ঢাকা ০৬:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সরকারি পক্ষের গাফিলতিতে একতরফা রায়

শাহরাস্তিতে কোটি টাকার মালিকানাহীন সম্পত্তি প্রভাবশালীদের দখলে : ডিসির ছানি মামলা

সরকারি জমি জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ব্যবহার করা দুরূহ কোনো বিষয় নয়। তবে এক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করার মানসিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতা অর্জনের ৫৩ বছরেও সরকারি জমির পূর্ণাঙ্গ কোনো তালিকা তৈরি করা হয়নি। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো চাঁদপুরের শাহরাস্তিতেও বিপুল পরিমাণ সরকারি জমি স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। এতে একদিকে যেমন সরকারি সম্পত্তি বেহাত হচ্ছে অপরদিকে রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন সরকার। সরকারি স্থাপনা নির্মাণ কিংবা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে অধিগ্রহণ করা সরকারি সম্পত্তিগুলোও রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে সরকারি সম্পত্তি চলে যাচ্ছে জবরদখলকারীদের নিয়ন্ত্রণে। আবার সেই সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য সরকার পক্ষ আদালতে মামলা করছে। সরকারি সম্পত্তি বেহাত হওয়ার পর সেই সম্পত্তি উদ্ধারে মামলা করা হলেও যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায়িত্বহীন আচরণে সরকারি সম্পত্তি বেহাত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
এমনই একটি সম্পত্তি পড়ে আছে শাহরাস্তি উপজেলাধীন চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের ওয়ারুক রেলগেইট এর পূর্ব দিকে সড়কের উত্তর পাশে। উক্ত সম্পত্তিটি শাহরাস্তি উপজেলাধীন সাবেক ২৯২ হালে ২৪নং সুরসই মৌজার নালিশী সাবেক ১৬১ নং দাগের ২৭ শতাংশ ভূমি ঐ মৌজার এস.এস ১৮নং খতিয়ানে জগৎ চন্দ্র গোপ, পিতা- রাম মানিক্য ও স্বরূপ চন্দ্র গোপ, পিতা- চন্দ্র মনি গোপ, সাং- হরিপুর নামে রেকর্ডভুক্ত আছে। কিন্তু এই সম্পত্তিটি বিএস ১/১ খতিয়ানের ১৪৯ নং দাগে বাংলাদেশ সরকারের নামে রেকর্ডভুক্ত হওয়ার পরে স্থানীয় এক প্রভাবশালী তার দখলে নিয়ে রেখেছেন। পরবর্তীতে ২৭ শতাংশের এই সম্পত্তিটি নিজেদের নামে করে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী শাহরাস্তি বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন মৃত হাকিম আলীর দুই ছেলে দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন। অথচ সরকারকে রাজস্ব দিয়ে উক্ত সম্পত্তির লিজের আবেদন করেও ফেরত আসতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।
মামলা সূত্রে বাদীদের দেয়া তথ্য মতে জানা যায়, সিএস খতিয়ানে জগৎ চন্দ্র গোপ গং মালিকানাধীন ২৯ শতাংশ জমির মধ্যে ২ শতাংশ জমি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য খাল খনন করা হয়। বাকী ২৭ শতাংশ জমির মালিকগণ জগৎ চন্দ্র গোপ ও স্বরূপ চন্দ্র গোপ ১৯৪১ সালে উক্ত ভূমি ভোগদখল ও রক্ষনা বেক্ষন এবং খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে যোথ ভূমি উয়ারুক এলাকার মৃত ওছমান আলী বেপারীর ছেলে মৃত হাকিম আলীকে মৌখিকভাবে বন্দোবস্ত দিয়ে অন্যত্র চলে যায়। পরে ১৯৫৬ সালে ক্ষতিপূরণ দিয়ে ১৬ শতাংশ জমি একোয়ার করে নেয় সিএন্ডবি। পরবর্তীতে এর থেকে ৭ শতাংশ জমি হাকিম আলীকে ব্যবহারের জন্য বুঝিয়ে দেয় সিএন্ডবি। এই ১৮ শতাংশ জমি নিজেদের নামে লিখে নিতে মৃত হাকিম আলীর দুই মেয়ে সহ সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন হাকিম আলীর দুই ছেলে দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন। মামলাতে তারা এটাও উল্লেখ করেন যে, উক্ত সম্পত্তির অন্য অংশীদার মৃত হাকিম আলীর স্ত্রী, দুই মেয়ে পেয়ারা বেগম ও শিরিনা বেগম মৌখিকভাবে দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেনকে বুঝিয়ে দেন।
দখলদারিদের দায়ের করা মামলায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তাকে সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে একটি জবাব চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার আদেশে টামটা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা একটি তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করেন। ঐ তদন্ত রিপোর্টে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মন্নান মিয়া বলেন, সিএস খতিয়ানের মালিকগণ উক্ত ভূমি কাহারো নিকট হস্তান্তর না করে পাক ভারত যুদ্ধের সময় ভারতে চলে যাওয়ায় মালিক বিহীন নালিশী ভূমি বর্তমানে বিএস জরিপে ১/১ খতিয়ানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। সিএস রেকর্ডীয় মালিকগণ জনৈক মৃত হাকিম আলীকে মৌখিকভাবে বন্দোবস্ত প্রদানের বিষয়টি কাল্পনিক ও প্রচলিত আইনে স্বীকৃত নহে। এছাড়াও মৃত হাকিম আলী খাজনা পরিশোধের এমন কোন প্রমাণও বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করতে পারেন নি। তিনি আরো বলেন, অবৈধ দখলদাররা সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। তাই বিজ্ঞ আদালতে ন্যয় বিচারে বাদীগণ কোনরূপ রায় ডিক্রী পাওয়ার অধিকার নহেন বিধায় বাদীগণের নামে নামজারী খতিয়ান লিপিবদ্ধের কোন সুযোগ থাকবে না।
উক্ত তদন্ত রিপোর্টের আলোকে তৎকালীন শাহরাস্তি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবীবা মীরা একটি জবাব পেশ করেন। ঐ জবাবে তিনি বলেন, টামটা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন ও কানুনগোর মতামতের প্রেক্ষিতে উক্ত সম্পত্তি বিএস জরিপে ১/১ খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। ইহাতে সরকারি স্বত্ব ও স্বার্থ জড়িত। তাই বাদী পক্ষ কোন প্রকার প্রতিকার পেতে পারে না। কিন্তু এই জবাবটি কোন কারসাজিতে আদালতে পৌছানোর আগেই আদালত ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট বাদীদের পক্ষে একতরফা রায় দেন। ঐ রায়ে আদালত উল্লেখ করেন, তপসিল বর্নিত বিএস খতিয়ান ভুল ও ভ্রমাত্মক ভাবে সৃজিত হয়েছে মর্মে ডিক্রিকৃত ভূমি বাদীগণের নামে নামজারী খতিয়ান লিপিবদ্ধ করতে তৎকালীন শাহরাস্তি সহকারী জজ আলীনুর ইসলাম আদেশ দেন।
এর মধ্যে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবীবা মীরা সরকারী স্বার্থে অন্যত্র বদলী হয়ে যান। তার স্থলাভিষিক্ত হন আমজাদ হোসেন। তিনি যোগদানের পর দখলদাররা আবারো নড়েচড়ে বসেন। পুরনো প্রতিবেদন না দেখিয়ে আদালতের রায়ের কপি উত্থাপন করেন তৎকালীন এসি ল্যান্ড আমজাদ হোসেন এর কাছে। এদিকে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মান্নানও বদলী হয়ে গেলে তখন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাহাদাত হোসাইন এর অযৌক্তিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অবৈধ দখলদারদের নামে খতিয়ান রেকর্ডভুক্ত করার জন্য তিনি চলতি বছরের গত ১৬ এপ্রিল পূণরায় আরেকটি আদেশ দেন। সেই আদেশের ভিত্তিতে ঐ মাসের ২৭ তারিখে সুরসই মৌজার ৫৮০ নং খতিয়ানে নতুন করে দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন এর নাম রেকর্ডভুক্ত হয়।
