ঢাকা ০৭:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অবকাঠামো নির্মাণ ও শিক্ষাখাতের উন্নয়নে কাজ করছে নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ

চাঁদপুরে ৩৮ কোটি টাকায় ৭টি কলেজ ও ২৪টি স্কুল ভবন নির্মাণ সম্পন্ন

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি অধিদপ্তর। এটি সরকারের শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন, অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং শিক্ষাখাতের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত।

Model Hospital

স্বাধীনতা যুদ্ধ উত্তর যুদ্ধ বিধস্ত বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পূন:নির্মাণ ও মেরামতের লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে একটি “প্রকৌশল ইউনিট” গঠনের মাধ্যেমে আজকের এই শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সৃষ্টি করেন। স্বাধীনতার পর থেকেই বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়েদেশের প্রতিটি মানুষকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে কাজ শুরু করেন।

এ লক্ষ্য অর্জনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো বাংলাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মান, বিদ্যমান ভবনগুলোর সম্প্রসারন ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কার এবং আসবাবপত্র সরবরাহ করার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অজস্র স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরিসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ অধিদপ্তরের নিবেদিত প্রকৌশলী ও কমকর্তা-কর্মচারিগণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নত অবকাঠামো তৈরি করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। রুপকল্প ২০২১ এর আওতায় ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের অংশ হিসেবে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যুগোপযোগি ও মানসম্মত শিক্ষার প্রসারে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটি সুবিধাসহ ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছে। সবার জন্য মানসম্মত ও যুগোপযোগী শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ এবং মিশন সুশিক্ষিত, দক্ষ ও উন্নত নৈতিকতা সম্পন্ন মানব সম্পদ সৃষ্টি করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও কর্মচারিগন নিরলস কাজ করে যাচ্চে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা, ডিজাইনিং, পরিবীক্ষণ ও উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নুতন ভবন নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার, আসবাবপত্র সরবরাহ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ-এর অধীনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।

শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, চাঁদপুর এর তত্ত্বাবধানে চাঁদপুর জেলার সব উপজেলায় ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় ৭টি চারতলা কলেজ ভবন ও ২৪ টি মাধ্যমিক স্কুল ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।

কলেজ ভবনগুলো হলো : চাঁদপুর সদরের কামরাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, কচুয়ার নুরুল আজাদ কলেজ, ফরিদগঞ্জ কালির বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, শাহরাস্তির চিতোষী ডিগ্রী কলেজ, হাজীগঞ্জের দেশগাঁও কলেজ, মতলবের মুন্সী আজিমুদ্দিন কলেজ ও হাইমচরের মোয়াজ্জেম হোসেন কলেজ ভবন।

মাধ্যমিক স্কুল ভবনগুলো হলো : মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্মাণ বা ঊর্ধ্বমুখী ভবনের সম্প্রসারণ প্রকল্পের অধীন চাঁদপুর সদরে ১২টি, হাইমচরে ১টি, ফরিদগঞ্জে ৪টি, কচুয়ায় ২টি, মতলব দক্ষিণ ২টি , মতলব উত্তর ১টি এবং হাজীগঞ্জে ২টি ভবন নির্মানের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুর সহকারি প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ চৌধুরীএ তথ্য জানান।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ৭টি কলেজ ভবন নির্মাণে ১৭ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং ২৪টি মাধ্যমিক স্কুল ভবন নির্মাণে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রতিটি চারতলা কলেজ ভবনের নির্মাণ ব্যয় ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং প্রতিটি মাধ্যমিক স্কুল ভবন ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক ডিজাইনে ও যুগোপযোগী দৃষ্টিনন্দন একাডেমিক ভবন, প্রতিটি কলেজ ৪ তলা ও প্রতিটি স্কুল ভবন প্রথমতলা বা ঊর্ধ্বমুখী ভবন নির্মিত হয়েছে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম শরীফ ২০০৮ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মিলিটারি ইনস্টিটিউট এন্ড সাইন্স টেকনোলজি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ২০১৬ সালে তিনি নরসিংদি জোনে সহকারি প্রকৌশলী, ২০১৯ সালে ঢাকা মেট্রো সহকারি প্রকৌশলী এবং ২০২১ সালে পদোন্নতি পেয়ে নেত্রকোনা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন।

পূর্বের পদে থাকাবস্তায় তিনি তার মেধা-যোগ্যতার অর্জিত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে এ বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এবং সুধীজনদের নজর কেড়েছেন।

