বেশ ক’দিন ধরে ব্যাংক পাড়ায় চলছে মহা হট্টগোল। বেসরকারী ব্যাংক পূবালী ব্যাংকের ব্রাঞ্চ প্রধানের দুর্নীতির খবর এখন টপ অফ দ্যা নিউজ। অনেকেই ছন্দের সাথে বলছেন, “মশাই যখন কসাই”।
![priyo chandpur 12 Model Hospital](https://priyochandpur.net/wp-content/uploads/2023/11/awfe.png)
মানুষের চেহারা দেখে কখনোই বুঝার উপায় নেই তিনি ভন্ড না সাধু। ছোটবেলায় শুনতাম অর্থ আর নারী এ দুই মাধ্যমে মানুষের চরিত্র বুঝা সম্ভব। বাস্তবের ঘটনাও তাই। সম্প্রতি চাঁদপুরে বেসরকারী একটি ব্যাংকের উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তার দুর্নীতি যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে আবারো জানান দিয়ে গেলো কোন কোন ক্ষেত্রে বিশ্বাসে আসলে মেলে না বস্তু। গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ম্যানেজার মশাই। মানা যেত যদি কোন ছোট কর্মকর্তা এ কাজ করতো। গোড়ায় যদি গলদ থাকে তবে শাখা- প্রশাখার কি হাল একবার ভাবুন। ফিল্মি স্টাইলে ভদ্রলোক অর্থ নিয়ে পালিয়েছে। মোটামুটি বলা চলে কুকি-চিনের চাইতেই ভয়ংকর ছিল ব্যবস্থাপক মশাই।
সারাদেশে সুনামের সাথে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে পূবালী ব্যাংক। তবে চাঁদপুর শহরের নতুন বাজার শাখার ব্যবস্থাপক শ্রীকান্ত নন্দীর কার্যকালাপ ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
গ্রাহককে নানা রকম লোভ-লালসা দেখিয়ে নিজের পকেট ভারি করার চিন্তায় মগ্ন ছিলেন তিনি। বর্তমান সময়ে সঞ্চয়ের কথা আসলে চিন্তা করা মানে বাড়তি একটা প্যারা মাথায় নিয়ে ঘোরা। সেখানে নিন্ম মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরা একটু বিপাকেই আছেন। তবু ভবিষতের কথা মাথায় রেখে কিছুটা হলেও সঞ্চয় করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন তারা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ব্যাংকের বড় কর্মকর্তাদেরই যদি বিশ্বাস করা না যায় তবে গ্রাহকের এ সঞ্চয়ের নিশ্চয়তাটা কতটা মজবুত হবে সেটা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত। হয়তো এখন কথা আসবে কারো ব্যক্তিগত অন্যায়ের দায় কর্তৃপক্ষ নিবে না, কিন্তু ঐ প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ার আছে বলেই তো লোকগুলো বিশ্বাস করে।
নাম বলতে অনিচ্ছুক এক গ্রাহক বলেন, “আমি কলেজে পড়ি। টিউশনি করিয়ে সংসারে কিছুটা সাহায্য করে এরপর যা অবশিষ্ট থাকে তা দিয়ে একটি ডিপিএস চালাই। এমন সংবাদ শোনার পর আমি বেশ ভেঙে পরি। এত কষ্টের জমানো টাকা, চিন্তা তো একটু হবেই। তবে পরে অবশ্য বুঝেছি যে আমাদের টাকায় কোন সমস্যা হবে না। এখন কথা হচ্ছে সাময়িক সময়ের জন্য তো আমরা হোঁচট খেয়েছি। “
দেশে বড় কারো সাথে ঘটনা ঘটলে তা নজরে আসে। আমাদের মিডিয়া পাড়ায়ও তখন ধুম লেগে যায়। আইন-আদালত নিয়ে দৌঁড়-ঝাপ শুরু। কিন্তু নিন্ম-মধ্যেবিত্তের জীবনে এমন ঘটনা ঘটলে তা প্রকাশ্যে আসে না। সুযোগে প্রতারিত হউন অনেকে। ব্যাংকিং কার্যক্রমে আরো বেশী জবাবদিহিতা থাকা উচিত। গ্রাহক সেবা উন্নত করতে আরো বেশী সোচ্চার হওয়া উচিত।
গ্রাহকদেরও এব্যাপারে আরো বেশী সচেতন হওয়া দরকার। মনে রাখতে হবে, লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু!