ঢাকা ০৬:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মতলব দক্ষিণে নায়েরগাঁও উবি’র

জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ইউএনও’র কাছে প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

Model Hospital

গত ৮ ফেব্রুয়ারি নায়েরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন এ অভিযোগ করেন।

অভিযোগ সূত্রে ও বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জানা যায়, গেল ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর বিদ্যালয়ের নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদন দেয়। সেই অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ের সার্বিক কাজ তদারকি এবং বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেনকে সহযোগিতা করে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে চলতি বছরের গত ২৮ জানুয়ারি যথারীতি সকল শিক্ষকবৃন্দ বিদ্যালয়ের অফিসে অবস্থান করছিল।

এমতাবস্থায় সকাল সাড়ে দশটার দিকে নায়েরগাঁও এলাকার মো. রিপন মিয়া, শফিকুল ইসলাম মিয়াজী এবং মালেক সওদাগরের নেতৃত্বে ১২/১৩ জন বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি আবু জাফর, মো. রাকিব উদ্দিন খাঁন এবং বিথীকা রানী মন্ডলকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি, হুমকি ধমকি, ভয়ভীতি এবং হাত পা ভেঙ্গে দিবে বলে শাসিয়ে জোরপূর্বক পদত্যাগ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।

এসময় হুমকি-ধমকিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বিথীকা মন্ডলের হাতে ধরে টানাটানি করে তারা। পরে ইজ্জতের ভয়ে বিথীকা মন্ডল স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয় এবং সেই সাথে আবু জাফরও নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভয়ে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু অপর শিক্ষক মো. রাকিব উদ্দিন খাঁন স্বাক্ষর দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে দীপঙ্কর ঘোষ নামে এক যুবক মো. রাকিব উদ্দিন খাঁনকে মারার জন্য এবং তাদের দলে নেতৃত্ব দেয়া শফিকুল ইসলাম মিয়াজী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মারার জন্য তেড়ে আসেন। ওই সময় প্রধান শিক্ষক কিভাবে এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করে তা দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায় রিপন ও শফিকুল ইসলামসহ তাদের সহযোগিরা।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি দলবল নিয়ে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে রিপন মিয়া, শফিকুল ইসলাম মিয়াজী এবং মালেক সওদাগরসহ তাদের দলবল যাদের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে জোর করে স্বাক্ষর নিয়েছে সেগুলো আমাকে প্রহন করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তখন আমি অপারগতা প্রকাশ করলে তারা আমাকে হুমকি-ধমকি এবং ভয় ভীতি দেখিয়ে মারার জন্য তেড়ে আসে। আমি তখন তাদের এই ধরনের আচরণে মনক্ষুন্য হয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শককে বিষয়টি অবহিত করি। তখন বিদ্যালয় পরিদর্শক আমাকে জানান ম্যানেজিং কমিটির কোন সদস্য পদত্যাগ করলে সভাপতির নিকট পদত্যাগ পত্র জমা দিতে হবে। বিষয়টি আমি তাদেরকে জানালে তারা ওই দিন চলে যায়।

পরবর্তীতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বিদ্যালয়ের পূর্বদিকের প্রবেশ গেইটে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবু জাফর স্যারের সাথে তাদের দেখা হওয়ার পর আবু জাফর স্যারের সাথে খারাপ আচরণ করে এবং তাকে শাসিয়ে ভয় দেখিয়ে জোর করে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর আমি জানতে পারি। তখন আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং ওসি মহোদয়কে অবহিত করি। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। আমাদের পরিবার পরিজনও শংকায় আছেন।

এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতিমা সুলতানা বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি থানায় মার্ক করে দিয়েছি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় ছাত্রীসহ প্রধান শিক্ষক আটক

মতলব দক্ষিণে নায়েরগাঁও উবি’র

জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ইউএনও’র কাছে প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৭:০১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

Model Hospital

গত ৮ ফেব্রুয়ারি নায়েরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন এ অভিযোগ করেন।

অভিযোগ সূত্রে ও বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জানা যায়, গেল ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর বিদ্যালয়ের নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড অনুমোদন দেয়। সেই অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ের সার্বিক কাজ তদারকি এবং বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেনকে সহযোগিতা করে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে চলতি বছরের গত ২৮ জানুয়ারি যথারীতি সকল শিক্ষকবৃন্দ বিদ্যালয়ের অফিসে অবস্থান করছিল।

এমতাবস্থায় সকাল সাড়ে দশটার দিকে নায়েরগাঁও এলাকার মো. রিপন মিয়া, শফিকুল ইসলাম মিয়াজী এবং মালেক সওদাগরের নেতৃত্বে ১২/১৩ জন বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি আবু জাফর, মো. রাকিব উদ্দিন খাঁন এবং বিথীকা রানী মন্ডলকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি, হুমকি ধমকি, ভয়ভীতি এবং হাত পা ভেঙ্গে দিবে বলে শাসিয়ে জোরপূর্বক পদত্যাগ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।

এসময় হুমকি-ধমকিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বিথীকা মন্ডলের হাতে ধরে টানাটানি করে তারা। পরে ইজ্জতের ভয়ে বিথীকা মন্ডল স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয় এবং সেই সাথে আবু জাফরও নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভয়ে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু অপর শিক্ষক মো. রাকিব উদ্দিন খাঁন স্বাক্ষর দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে দীপঙ্কর ঘোষ নামে এক যুবক মো. রাকিব উদ্দিন খাঁনকে মারার জন্য এবং তাদের দলে নেতৃত্ব দেয়া শফিকুল ইসলাম মিয়াজী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মারার জন্য তেড়ে আসেন। ওই সময় প্রধান শিক্ষক কিভাবে এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করে তা দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায় রিপন ও শফিকুল ইসলামসহ তাদের সহযোগিরা।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি দলবল নিয়ে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে রিপন মিয়া, শফিকুল ইসলাম মিয়াজী এবং মালেক সওদাগরসহ তাদের দলবল যাদের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে জোর করে স্বাক্ষর নিয়েছে সেগুলো আমাকে প্রহন করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। তখন আমি অপারগতা প্রকাশ করলে তারা আমাকে হুমকি-ধমকি এবং ভয় ভীতি দেখিয়ে মারার জন্য তেড়ে আসে। আমি তখন তাদের এই ধরনের আচরণে মনক্ষুন্য হয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শককে বিষয়টি অবহিত করি। তখন বিদ্যালয় পরিদর্শক আমাকে জানান ম্যানেজিং কমিটির কোন সদস্য পদত্যাগ করলে সভাপতির নিকট পদত্যাগ পত্র জমা দিতে হবে। বিষয়টি আমি তাদেরকে জানালে তারা ওই দিন চলে যায়।

পরবর্তীতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বিদ্যালয়ের পূর্বদিকের প্রবেশ গেইটে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবু জাফর স্যারের সাথে তাদের দেখা হওয়ার পর আবু জাফর স্যারের সাথে খারাপ আচরণ করে এবং তাকে শাসিয়ে ভয় দেখিয়ে জোর করে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর আমি জানতে পারি। তখন আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং ওসি মহোদয়কে অবহিত করি। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। আমাদের পরিবার পরিজনও শংকায় আছেন।

এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতিমা সুলতানা বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি থানায় মার্ক করে দিয়েছি।