডুবচর ছাড়াও অহেতুক কয়েকটি চড় পড়ে আছে। যার ফলে নদীর দক্ষিণ পাড়ে জোয়ার-ভাটার তীব্র স্রোতে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীর উত্তর পাড়ের চরগুলো ড্রেজিং করতে এসেও কাজ সম্পন্ন না করে ফিরে গিয়েছে। কি কারণে ড্রেসিং কাজ সম্পূর্ণ না করে কর্তৃপক্ষ ফিরে গিয়েছে নদীর দক্ষিণ পাড়ের এলাকার মানুষ তা জানেন না।
চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার পৌর ৫ নং ওয়ার্ডস্থ রঘুনাথপুর বাজার সংলগ্ন শেখ বাড়ী, খান বাড়ী, পন্ডিত বাড়ী, সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্প (গুচ্ছগ্রাম) কাজী বাড়ী, গাজী বাড়ী, মডেল লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এলাকা, বালিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এলাকা ঢালীরঘাট, পাটওয়ারী বাড়ী,বাগাদি ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা ও শহরের ১১ নং ওয়ার্ড গুনরাজদি এলাকা তীব্র ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে। এছাড়াও প্রায় অর্ধশত পরিবারের বসতঘর ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর একটি লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙ্গন এলাকায় জরিপ করেন।
রঘুনাথপুর ও ঢালীর ঘাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দ ও ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন, টেলু খান, আবুল বেপারী ও দুদু মেম্বার জানান, প্রতিবছরই আমাদের ফসলি জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে ডাকাতিয়া নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়। এ পর্যন্ত নদী ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে যথাযথ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। নদী ভাঙ্গন রোধে এখনই যথাযথ কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলে বেড়ীবাঁধ সড়কসহ কয়েকটি এলাকা বিলীন হওয়ার সঙ্কা রয়েছে। আমরা চাই নদী ভাঙ্গনরোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা ডাকাতিয়া নদীর ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছি। নদীর তীরে ভাঙ্গন এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ চেয়েছি। আশা করি বরাদ্দ পেলে শীঘ্রই স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় ছাত্রীসহ প্রধান শিক্ষক আটক

হুমকির মুখে বেড়ীবাঁধ সড়কসহ অসংখ্য বসত ভিটা

আবারো ভাঙছে চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদী

আপডেট সময় : ১০:৫৭:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অগাস্ট ২০২৩
আবারো ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে। চলতি বর্ষায় রঘুনাথপুর এলাকায় ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় ১শ’ মিটার জায়গা। ভাঙ্গন আতঙ্কে দিনপার করছে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।
২০১৭ সাল থেকে অল্প অল্প করে ডাকাতিয়ার ভাঙ্গনের কবলে বিলীন হচ্ছে পুরানবাজার, রঘুনাথপুরসহ এই অঞ্চলটি। ইতোমধ্যে প্রায় ৬শ মিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গনরোদে বরাবরের মতো এবারও আশ্বাস দিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তবে স্থানীয়রা আশ্বাস নয়, চায় স্থায়ী প্রতিকার।
সম্প্রতি রঘুনাথপুরে গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১শ’ মিটার জায়গা তলিয়ে গেছে নদীতে। এছাড়া ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হুমকিতে রয়েছে অনেক বসতভিটা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ওয়াপদার রাস্তা। ভাঙ্গনরোধে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যোগে বালিভর্তি ব্যাগ নদীতীরে ফেলছেন।
স্থানীয়রা জানান, ডাকাতিয়া নদীর উত্তর পাড়ে অসংখ্য ডুবচর ছাড়াও অহেতুক কয়েকটি চড় পড়ে আছে। যার ফলে নদীর দক্ষিণ পাড়ে জোয়ার-ভাটার তীব্র স্রোতে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীর উত্তর পাড়ের চরগুলো ড্রেজিং করতে এসেও কাজ সম্পন্ন না করে ফিরে গিয়েছে। কি কারণে ড্রেসিং কাজ সম্পূর্ণ না করে কর্তৃপক্ষ ফিরে গিয়েছে নদীর দক্ষিণ পাড়ের এলাকার মানুষ তা জানেন না।
চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার পৌর ৫ নং ওয়ার্ডস্থ রঘুনাথপুর বাজার সংলগ্ন শেখ বাড়ী, খান বাড়ী, পন্ডিত বাড়ী, সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্প (গুচ্ছগ্রাম) কাজী বাড়ী, গাজী বাড়ী, মডেল লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এলাকা, বালিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এলাকা ঢালীরঘাট, পাটওয়ারী বাড়ী,বাগাদি ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা ও শহরের ১১ নং ওয়ার্ড গুনরাজদি এলাকা তীব্র ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে। এছাড়াও প্রায় অর্ধশত পরিবারের বসতঘর ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর একটি লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙ্গন এলাকায় জরিপ করেন।
রঘুনাথপুর ও ঢালীর ঘাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দ ও ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন, টেলু খান, আবুল বেপারী ও দুদু মেম্বার জানান, প্রতিবছরই আমাদের ফসলি জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে ডাকাতিয়া নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়। এ পর্যন্ত নদী ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে যথাযথ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। নদী ভাঙ্গন রোধে এখনই যথাযথ কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলে বেড়ীবাঁধ সড়কসহ কয়েকটি এলাকা বিলীন হওয়ার সঙ্কা রয়েছে। আমরা চাই নদী ভাঙ্গনরোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা ডাকাতিয়া নদীর ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছি। নদীর তীরে ভাঙ্গন এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দ চেয়েছি। আশা করি বরাদ্দ পেলে শীঘ্রই স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।