সজীব খান : মানুষ বাঁচে কর্মে, বয়সে নয়, ভাব সম্প্রসারণ এ পড়েছি। সে ভাব সম্প্রসারণের যথার্থ তখন ভালো ভাবে বুঝতে না পারলেও কালের বিবর্তনে এখন কিছুটা বুঝার চেষ্টা করছি। মাঠ পর্যায়ের একজন ক্ষুদে সংবাদকর্মী হিসেবে যতটুকু সংবাদ জগতে বিচরণ করেছি, চেষ্টা করছি, বিভিন্ন ব্যাক্তির, সফলতা, ব্যর্থতা নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করেছি, পাঠক মহলে তুলে ধরেছি, তা হয়তো বা হবে যৎসামান্য, সংবাদপত্রের ছোট্ট পরিসরে অনেকের সংমিশ্রণে এসেছি। আমরা যারা সংবাদকর্মী, তাদের বন্ধু বলতে কেউ নেই, কোন ব্যাক্তির পক্ষে দশটা ভাল সংবাদ, একটা মন্দ সংবাদে সংবাদকর্মীর মত বাজে লোক একটা ও নেই, কতশত উপমা দিয়ে সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার, কারন একটাই, একটা মন্দ নিউজ। এ জন্য বলা হয়, সংবাদকর্মীর কোন বন্ধু নেই। তারপর ও লিখতে হয়, বলতে হয়, পাঠকদের জানাতে হয়।
বলছি চাঁদপুর সদর উপজেলার ৬নং মৈশাদী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মানিকের কথা। তিনি আলোকিত মৈশাদী ইউনিয়ন গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা, তৃনমূলের খেটে খাওয়া মানষের আশ্রয়স্থল, অসহায়-মেহনতি মানুষের বিপদে আপদে, পাশে দাঁড়িয়ে সেবা করার হাতেমতাই। এক মহামানবের অভিভাবকের দায়িত্বের অবসানে মৈশাদীর অসহায় মানুষের আকুতির হাহাকার। এ লেখা প্রকাশের পর আমাকে নিয়ে হয়তো কেউ কেউ বিভিন্ন মন্তব্য করবে, তারপর ও লিখতে হয়, চোখের দেখা, সাধারণ মানুষের মনের কথা তুলে ধরতে হয়, দায়িত্ব নয়, একজন মাঠ পর্যায়ের সংবাদকর্মী হিসেবে লিখতে হয়।
পৃথিবীটাই এমন, এক স্থানে আজীবন কেউ থাকতে পারেনা, থাকা যায় না, প্রবাহমান স্রোতের মত এদিক ও দিক যেতে হয়, এটাই বাস্তব, এ বাস্তবতাই আমাদেরকে মানতে হয়, মানতে হবে। তারপরও কথা থেকে যায়, জনপ্রতিনিধি হয়ে, জনগনকে, রাষ্ট্রকে কি দিল, জনগন কি পেলো। এমন প্রশ্নের উত্তরে সাধারণ জনগন দায়িত্বের অবসানের পূর্বেই ইংগিত দেয়। ভাল কাজ, ভাল সেবা, ভাল মনের মনুষত্ব শুধু দায়িত্বর অবসানের পর বুঝা যায়।
মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মানিকের গত ইউপি নির্বাচনী প্রচারনার শুরু থেকেই সাথে ছিলাম। নির্বাচনে বিজয়ের পর পেশাগত কারনে তার বেশির ভাগ নিউজগুলো আমি করেছি, বিভিন্ন পত্রিকায় ভাল ভাবে প্রকাশও করেছি, সফলভাবে দায়িত্ব পালন করার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি, হয়েছেন জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান।
তার দায়িত্ব পালনকালে চলার পথে কখনোই, কারো সাথে মান অভিমান কোনটাই দেখিনি, বা চোখে পরেনি, হাসি মুখে সকলের সাথে কথা বলেছেন, মিশেছেন, সেবা দিয়েছেন, একজন উদার মনের মানুষের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
গত পাঁচ বছর পূর্বে যখন তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন, তখন থেকেই ছোট ভাইয়ের মত পাশে থেকে বুদ্ধি পরামর্শ দিয়েছেন, স্নেহ দিয়েছেন, ভালবাসা দিয়েছেন তিনি। সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলা একজন বলিষ্ঠ জনপ্রতিনিধি হিসেবে মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মানিককে দেখেছি, চিনেছি। আমার সংবাদ জগতের ১৫ বছরে এমন জনপ্রতিনিধির সংস্পর্শে আর আসেনি। উজার করা ভালবাসার জনপ্রতিনিধি তিনি, সমুদ্র দেখিনি, দেখেছি তার বিশালতা।
মনিরুজ্জামান মানিক মৈশাদীকে ভালোবেসে উজার করে কাজ করেছেন, পাশে থেকেছেন, কালের আর্বতনে সত্যি তিনি একদিন ইতিহাস হবে, দেখবে মানুষ, দেখবে পৃথি্বি, বলবে মুখে মুখে। মনিরুজ্জামান মানিক মৈশাদী খেটে খাওয়া, অসহায়, দিনমজুর মানুষদের যেভাবে আপদে বিপদে পাশে ছিলেন, সেবা করেছেন তার কারও অজানা নয়। একজন সফল জনপ্রতিনিধির প্রস্থানে অনেকেই সত্যি হতভম্ব।
যে স্বপ্ন নিয়ে তিনি চেয়ারম্যান হয়েছেন, তা বাস্তবায়নে কাজ করেছেন, মৈশাদীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মৌলিক অধিকার সকল ক্ষেত্রেই তিনি সফল, মৈশাদীতে শতভাগ শিক্ষা বিস্তারে ইউনিয়নের প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছেন, অসহায় শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা করেছেন, ইউনিয়নকে ডিজিটাল ইউনিয়ন গরার পাশাপাশি ই-লাইব্রেরি এন্ড স্টুডেন্ট কর্নারে নিজস্ব অর্থায়নে কম্পিউটার দিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। করেছেন মৈশাদীকে একটি আধুনিক মডেল ইউনিয়ন ।
একজন হাতেমতাইকে হারিয়ে, আপনার প্রতি ইউনিয়নবাসীসহ সকলের শ্রদ্ধা আর ভালবাসা থাকবে আজীবন। মৈশাদীর চাকরিজীবী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক সকলেই আপনার জন্য একটু হলে ও মন খারাপ করবে, আপনি আগেরমত তাদের পাশে থাকবেন, সেবা দিবেন এটাই আমার আমাদের প্রত্যাশা।
হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিয়ে মৈশাদীর মানুষকে আপন করে নিয়েছেন এমন জনপ্রতিনিধিকে কি করে মানুষ ভুলবে! ভাল থাকবেন ভাই।