এস এম ইকবাল : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার রুপসা উত্তর ইউনিয়নে ইউপি সদস্য মো. ফারুক হোসেন লিটনকে শারিরীক ভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর ওই ইউপি সদস্যকে অবরুদ্ধ করেছে চেয়ারম্যানের ফোন করে আনা বহিরাগতরা। পরে পুলিশি সহায়তায় ইউপি সদস্য লিটন পরিষদ থেকে পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পায়।
৪ এপ্রিল সোমবার দুপুরের রুপসা উত্তর ইউনিয়নের পরিষদ ভবনে ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার ফারুক হোসেন লিটন এর উপর ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার উল- আলম কামরুল হামলা করে আহত করে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা নিন্দা ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার বেলা ২টা ৩০ মিনিটের সময় ইউপি সদস্য লিটন পরিষদ কার্যালয়ের তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা সজিব হোসেন ও ইউপি সচিব মোস্তফা কামালের সাথে জন্ম সনদ এবং পরিষদের অন্যান্য বিষয় নিয়ে বাক-বিতন্ডা হয়। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান ওই ইউপি সদস্যের সাথে অশোভন আচরন করে এবং এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যকে স্ব-জোরে থাপ্পড় মারে ও গালমন্দ করে। পরে উপস্থিত ইউপি সদস্য ও পরিষদের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা প্রাথমিক ভাবে সমস্যা নিরসনে চেয়ারম্যান এবং মেম্বারকে অন্যত্রে সরিয়ে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন লিটন বলেন, আমি এ পরিষদের তৃতীয় বারের মতো নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমার এলাকার জনগনের জন্ম নিবন্ধন ও ওয়ারিশ সমস্যা নিরসনে উদ্যোক্তা সজিব ও গোলাম মোস্তফা শামীম এর সাথে কথা বলছিলাম, কিন্তু তারা আজকাল করে সময় ক্ষেপন করায় আমি উদ্যোক্তা সজিব ও সচিব গোলাম মোস্তফা শামীম এর সাথে রাগারাগি করার এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান এসে আমার সাথে খারাপ আচরন করে এবং আমাকে স্ব-জোরে থাপ্পর মারে। পরে আমিও তাকে থাপ্পড় মারি। এ ঘটনায় আমি হতবাক হয়ে যাই এবং অসুস্থ হয়ে পড়ি।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার পর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পুলিশের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের ফোন করে আনা বহিরাগত লোকজন আমাকে মারতে আসে। আমি কোন ভাবে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসি। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই। আমি অসুস্থতার কারনে লিখিত অভিযোগ করতে পারিনি।
এ বিষয়ে পরিষদের কয়েকজন সদস্য ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরাসহ স্থানীয়রা বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে ওয়ারিশ সনদে ৫’শ টাকা ও জন্মনিবন্ধন সনদে ৩’শ টাকা নির্ধারন করায় লিটন মেম্বারসহ কয়েকজন প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যান তাদের সাথে অশোভন আচরন করতো। ঘটনার দিন লিটন মেম্বার উদ্যোক্তা ও সচিবের সাথে জোরে কথা বলায় চেয়ারম্যান তার কক্ষ থেকে তেড়ে এসে লিটন মেম্বারের সাথে খারাপ আচরন করে এবং এক পর্যায়ে তাকে থাপ্পড় মারে। পওে লিটন মেম্বারও চেয়ারম্যারকে থাপ্পড় মারে। সে প্রতিনিয় টাকা করায় মেম্বার চেয়ারম্যানের মারামারির বিষয় দুঃখ জনক, এ ঘটনার তীব্রনিন্দা ও প্রতিবাদ জানান, অবিলম্বে ঘটনার বিচার দাবী করছি।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান কাউসার উল-আলম কামরুল বলেন, ইউপি সদস্য লিটন প্রতিনিয়ত পরিষদের কর্মকর্তা- কর্মচারী এবং সকলের সাথে খারাপ আচরন করে। ঘটনার দিন অভিযুক্ত মেম্বার সচিব ও উদ্যোক্তার সাথে খারাপ আচরন করার এক পর্যায়ে আমি তাকে ডাক দিলে সে আমার সাথেও খারাপ আচরন করে। আমি সহ্য করতে না পেরে তাকে থাপ্পড় দিয়েছি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার এস.আই নাছির উদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যান ও মেম্বারের মারামারির কথা শুনেই আমরা ওই ইউনিয়নে গিয়ে মেম্বারকে উদ্ধার করে বাড়ি পাঠিয়ে দেই এবং উভয়কে থানায় অভিযোগ করতে বলেছি। এখনো পর্যন্ত কেহই কোন ধরনের লিখিত অভিযোগ করেনি।
এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান ও মেম্বারের মারামারির বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি এবং ফোর্স পাঠিয়েছি। তবে এখনো পর্যন্ত কেহই লিখিত অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা।