ঢাকা ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিমিষেই পুড়ে শেষ হয়ে গেল অসহায় বিধবা’র বসতঘর

মনিরুল ইসলাম মনির: স্বামী মৃত্যু বরণ করার পর তিন ছেলে সন্তানকে দিনাতিপাত করে আসছেন বিধবা নারী আরোজা বেগম (৫০)। রাস্তার কাজ করে সংসার চালানোর পাশাপাশি সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছেন তিনি। অভাবে পড়ে স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটে মাটিও বিক্রি করে দিয়েছেন। ছিল একটি থাকার ঘর। সেটিও গতকাল সন্ধ্যায় আগুন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার উত্তর লুধুয়া গ্রামে এ ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গেলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৫.৩০ ঘটিকার সময় আগুন দেখতে পেয়ে ডাকচিৎকার দেন বাড়ির লোকজন। ওই সময় পাশের বাড়িতে থাকা আরোজা বেগম আগুনের খবর পেয়ে বাড়িতে এসে দেখতে পান আগুনে জ্বলছে তার বসতঘর। ফায়ারসার্ভিস ও এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও বাঁচাতে পারেন নি বসত ঘরটি। ঘরে থাকা আসবাবপত্র, ধান, চাউল, নগদ টাকা, কাগজপত্র, সনদপত্র সহ সবকিছু মুহুর্তেই ছাই হয়ে গেছে।
আরোজা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে করার কারণে কথা বলতে পারেন নি। তার ছেলে শরীফ বলেন, আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রী কাজ করি। আমার একটি সাইকেল ছিল কলেজে যাওয়ার সেটিও পুড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ঘরে থাকা ৩ টি খাট, ১ টি ফ্রিজ, ১ টি আলমিরা, ১ টি কেবিনেট, ১ টি ওয়্যারড্রপ, ১ টিভি, ১ টি মোবাইল ফোন সহ সবকিছু পুড়ে যায়। আমার পাসপোর্ট করার রাখা ১৭ হাজার ৫০০ টাকা ও বিদেশে যাওয়ার জন্য লোন উঠানো ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিল, কিন্তু টাকাগুলো পাচ্ছি না। সব মিলিয়ে প্রায় ১০-১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বর্তমানে পরিবারটি খোলা আকাশের নিচে বসবাস ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। তবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল হাসান জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ঢেউটিন ও নগদ টাকা অনুদান দেওয়া হবে।
জানা গেছে, আরোজা বেগমের স্বামী আল-আমিন প্রধান মৃত্যু বরণ করার পর তিন ছেলে নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করে সংসার চালাতেন। এমনকি তিনি রাস্তায় মাটি কাটার কাজও করছেন। তার বড় ছেলে আরিফ ছয় মাস আগে ঋণ করে প্রবাসে গিয়ে বর্তমানে অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। মেজো ছেলে শরীফ রাজমিস্ত্রী কাজ করেন এবং ছোট ছেলে কলেজে লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রী কাজ করেন। এ অবস্থায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে তাদের থাকার আশ্রয় করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন সরকার ও সকল ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে।

Model Hospital
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় ছাত্রীসহ প্রধান শিক্ষক আটক

নিমিষেই পুড়ে শেষ হয়ে গেল অসহায় বিধবা’র বসতঘর

আপডেট সময় : ০৪:২৪:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২২

মনিরুল ইসলাম মনির: স্বামী মৃত্যু বরণ করার পর তিন ছেলে সন্তানকে দিনাতিপাত করে আসছেন বিধবা নারী আরোজা বেগম (৫০)। রাস্তার কাজ করে সংসার চালানোর পাশাপাশি সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছেন তিনি। অভাবে পড়ে স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটে মাটিও বিক্রি করে দিয়েছেন। ছিল একটি থাকার ঘর। সেটিও গতকাল সন্ধ্যায় আগুন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার উত্তর লুধুয়া গ্রামে এ ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
শনিবার সকালে সরেজমিনে গেলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৫.৩০ ঘটিকার সময় আগুন দেখতে পেয়ে ডাকচিৎকার দেন বাড়ির লোকজন। ওই সময় পাশের বাড়িতে থাকা আরোজা বেগম আগুনের খবর পেয়ে বাড়িতে এসে দেখতে পান আগুনে জ্বলছে তার বসতঘর। ফায়ারসার্ভিস ও এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও বাঁচাতে পারেন নি বসত ঘরটি। ঘরে থাকা আসবাবপত্র, ধান, চাউল, নগদ টাকা, কাগজপত্র, সনদপত্র সহ সবকিছু মুহুর্তেই ছাই হয়ে গেছে।
আরোজা বেগম কান্নায় ভেঙ্গে করার কারণে কথা বলতে পারেন নি। তার ছেলে শরীফ বলেন, আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রী কাজ করি। আমার একটি সাইকেল ছিল কলেজে যাওয়ার সেটিও পুড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ঘরে থাকা ৩ টি খাট, ১ টি ফ্রিজ, ১ টি আলমিরা, ১ টি কেবিনেট, ১ টি ওয়্যারড্রপ, ১ টিভি, ১ টি মোবাইল ফোন সহ সবকিছু পুড়ে যায়। আমার পাসপোর্ট করার রাখা ১৭ হাজার ৫০০ টাকা ও বিদেশে যাওয়ার জন্য লোন উঠানো ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিল, কিন্তু টাকাগুলো পাচ্ছি না। সব মিলিয়ে প্রায় ১০-১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বর্তমানে পরিবারটি খোলা আকাশের নিচে বসবাস ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। তবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল হাসান জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ঢেউটিন ও নগদ টাকা অনুদান দেওয়া হবে।
জানা গেছে, আরোজা বেগমের স্বামী আল-আমিন প্রধান মৃত্যু বরণ করার পর তিন ছেলে নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করে সংসার চালাতেন। এমনকি তিনি রাস্তায় মাটি কাটার কাজও করছেন। তার বড় ছেলে আরিফ ছয় মাস আগে ঋণ করে প্রবাসে গিয়ে বর্তমানে অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। মেজো ছেলে শরীফ রাজমিস্ত্রী কাজ করেন এবং ছোট ছেলে কলেজে লেখাপড়ার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রী কাজ করেন। এ অবস্থায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে তাদের থাকার আশ্রয় করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন সরকার ও সকল ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে।

Model Hospital