এদিকে এই মামলাটির একতরফা রায় হওয়ায় সরকারী সম্পত্তি রক্ষায় ও পূণরূদ্ধারে গত ১৪ মে শাহরাস্তি সহকারী বিজ্ঞ আদালতে দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন এর বিরুদ্ধে একটি ছানি মামলা দায়ের করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)। এর মধ্যে টামটা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন বদলী হয়ে আবারও তার স্থলাভিষিক্ত হন আব্দুল মান্নান। সেই মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহনের তারিখ ৫ নভেম্বর থাকলেও সরকার পক্ষের কোন কর্মকর্তা অবগত ছিলেন না। বরং সংবাদকর্মীদের দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে মামলার হাজিরা দিতে যান ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান। ঐদিন শাহরাস্তি কোর্টের সহকারী জজ না থাকায় স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত পরবর্তী হাজিরার তারিখও জানেন নি ঐ কর্মকর্তা। তখন সংবাদকর্মীরা এ বিষয়ে আবারো তাগিদ দিলে তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে ১৯ নভেম্বর পরবর্তী হাজিরার তারিখ জেনে নেন। এদিকে আদালতের এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে শাহরাস্তি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের ভিন্ন ভিন্ন জবাব কিভাবে হয়েছে বলে জনমনে প্রশ্ন বিরাজ করছে।
টামটা এলাকার স্থানীয় কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, দুই এসি ল্যান্ডের দুই রকম জবাব। প্রথম জবাব সরকারের পক্ষে এবং পরের জবাব কেন কোর্টের রায়ের উপর ভিত্তি করে ও সরকারের পক্ষে সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন না দিয়ে অবৈধ দখলদারদের পক্ষে দিয়েছেন। এমনকি উক্ত মামলাগুলোর সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন ও জবাব কারো কারসাজিতে আদালতে না পৌছানো কারনে আদালত দখলদারদের পক্ষে একতরফা রায় দিতে বাধ্য হয়েছেন। সেই সাথে সরকারের দায়ের করা ছানি মামলারও বিভিন্ন হাজিরার তারিখ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নিজ দায়িত্বে না জানার পেছনের কাহিনী কি? আমরা চাই কোটি টাকা মূল্যের উক্ত সম্পত্তিটি অবৈধ দখলদারদের কাছে না থেকে সরকারের দখলে চলে আসুক। এতে সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ সহ জনসাধারণের উপকারে আসবে।
উক্ত সম্পত্তির দখলদার আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের দায়ের করা মামলায় খাজনা রশিদ সহ সকল কাগজপত্র উপস্থাপন করে আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়ে ১১ শতাংশ জমি খতিয়ান করে দিয়েছে। সেই সাথে আমরা এই সম্পত্তি বর্তমানে ভোগদখলে আছি।
এ বিষয়ে টামটা ইউনিয়নের সাবেক ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন বলেন, আমি আদালতের রায়ের উপর ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদন উপজেলা এসিল্যান্ড অফিসে পাঠিয়েছি। পরে ওখান থেকে বদলী হয়ে চলে এসেছি। এদিকে তার স্থলাভিষিক্ত বর্তমান ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মন্নান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রথমেই সরেজমিন তদন্ত করে সরকারের পক্ষে সঠিক প্রতিবেদন দিয়েছি। সেই প্রতিবেদনের আলোকে তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মীরা একটি জবাব আদালতে পেশ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসিল্যান্ড মহোদয়ের জবাবটি আদালতে পৌছেছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে ঐ জবাবটি যদি আদালত ঠিকই দেখতো তাহলে হয়তো দখলদারদের পক্ষে একতরফা রায় হতো না। এছাড়াও রবিবার (১৯ নভেম্বর) আদালতে স্বাক্ষ্য দিয়েছি। আগামী বছরের ২১ জানুয়ারি আমাদের ছানি মামলার আদেশ দেয়ার কথা রয়েছে।
শাহরাস্তি উপজেলার বর্তমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা রেজওয়ানা চৌধুরী বলেন, মৌখিক বন্দোবস্ত মূলে কেউ কোন সম্পত্তির মালিক হতে পারে না। উক্ত সম্পত্তিটি অবশ্যই সরকারের স্বার্থ রয়েছে বিধায় আমরা ছানি মামলা দায়ের করেছি। যা বর্তমানে চলমান রয়েছে। আমরা সরেজমিন তদন্ত করে আদালতে পূণরায় জবাব পেশ করবো। তারপর আদালত যে রায় দেন তা বহাল থাকবে। এর আগে দখলদারদের দায়ের করা মামলায় তাদের পক্ষেই একতরফা রায় হয়েছে। আশা করি সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের মাধ্যমে কোর্ট বিবেচনা করে এবারের রায় সরকারের পক্ষে যাবে।
চাঁদপুরের সদ্য বিদায়ী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার এ প্রতিবেদককে বলেন, এ সম্পত্তিতে সরকারের স্বার্থ রয়েছে। তবে কি কারনে দখলদারদের পক্ষে একতরফা রায় হয়েছে তা জেনে যদি আমাদের কোন কর্মকর্তা এর সাথে জড়িত থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর তাদের নামে নতুন খতিয়ানটি আপাতত বন্ধ করে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে বর্তমানে আমাদের যে ছানি মামলা চলমান রয়েছে তার জন্য সরকারের পক্ষে রায় আনতে যা যা করনীয় সব করা হবে।
তিনি আরো বলেন, এরকম অনেক সম্পত্তি পড়ে আছে। আমাদের কিছু কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অবহেলার কারনে এসব সম্পত্তিগত মামলাগুলো আমরা হেরে যাচ্ছি। তারা যদি সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন ও গুরুত্বসহকারে মামলাগুলো নিয়ে কাজ করে, তাহলে আর এসব সম্পত্তি কেউ অবৈধভাবে দখল করার সুযোগ পায় না।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় ছাত্রীসহ প্রধান শিক্ষক আটক

সরকারি পক্ষের গাফিলতিতে একতরফা রায়

শাহরাস্তিতে কোটি টাকার মালিকানাহীন সম্পত্তি প্রভাবশালীদের দখলে : ডিসির ছানি মামলা

আপডেট সময় : ১০:৪৪:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩
সরকারি জমি জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ব্যবহার করা দুরূহ কোনো বিষয় নয়। তবে এক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করার মানসিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতা অর্জনের ৫৩ বছরেও সরকারি জমির পূর্ণাঙ্গ কোনো তালিকা তৈরি করা হয়নি। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো চাঁদপুরের শাহরাস্তিতেও বিপুল পরিমাণ সরকারি জমি স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। এতে একদিকে যেমন সরকারি সম্পত্তি বেহাত হচ্ছে অপরদিকে রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন সরকার। সরকারি স্থাপনা নির্মাণ কিংবা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে অধিগ্রহণ করা সরকারি সম্পত্তিগুলোও রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে সরকারি সম্পত্তি চলে যাচ্ছে জবরদখলকারীদের নিয়ন্ত্রণে। আবার সেই সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য সরকার পক্ষ আদালতে মামলা করছে। সরকারি সম্পত্তি বেহাত হওয়ার পর সেই সম্পত্তি উদ্ধারে মামলা করা হলেও যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায়িত্বহীন আচরণে সরকারি সম্পত্তি বেহাত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
এমনই একটি সম্পত্তি পড়ে আছে শাহরাস্তি উপজেলাধীন চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কের ওয়ারুক রেলগেইট এর পূর্ব দিকে সড়কের উত্তর পাশে। উক্ত সম্পত্তিটি শাহরাস্তি উপজেলাধীন সাবেক ২৯২ হালে ২৪নং সুরসই মৌজার নালিশী সাবেক ১৬১ নং দাগের ২৭ শতাংশ ভূমি ঐ মৌজার এস.এস ১৮নং খতিয়ানে জগৎ চন্দ্র গোপ, পিতা- রাম মানিক্য ও স্বরূপ চন্দ্র গোপ, পিতা- চন্দ্র মনি গোপ, সাং- হরিপুর নামে রেকর্ডভুক্ত আছে। কিন্তু এই সম্পত্তিটি বিএস ১/১ খতিয়ানের ১৪৯ নং দাগে বাংলাদেশ সরকারের নামে রেকর্ডভুক্ত হওয়ার পরে স্থানীয় এক প্রভাবশালী তার দখলে নিয়ে রেখেছেন। পরবর্তীতে ২৭ শতাংশের এই সম্পত্তিটি নিজেদের নামে করে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী শাহরাস্তি বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন মৃত হাকিম আলীর দুই ছেলে দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন। অথচ সরকারকে রাজস্ব দিয়ে উক্ত সম্পত্তির লিজের আবেদন করেও ফেরত আসতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।
মামলা সূত্রে বাদীদের দেয়া তথ্য মতে জানা যায়, সিএস খতিয়ানে জগৎ চন্দ্র গোপ গং মালিকানাধীন ২৯ শতাংশ জমির মধ্যে ২ শতাংশ জমি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য খাল খনন করা হয়। বাকী ২৭ শতাংশ জমির মালিকগণ জগৎ চন্দ্র গোপ ও স্বরূপ চন্দ্র গোপ ১৯৪১ সালে উক্ত ভূমি ভোগদখল ও রক্ষনা বেক্ষন এবং খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে যোথ ভূমি উয়ারুক এলাকার মৃত ওছমান আলী বেপারীর ছেলে মৃত হাকিম আলীকে মৌখিকভাবে বন্দোবস্ত দিয়ে অন্যত্র চলে যায়। পরে ১৯৫৬ সালে ক্ষতিপূরণ দিয়ে ১৬ শতাংশ জমি একোয়ার করে নেয় সিএন্ডবি। পরবর্তীতে এর থেকে ৭ শতাংশ জমি হাকিম আলীকে ব্যবহারের জন্য বুঝিয়ে দেয় সিএন্ডবি। এই ১৮ শতাংশ জমি নিজেদের নামে লিখে নিতে মৃত হাকিম আলীর দুই মেয়ে সহ সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন হাকিম আলীর দুই ছেলে দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন। মামলাতে তারা এটাও উল্লেখ করেন যে, উক্ত সম্পত্তির অন্য অংশীদার মৃত হাকিম আলীর স্ত্রী, দুই মেয়ে পেয়ারা বেগম ও শিরিনা বেগম মৌখিকভাবে দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেনকে বুঝিয়ে দেন।
দখলদারিদের দায়ের করা মামলায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তাকে সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে একটি জবাব চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার আদেশে টামটা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা একটি তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করেন। ঐ তদন্ত রিপোর্টে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মন্নান মিয়া বলেন, সিএস খতিয়ানের মালিকগণ উক্ত ভূমি কাহারো নিকট হস্তান্তর না করে পাক ভারত যুদ্ধের সময় ভারতে চলে যাওয়ায় মালিক বিহীন নালিশী ভূমি বর্তমানে বিএস জরিপে ১/১ খতিয়ানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। সিএস রেকর্ডীয় মালিকগণ জনৈক মৃত হাকিম আলীকে মৌখিকভাবে বন্দোবস্ত প্রদানের বিষয়টি কাল্পনিক ও প্রচলিত আইনে স্বীকৃত নহে। এছাড়াও মৃত হাকিম আলী খাজনা পরিশোধের এমন কোন প্রমাণও বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করতে পারেন নি। তিনি আরো বলেন, অবৈধ দখলদাররা সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। তাই বিজ্ঞ আদালতে ন্যয় বিচারে বাদীগণ কোনরূপ রায় ডিক্রী পাওয়ার অধিকার নহেন বিধায় বাদীগণের নামে নামজারী খতিয়ান লিপিবদ্ধের কোন সুযোগ থাকবে না।
উক্ত তদন্ত রিপোর্টের আলোকে তৎকালীন শাহরাস্তি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবীবা মীরা একটি জবাব পেশ করেন। ঐ জবাবে তিনি বলেন, টামটা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন ও কানুনগোর মতামতের প্রেক্ষিতে উক্ত সম্পত্তি বিএস জরিপে ১/১ খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। ইহাতে সরকারি স্বত্ব ও স্বার্থ জড়িত। তাই বাদী পক্ষ কোন প্রকার প্রতিকার পেতে পারে না। কিন্তু এই জবাবটি কোন কারসাজিতে আদালতে পৌছানোর আগেই আদালত ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট বাদীদের পক্ষে একতরফা রায় দেন। ঐ রায়ে আদালত উল্লেখ করেন, তপসিল বর্নিত বিএস খতিয়ান ভুল ও ভ্রমাত্মক ভাবে সৃজিত হয়েছে মর্মে ডিক্রিকৃত ভূমি বাদীগণের নামে নামজারী খতিয়ান লিপিবদ্ধ করতে তৎকালীন শাহরাস্তি সহকারী জজ আলীনুর ইসলাম আদেশ দেন।
এর মধ্যে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবীবা মীরা সরকারী স্বার্থে অন্যত্র বদলী হয়ে যান। তার স্থলাভিষিক্ত হন আমজাদ হোসেন। তিনি যোগদানের পর দখলদাররা আবারো নড়েচড়ে বসেন। পুরনো প্রতিবেদন না দেখিয়ে আদালতের রায়ের কপি উত্থাপন করেন তৎকালীন এসি ল্যান্ড আমজাদ হোসেন এর কাছে। এদিকে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মান্নানও বদলী হয়ে গেলে তখন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাহাদাত হোসাইন এর অযৌক্তিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অবৈধ দখলদারদের নামে খতিয়ান রেকর্ডভুক্ত করার জন্য তিনি চলতি বছরের গত ১৬ এপ্রিল পূণরায় আরেকটি আদেশ দেন। সেই আদেশের ভিত্তিতে ঐ মাসের ২৭ তারিখে সুরসই মৌজার ৫৮০ নং খতিয়ানে নতুন করে দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন এর নাম রেকর্ডভুক্ত হয়।
এদিকে এই মামলাটির একতরফা রায় হওয়ায় সরকারী সম্পত্তি রক্ষায় ও পূণরূদ্ধারে গত ১৪ মে শাহরাস্তি সহকারী বিজ্ঞ আদালতে দেলোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন এর বিরুদ্ধে একটি ছানি মামলা দায়ের করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)। এর মধ্যে টামটা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন বদলী হয়ে আবারও তার স্থলাভিষিক্ত হন আব্দুল মান্নান। সেই মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহনের তারিখ ৫ নভেম্বর থাকলেও সরকার পক্ষের কোন কর্মকর্তা অবগত ছিলেন না। বরং সংবাদকর্মীদের দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে মামলার হাজিরা দিতে যান ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান। ঐদিন শাহরাস্তি কোর্টের সহকারী জজ না থাকায় স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত পরবর্তী হাজিরার তারিখও জানেন নি ঐ কর্মকর্তা। তখন সংবাদকর্মীরা এ বিষয়ে আবারো তাগিদ দিলে তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে ১৯ নভেম্বর পরবর্তী হাজিরার তারিখ জেনে নেন। এদিকে আদালতের এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে শাহরাস্তি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের ভিন্ন ভিন্ন জবাব কিভাবে হয়েছে বলে জনমনে প্রশ্ন বিরাজ করছে।
টামটা এলাকার স্থানীয় কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, দুই এসি ল্যান্ডের দুই রকম জবাব। প্রথম জবাব সরকারের পক্ষে এবং পরের জবাব কেন কোর্টের রায়ের উপর ভিত্তি করে ও সরকারের পক্ষে সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন না দিয়ে অবৈধ দখলদারদের পক্ষে দিয়েছেন। এমনকি উক্ত মামলাগুলোর সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন ও জবাব কারো কারসাজিতে আদালতে না পৌছানো কারনে আদালত দখলদারদের পক্ষে একতরফা রায় দিতে বাধ্য হয়েছেন। সেই সাথে সরকারের দায়ের করা ছানি মামলারও বিভিন্ন হাজিরার তারিখ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নিজ দায়িত্বে না জানার পেছনের কাহিনী কি? আমরা চাই কোটি টাকা মূল্যের উক্ত সম্পত্তিটি অবৈধ দখলদারদের কাছে না থেকে সরকারের দখলে চলে আসুক। এতে সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ সহ জনসাধারণের উপকারে আসবে।
উক্ত সম্পত্তির দখলদার আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের দায়ের করা মামলায় খাজনা রশিদ সহ সকল কাগজপত্র উপস্থাপন করে আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়ে ১১ শতাংশ জমি খতিয়ান করে দিয়েছে। সেই সাথে আমরা এই সম্পত্তি বর্তমানে ভোগদখলে আছি।
এ বিষয়ে টামটা ইউনিয়নের সাবেক ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন বলেন, আমি আদালতের রায়ের উপর ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদন উপজেলা এসিল্যান্ড অফিসে পাঠিয়েছি। পরে ওখান থেকে বদলী হয়ে চলে এসেছি। এদিকে তার স্থলাভিষিক্ত বর্তমান ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মন্নান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রথমেই সরেজমিন তদন্ত করে সরকারের পক্ষে সঠিক প্রতিবেদন দিয়েছি। সেই প্রতিবেদনের আলোকে তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মীরা একটি জবাব আদালতে পেশ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসিল্যান্ড মহোদয়ের জবাবটি আদালতে পৌছেছে কিনা তা আমার জানা নেই। তবে ঐ জবাবটি যদি আদালত ঠিকই দেখতো তাহলে হয়তো দখলদারদের পক্ষে একতরফা রায় হতো না। এছাড়াও রবিবার (১৯ নভেম্বর) আদালতে স্বাক্ষ্য দিয়েছি। আগামী বছরের ২১ জানুয়ারি আমাদের ছানি মামলার আদেশ দেয়ার কথা রয়েছে।
শাহরাস্তি উপজেলার বর্তমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা রেজওয়ানা চৌধুরী বলেন, মৌখিক বন্দোবস্ত মূলে কেউ কোন সম্পত্তির মালিক হতে পারে না। উক্ত সম্পত্তিটি অবশ্যই সরকারের স্বার্থ রয়েছে বিধায় আমরা ছানি মামলা দায়ের করেছি। যা বর্তমানে চলমান রয়েছে। আমরা সরেজমিন তদন্ত করে আদালতে পূণরায় জবাব পেশ করবো। তারপর আদালত যে রায় দেন তা বহাল থাকবে। এর আগে দখলদারদের দায়ের করা মামলায় তাদের পক্ষেই একতরফা রায় হয়েছে। আশা করি সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের মাধ্যমে কোর্ট বিবেচনা করে এবারের রায় সরকারের পক্ষে যাবে।
চাঁদপুরের সদ্য বিদায়ী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার এ প্রতিবেদককে বলেন, এ সম্পত্তিতে সরকারের স্বার্থ রয়েছে। তবে কি কারনে দখলদারদের পক্ষে একতরফা রায় হয়েছে তা জেনে যদি আমাদের কোন কর্মকর্তা এর সাথে জড়িত থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর তাদের নামে নতুন খতিয়ানটি আপাতত বন্ধ করে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে বর্তমানে আমাদের যে ছানি মামলা চলমান রয়েছে তার জন্য সরকারের পক্ষে রায় আনতে যা যা করনীয় সব করা হবে।
তিনি আরো বলেন, এরকম অনেক সম্পত্তি পড়ে আছে। আমাদের কিছু কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অবহেলার কারনে এসব সম্পত্তিগত মামলাগুলো আমরা হেরে যাচ্ছি। তারা যদি সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন ও গুরুত্বসহকারে মামলাগুলো নিয়ে কাজ করে, তাহলে আর এসব সম্পত্তি কেউ অবৈধভাবে দখল করার সুযোগ পায় না।