তিনি চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদানের পর থেকে ভিন্ন আঙ্গিকে চাঁদপুরকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ অব্যাহত রেখেে এ বিভাগের কাজের গুণগত মান সঠিক রাখার স্বার্থে কাজ করছেন।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, চাঁদপুর এর নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম শরীফ বলেন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ও শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভৌতিক অবকাঠামো উন্নয়ন করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দক্ষ নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং শিক্ষাখাতের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় নিরসন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে সারাদেশে উন্নয়ন কাজ রেকর্ড গড়েছে। কারণ অতীতে অন্য কোনো সরকারের আমলে এত বেশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ এসব অবকাঠামো নির্মাণে ও দৃষ্টিনন্দন করতে কাজ করছে। এসব ভবন নির্মাণে এলাকার পরিবেশ, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করে ভবনের নকশা প্রণয়ন করা, ভবনে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা টয়লেট, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য র‌্যাম্প এবং টানা বারান্দা, পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা, ঢালু ছাদ এবং ছাদে লাল টালি স্থাপনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এসব ভবনে। এ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজ সমুহের মেরামত, সংস্কার ও শ্রেণিকক্ষের আসবাবপত্র নির্মাণ করছে সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ।

নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নেরর ফলে জেলার শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি বৈপ্লিবিক পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে। ভবনগুলো লেখাপড়ার মানন্নোয়নে যথেষ্ঠ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। শিক্ষার্থীদের সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা নতুন ও উন্নত পরিবেশে পড়াশুনার সুযোগ পাচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকগণ পাঠদানে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে।

তিনি আরও বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেমন সক্ষমতা অর্জন করেছে তেমনি শিক্ষা ব্যবস্থায় এনেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এ অর্জনে সরকারের সাথে সম্পৃক্ত থেকে শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিটি কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিরলসভাবে দেশগঠনে ভূমিকা রেখে চলছে। এছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেন মজুমদার স্যারের ঐকান্তিক চেষ্টা ও আন্তরিকতায় সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরের শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছেন।

উল্লেখ্য, মনজুরুল আলম শরীফ ১৯৮৬ সালে মাদারীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে এস.এস.সি এবং মাদারীপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০০৩ সালে এইচ.এস.সি. পাশ করেন। উভয় পরীক্ষাতেই তিনি সাফল্যের সাথে মেধা তালিকায় স্থান লাভ করেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

অবকাঠামো নির্মাণ ও শিক্ষাখাতের উন্নয়নে কাজ করছে নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ

চাঁদপুরে ৩৮ কোটি টাকায় ৭টি কলেজ ও ২৪টি স্কুল ভবন নির্মাণ সম্পন্ন

আপডেট সময় : ১১:৪৪:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি অধিদপ্তর। এটি সরকারের শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন, অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং শিক্ষাখাতের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত।

Model Hospital

স্বাধীনতা যুদ্ধ উত্তর যুদ্ধ বিধস্ত বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পূন:নির্মাণ ও মেরামতের লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে একটি “প্রকৌশল ইউনিট” গঠনের মাধ্যেমে আজকের এই শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সৃষ্টি করেন। স্বাধীনতার পর থেকেই বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়েদেশের প্রতিটি মানুষকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে কাজ শুরু করেন।

এ লক্ষ্য অর্জনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো বাংলাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মান, বিদ্যমান ভবনগুলোর সম্প্রসারন ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কার এবং আসবাবপত্র সরবরাহ করার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অজস্র স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরিসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ অধিদপ্তরের নিবেদিত প্রকৌশলী ও কমকর্তা-কর্মচারিগণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নত অবকাঠামো তৈরি করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। রুপকল্প ২০২১ এর আওতায় ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানের অংশ হিসেবে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যুগোপযোগি ও মানসম্মত শিক্ষার প্রসারে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটি সুবিধাসহ ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছে। সবার জন্য মানসম্মত ও যুগোপযোগী শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ এবং মিশন সুশিক্ষিত, দক্ষ ও উন্নত নৈতিকতা সম্পন্ন মানব সম্পদ সৃষ্টি করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও কর্মচারিগন নিরলস কাজ করে যাচ্চে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা, ডিজাইনিং, পরিবীক্ষণ ও উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নুতন ভবন নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার, আসবাবপত্র সরবরাহ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ-এর অধীনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।

শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, চাঁদপুর এর তত্ত্বাবধানে চাঁদপুর জেলার সব উপজেলায় ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় ৭টি চারতলা কলেজ ভবন ও ২৪ টি মাধ্যমিক স্কুল ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।

