হিসাবে এ বছর চাঁদপুর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৭৮ হাজার ৫৬৬টি। তবে চাহিদার তুলনায় ১৭ হাজার ৭৭টি পশু কম রয়েছে। এছাড়া পশু খাদ্যের দাম বাড়ায় এবার খামারিদের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। সব মিলিয়ে পশুর দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি হবে বলে মনে করছেন খামারিরা। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো চাহিদার তুলনায় যে পরিমাণ পশু রয়েছে, তাতে কোনো সমস্যা হবে না।
![priyo chandpur 12 Model Hospital](https://priyochandpur.net/wp-content/uploads/2023/11/awfe.png)
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে ৬১ হাজার ৪৮৯টি। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৩৩ হাজার ৮৪৩টি, মহিষ ২২৬টি ও ছাগল ২৫ হাজার ৮৭৬টি ও ভেড়া ১ হাজার ৪২টি। এছাড়া অন্যান্য পশু রয়েছে ১৪২টি।
খামারিরা জানান, কোরবানির পশু নিয়ে হিসাব-নিকাশ শুরু করেছেন খামারি, ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। সাপ্তাহিক হাটে ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে। একটু কম দামের আশায় আগে থেকে অনেকেই অগ্রিম টাকা দিয়ে পশু বায়না করে রাখছেন।
খামারি মোবারক জানান, এবারো কোরবানির পশুর দাম চড়া থাকবে। কারণ উৎপাদন খরচ বেশি হয়েছে। খরচ বাড়ায় খামারিদের লাভের পরিমাণ কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। কেউ তো আর লোকসান দিয়ে পশু বিক্রি করবে না। কোরবানির হাট এখনো শুরু হয়নি। এখন পশু কম দামে পাওয়া গেলেও কোরবানির আগে প্রত্যাশা অনুযায়ী দামের আশা করছেন তিনি।
তরপুরচণ্ডী ইউনিয়নের বাবু নামে আরেক খামারি বলেন, ‘গত বছরগুলোর তুলনায় এবার আরো বেশি পশু লালন পালন হয়েছে। ঈদের অন্তত ১৫ দিন আগ থেকে বিক্রির চেষ্টা করব। যদি না হয় এক সপ্তাহ আগে হাটে তুলব। আশা করছি, এবার ঈদে ভালো দাম পাব।’
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী জেলায় পশুর হাট থাকবে ১৫১টি। পশুর হাটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের টিম কাজ করবে। এক্ষেত্রে দুই-তিনটি ইউনিয়ন একসঙ্গে মিলে একজন পশু চিকিৎসক থাকবেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জ্যোতির্ময় ভৌমিক বলেন, ‘দেশে ভারতীয় গরু না থাকলেও চাহিদা মেটাতে সমস্যা হবে না। যারা মূলত বড় খামারি তাদেরই বেশির ভাগ অনলাইনে পশু বিক্রি করতে হয়। তবে চাইলেই ফেসবুক পেইজ ও অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমেও পশু বিক্রি করা যাবে। এতে কোনো ধরনের বাধা নেই। এক্ষেত্রে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে কোনো প্রকার সমস্যা হলে তা সমাধানের জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহযোগিতা করবে।’
পশু খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় কোরবানির হাটে প্রভাব পড়বে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সংকট দেখা দিয়েছে সারা বিশ্বে। পশুর প্রধান খাদ্য ভুট্টা ও গম। খাদ্য যথা সময়ে আমদানি না হলে দাম বেড়ে যায়। এতে পশুর দামেও প্রভাব পড়ে। খামারিদের বেশি দাম দিয়ে খাদ্য কিনতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে খামারিদেরও কিছু করার থাকে না। তবে গত বছরের ন্যায় এবারো পশুর ভালো দাম পাবেন খামারিরা।’
পশু বেচাকেনার বিষয়ে ডা. জ্যোতির্ময় ভৌমিক বলেন, ‘অবশ্যই ভালো গরু দেখে-শুনে বেচাকেনা করতে হবে। অসুস্থ গরু বিক্রি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পশুরহাটে আমাদের ভ্রাম্যমাণ টিম কাজ করবে।’