চাঁদপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিবন্ধন ছাড়া কি পরিমাণ রয়েছে, এর কোনো সঠিক তথ্য নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু নিয়ম না মেনে অবৈধভাবে কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার নিবন্ধিত বহু অটোরিকশা জেলার কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় অহরহ চলছে। যার ফলে সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি অনেক সময় অবৈধ অটোরিকশা করে নানা অপরাধমূলক কাজ সংঘটিত হচ্ছে।
![priyo chandpur 12 Model Hospital](https://priyochandpur.net/wp-content/uploads/2023/11/awfe.png)
সরেজমিন এসব এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলায় অনেক সময় চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসব কাজে জেলার বাহিরের অটোরিকশা ব্যবহার হয়। এছাড়া শাহরাস্তির কালিয়াপাড়া ও দোয়াভাঙ্গা এলাকায় বাহিরের জেরার বহু সংখ্যক অটোরিকশা যাত্রী পরিবহন করছে। অবৈধ ও বাহিরের জেলার অটোরিকশা চলাচল করার সুযোগ করে দিচ্ছে শাহরাস্তির আবুল নামে শ্রমিক নেতা। তিনি এর বিনিময়ে প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা তোলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কালিয়াপাড়ার সিএনজিচালক আলাউদ্দিন জানান, কালিয়াপাড়া থেকে কচুয়া পর্যন্ত তিনি অটোরিকশা চালান। তার অটোরিকশা কুমিল্লা জেলার নিবন্ধিত। এর জন্য তাকে মাসিক দিতে হয় এবং প্রতিদিন পৌরসভাকে টোল দিতে হয় ৪০ টাকা।
দোয়াভাঙ্গা ও কালিয়াপাড়া থেকে অটোরিকশায় যাত্রী আনানেয়া করেন রবিউল। তিনি বলেন, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার নিবন্ধিনত বহু গাড়ি চলে। তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো কিছুই বলে না।
দোয়াভাঙ্গার একাধিক অটোরিকশাচালক জানান, যখন চাঁদপুরে নিবন্ধন বন্ধ ছিল, তখন অনেকেই কুমিল্লা থেকে অটোরিকশার নিবন্ধন নিয়েছেন। ঐসব অটোরিকশা এখানে চলে।
অটোরিকশা শ্রমিক নেতা আবুল মুঠোফোনে বলেন, ‘সিএনজিচালিত অটোরিকশা চললে ক্ষতি কি? বড় গাড়িই চলে, সেগুলোর বিষয়তো কেউ কথা বলে না। পৌরসভাগুলোতে কমপক্ষে ৩০ হাজার অটোরিকশা চলে। সেখানে টাকা উত্তোলন হলেও মেয়রদের সঙ্গে কেউ কথা বলে না।’
অবৈধ যানবাহন থেকে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা উঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ১০ লাখ না ১০ কোটি টাকা উঠালে আপনার সমস্যা কি?’
বিআরটিএ চাঁদপুরের মোটরযান পরিদর্শক আফজাল হোসেন বলেন, ‘এসব বিষয়ে সংবাদ করে কি লাভ হবে? সংবাদ করে বিরক্ত হবেন। কারণ সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিবন্ধন ছাড়া ভালো চলে। সব জেলায় যেতে পারে। কারণ এক সময় নিবন্ধনের জন্য আমাদের কাছে তারা এসেছে। নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর তারা আসেন না।’
বিআরটিএ চাঁদপুর জেলার সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চাঁদপুর জেলায় শুরু থেকে নিবন্ধন হওয়া অটোরিকশার সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ১০১টি। পরে পুনরায় নিবন্ধন হওয়ার পর সর্বশেষ নিবন্ধন নম্বর হচ্ছে ৮ হাজার ২২৭। অবৈধ অটোরিকশা কি পরিমাণ তার সঠিক তথ্য নেই। তবে কয়েক হাজার হবে। আর সীমান্ত উপজেলায় মাঝে মাঝে প্রশাসনের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়। এটি অব্যাহত আছে।
শাহরাস্তির (টিআই) কামরুল হাসান বলেন, সীমান্ত উপজেলায় আমি একা দায়িত্ব পালন করছি। অন্য জেলার গাড়ি অনেক সময় রোগী নিয়ে মতলব ডায়েরিয়া হাসপাতালে যায়। এছাড়া যাত্রী পরিবহন করে তাও সঠিক। এসব গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দিতে হলে কচুয়া ও শাহরাস্তি থানায় যেতে হয়।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ট্রাফিকে আমাদের লোকবল কম। যে পরিমাণ আছে তারা শহরকেন্দ্রিক দায়িত্ব পালন করতেই হিমশিম খাচ্ছে। আপাতত উপজেলাগুলোতে লোকবল দেওয়া যাচ্ছে না। ট্রাফিকে লোকবল বাড়লে তখন কাজ করতে পারবো।