কলেজ ভবনগুলো হলো : চাঁদপুর সদরের কামরাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, কচুয়ার নুরুল আজাদ কলেজ, ফরিদগঞ্জ কালির বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, শাহরাস্তির চিতোষী ডিগ্রী কলেজ, হাজীগঞ্জের দেশগাঁও কলেজ, মতলবের মুন্সী আজিমুদ্দিন কলেজ ও হাইমচরের মোয়াজ্জেম হোসেন কলেজ ভবন।

মাধ্যমিক স্কুল ভবনগুলো হলো : মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্মাণ বা ঊর্ধ্বমুখী ভবনের সম্প্রসারণ প্রকল্পের অধীন চাঁদপুর সদরে ১২টি, হাইমচরে ১টি, ফরিদগঞ্জে ৪টি, কচুয়ায় ২টি, মতলব দক্ষিণ ২টি , মতলব উত্তর ১টি এবং হাজীগঞ্জে ২টি ভবন নির্মানের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুর সহকারি প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ চৌধুরীএ তথ্য জানান।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ৭টি কলেজ ভবন নির্মাণে ১৭ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং ২৪টি মাধ্যমিক স্কুল ভবন নির্মাণে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রতিটি চারতলা কলেজ ভবনের নির্মাণ ব্যয় ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং প্রতিটি মাধ্যমিক স্কুল ভবন ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক ডিজাইনে ও যুগোপযোগী দৃষ্টিনন্দন একাডেমিক ভবন, প্রতিটি কলেজ ৪ তলা ও প্রতিটি স্কুল ভবন প্রথমতলা বা ঊর্ধ্বমুখী ভবন নির্মিত হয়েছে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম শরীফ ২০০৮ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মিলিটারি ইনস্টিটিউট এন্ড সাইন্স টেকনোলজি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ২০১৬ সালে তিনি নরসিংদি জোনে সহকারি প্রকৌশলী, ২০১৯ সালে ঢাকা মেট্রো সহকারি প্রকৌশলী এবং ২০২১ সালে পদোন্নতি পেয়ে নেত্রকোনা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন।

পূর্বের পদে থাকাবস্তায় তিনি তার মেধা-যোগ্যতার অর্জিত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে এ বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এবং সুধীজনদের নজর কেড়েছেন।

তিনি চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদানের পর থেকে ভিন্ন আঙ্গিকে চাঁদপুরকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ অব্যাহত রেখেে এ বিভাগের কাজের গুণগত মান সঠিক রাখার স্বার্থে কাজ করছেন।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, চাঁদপুর এর নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম শরীফ বলেন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ও শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভৌতিক অবকাঠামো উন্নয়ন করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দক্ষ নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং শিক্ষাখাতের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় নিরসন ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে সারাদেশে উন্নয়ন কাজ রেকর্ড গড়েছে। কারণ অতীতে অন্য কোনো সরকারের আমলে এত বেশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ এসব অবকাঠামো নির্মাণে ও দৃষ্টিনন্দন করতে কাজ করছে। এসব ভবন নির্মাণে এলাকার পরিবেশ, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করে ভবনের নকশা প্রণয়ন করা, ভবনে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা টয়লেট, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য র‌্যাম্প এবং টানা বারান্দা, পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা, ঢালু ছাদ এবং ছাদে লাল টালি স্থাপনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এসব ভবনে। এ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজ সমুহের মেরামত, সংস্কার ও শ্রেণিকক্ষের আসবাবপত্র নির্মাণ করছে সরকারের শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ।

নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নেরর ফলে জেলার শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি বৈপ্লিবিক পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে। ভবনগুলো লেখাপড়ার মানন্নোয়নে যথেষ্ঠ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। শিক্ষার্থীদের সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা নতুন ও উন্নত পরিবেশে পড়াশুনার সুযোগ পাচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকগণ পাঠদানে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে।

তিনি আরও বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেমন সক্ষমতা অর্জন করেছে তেমনি শিক্ষা ব্যবস্থায় এনেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এ অর্জনে সরকারের সাথে সম্পৃক্ত থেকে শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিটি কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিরলসভাবে দেশগঠনে ভূমিকা রেখে চলছে। এছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেন মজুমদার স্যারের ঐকান্তিক চেষ্টা ও আন্তরিকতায় সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরের শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছেন।

উল্লেখ্য, মনজুরুল আলম শরীফ ১৯৮৬ সালে মাদারীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে এস.এস.সি এবং মাদারীপুর সরকারি কলেজ থেকে ২০০৩ সালে এইচ.এস.সি. পাশ করেন। উভয় পরীক্ষাতেই তিনি সাফল্যের সাথে মেধা তালিকায় স্থান লাভ করেন।