এস এম ইকবাল : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে কৃষকদের নগদ টাকার প্রলোভন দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে কৃষককে মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করার নামে মাটি নেওয়ার উদ্দেশ্য হাসিলেরও। তবে নগদ টাকা পেতে অনেক কৃষক স্বেচ্ছায় মাটি বিক্রি করছেন বলেও জানা গেছে। এভাবে কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কাটায় জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে।
![priyo chandpur 12 Model Hospital](https://priyochandpur.net/wp-content/uploads/2023/11/awfe.png)
স্থানীয় সূত্র জানায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ২৬ টি ইটভাটা রয়েছে। আশপাশের উপজেলার তুলনায় সংখ্যাটি অনেক বেশিই বলতে হবে। ফসলি জমির মাটি বেচাকেনার কাজে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী গড়ে উঠেছেন। তাঁরা বছরের বিভিন্ন সময় (অফ-সিজন) কম দামে একর বা বিঘা চুক্তিতে কৃষকের জমির মাটি কিনে রাখেন। ইটভাটার মৌসুমে জমি থেকে মাটি কেটে তা বেশি দামে ইটভাটায় সরবরাহ করেন। কোনো কোনো কৃষক সরাসরি ভাটার মালিকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে মাটি বিক্রি করছেন।
উপজেলার বালিথুবা পূর্ব, সুবিদপুর পশ্চিম, সুবিদপুর পূর্ব ও পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, খননযন্ত্রের সাহায্যে এসব মাটি কেটে ট্রাক্টর ও ট্রাকের সাহায্যে বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের গুপ্টি গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান বলেন, তিনি কয়েক বছর ধরে মাটির ব্যবসা করছেন। তিনি স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জমির মাটি কিনে রেখেছেন। এক-দেড় ফুট গভীরতায় মাটি কেটে ভাটার মালিকের কাছে বিক্রি করছেন। প্রতি বিঘা জমির মাটির জন্য ৩০-৪০ হাজার টাকা হারে চুক্তি হয়েছে।
পলাশ ইটভাটার মালিক মফিজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এক ফসলি জমির মাটি কাটার কারনে ক্ষতি হয় না, দুই ফসলি জমির মাটি কাটায় ক্ষতি হয়। তবে অপরিকল্পিত বাড়ি তৈরীতে ফসলি জমির ক্ষতি হয়? সে বিষয়েও হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন বলে মনে করি।
এক প্রশ্নের জবাবে গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গনি বাবুল পাটওয়ারী বলেন, মাটি আনা-নেওয়ার ফলে গ্রামীণ সড়ক নষ্ট হচ্ছে এবং মাটি আপনার ব্রিক ফিল্ডে নেওয়া হচ্ছে? তিনি বলেন, আপনি (সংবাদ কর্মী) এসে রাস্তা ঠিক করে দেন। উনার ব্রিক ফিল্ডে মাটি যাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশিক জামিল মাহমুদ বলেন, ফসলি জমির উপরিভাগের ছয় থেকে আট ইঞ্চির মধ্যে মাটির জৈব উপাদান থাকে। সেই মাটি কাটা হলে জমির জৈব উপাদান চলে যায়। এতে জমির স্থায়ী ক্ষতি হয়। ফসলি জমির মাটি কাটা তাই বেআইনি। এ কাজে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত উপজেলা প্রশাসনের।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিউলি হরি বলেন, এ বিষয়ে আমি জেনেছি এবং একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শিগগিরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।