চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ধান রোপনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের পিটুনিতে সেলিম কবিরাজ (৪৫) নামে এক দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের গৌরেশ্বর পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
মৃত্যুর ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করেন হাজীঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন ফারুক।
সেলিম ওই গ্রামের কবিরাজ বাড়ীর আবুল কালাম কবিরাজের ছেলে। পেশায় অটো চালক এবং ১ ছেলে ও ৩ কন্যা সন্তানের জনক।
এঘটনায় সেলিমকে বাঁচাতে গিয়ে রাজিয়া বেগম (৫৫) নামে এক নারী আহত হয়। আহত ওই নারী নিহত সেলিমের চাচি।
স্থানীয় বাসিন্দা ইমান হোসেন ও সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন জানান, কৃষক সেলিমের সাথে আজিজ কাজী ও জাহাঙ্গীর কবিরাজের সাথে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে স্থানীয় মাঠে ধান রোপন নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওই ঘটনা স্থানীয়রা ওইদিন রাতেই সমাধান করে দেয়। কিন্তু আজিজ কাজী ও জাহাঙ্গীর কবিরাজ স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী হওয়ার কারণে তাদের পক্ষ নেয় স্থানীয় আরো বেশকিছু লোক।
তারা পরিকল্পনা করে জুমআর নামাজের পূর্বে মসজিদের পাশে লাঠিসোটা এনে রাখে। জুমার নামাজ আদায় করে সেলিম হোসেন তার ছেলে সহ মসজিদ থেকে বের হলে পূর্বে ওৎ পেতে থাকা দোকানদার আকবর কাজী, চান মিয়া তার ভাই নুরু, আজিজ দেশী অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালাতে শুরু করে।
এসময় দোকানদার আকবর কাজির লাঠির আঘাতে সেলিম হোসেনের মৃত্যু হয়।
নিহত সেলিমের স্ত্রী বিলকিস বেগম ও মেয়ে শারমিন জানান, পরিকল্পনা করে স্থানীয় বাসিন্দা আলিউজ্জামানের ছেলে চানমিয়া, আজিজ, তারা মিয়া ও নুরু মিয়া, আব্দুর রবের ছেলে আকবর, আনিস, আনিছের ছেলে জাহাঙ্গীর, রোশেদ, মেহেদী, মোতালেব কাজীর ছেলে রিয়াদ, খালেকের ছেলে নাছিরসহ প্রায় ৩০ জন হামলা করে সেলিমকে হত্যা করে।
কৃষক সেলিমের ছেলে সবুজ হোসেন জানান, ঘটনাস্থল থেকে তার বাবাকে প্রথমে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর পরই অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যায়।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, বিষয়টি জেনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। নিহত ব্যাক্তির ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ আইনী প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে। এই ঘটনায় থানায় অভিযোগের পর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে ঘটনাস্থল থেকে ওই বাড়ির ৬ নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়।