তীব্র রোদ আর প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে চাঁদপুরের জনজীবন। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গরমের মাত্রা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) চাঁদপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। একটু স্বস্থির আশায় অনেকেই আশ্রয় নিচ্ছেন গাছতলায়। প্রচন্ড খড়তাপে লোকসানে পড়েছেন বোরো ধান চাষী ও সবজি চাষীরা।
এদিকে অসহ্য এই গরমে চাঁদপুরের সকল হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে বেড়েছে জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, টাইফয়েড, হিটস্ট্রোকসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সব বয়সের মানুষের কষ্ট হলেও এই গরমে সবচেয়ে বেশি কাবু করেছে বয়স্ক ও শিশুদের।
সরেজমিনে চাঁদপুর জেলা শহরে দেখা যায়, তীব্র গরমে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।
সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। রাস্তায় রিকশা-ইজিবাইক, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানরিকশা নিয়ে যারা বের হয়েছেন, তারা ঘেমে একাকার হয়ে উঠেছেন। রাস্তার তাপে যেনো পুড়ে যাচ্ছেন ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা।
একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকেই। রাতের বেলায়ও বিদ্যুৎ চলে গেলে শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় অভিভাবকদের। হাত পাখার বাতাসেও যেন কাজ হচ্ছে না কোনভাবেই।
এদিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, সেবা নিতে আসা রোগীরা গরমে হাঁসফাঁস করছে। সিট না পেয়েও বারান্দায় চিকিৎসা সেবা নিতে দেখা গেছে ভর্তিকৃত রোগীদের। প্রচণ্ড গরমে যখন বিদ্যুৎ চলে যায় তখন রোগীরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। জেলার চিকিৎসকরা তীব্র গরমে হিটস্ট্রোক এড়াতে সবাইকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
এ সময়ে ডায়রিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি-কাশি, পক্স, হিটস্ট্রোক, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি হতে পারে। এই গরমে ফ্রিজের পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। প্রচুর পানি, ডাবের পানি, দেশি ফলমূল খাওয়া পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হতে বলা হচ্ছে।
এছাড়াও প্রতিনিয়ত চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে চলমান এই তীব্র গরমে শ্রমজীবী মানুষ কিংবা পথচারীদের বিনামূল্যে ঠান্ডা পানি, শরবত ও স্যালাইন দিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে।