ঢাকা ১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে

মতলব উত্তরে মামুন, রেজাউল, শুভাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মতলব উত্তরে সাবেক ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপির ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হাসান মামুন, ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফরাজীকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য রিয়াজুল হাসান রিয়াজ ও কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছোবহান সরকার শুভাসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এই মামলায় এজাহারনামীয় ২০ জন ও অজ্ঞাত আরও ১২ জনকে আসামি করা হয়।
শনিবার (৩১ আগস্ট) মামলাটি করেন ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দানেশ। রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতলব উত্তর থানার (ওসি তদন্ত) মো. সানোয়ার হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী একজন লিভার ট্রেন্সফার রোগী। দীর্ঘদিন ভারতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ২০১১-২০২১ সাল পর্যন্ত স্থানীয় ১২নং ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। মামলায় উল্লেখিত বিবাদীরা দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী, সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী, ডাকাত প্রকৃতির লোক।
ঘটনার দিন গত ১৬ জুন’ ২৪ সন্ধ্যা সাড়ে টার সময় ১নং আসামী স্থানীয় সাবেক এমপি মায়া চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী, ২নং আসামী কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য, ৩নং আসামী কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ৪নং আসামী ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সকল আসামীরা ১-৪নং আসামীর ছত্রছায়ায় স্থানীয়ভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ঘটনার তারিখ ঈদুল আজহার পূর্বের দিন। মামালার বাদী একজন রাজনৈতিক কর্মী ও জনপ্রতিনিধি হওয়ায় গনমানুষের সাথে সম্পর্ক রেখে জীবন যাপন করছেন। স্থানীয় জনগনের সাথে ঈদের উপহার সামগ্রী বিতরণের উদ্দেশ্যে বাড়িতে আসার বিষয়ে টের পাইয়া রাজনৈতিক শত্রুতার জের ধরিয়া ৪ নং আসামী সকল আসামীদেরকে খবর দেয়। বর্নিত ১-৪নং আসামীর কু-মতলব পূরনে সকল আসামীরা বাদী ও বাদীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের চিরতরে শেষ লক্ষে পরিকল্পিতভাবে একজোটবদ্ধ হইয়া ঘটনাস্থলে চাইনিজ কুড়াল, দা, ছেনি ও লোহার রড সহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সাজ্জিত হইয়া সকল আসামীরা প্রথমেই বাদীর পথরোধ করিয়া হত্যার উদ্দেশ্য এলোপাথারি আক্রমন করে বাদী প্রাণ রক্ষার্থে নিজবসত ঘরে প্রবেশ করিলে সকল আসামীরা বসত ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে।
ঘটনাস্থলে আতংক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সকল আসামীরা তাদের হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল, দা, ছেনা, লোহার রড দিয়া আমার বিল্ডিং এর থাই গ্লাস, দরজা, জানালা, ঘরে থাকা ফার্নিচার, টিভি, ফ্রিজ সহ কিচেন রুমে থাকা প্রয়োজনীয় ব্যবহার সামগ্রী এলোপাথারি পিটাইয়া ও কোপাইয়া দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে।
বাঁধা দিলে ১নং আসামী তার দুই হাত দ্বারা আমার গলা চাপিয়া শ্বাসরোধ করিয়া হত্যার চেষ্টা করে। ১-২০নং আসামীরা বাদীর বসত ঘরের স্টিলের আলমারি, কেবিনেট, সোকেস ভাঙ্গিয়া উক্ত স্টিলের আলমারি, কেবিনেট ও সোকেস এর ড্রয়ারে থাকা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বাদীর স্ত্রীর স্বর্নের কানের দুল ২টি ওজন আট আনা, স্বর্নের গলার হার ১টি ওজন ২.৫ ভরি, একুনে ৩ ভরি স্বর্ণ নিয়া যায়।
অজ্ঞাতনামা আসামীগণ তাদের হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল ও ছেনা দ্বারা হত্যার ভয় দেখাইয়া বাদীর পরিবারের সদস্যদেরকে ও বাদীকে জিম্মি করিয়া রাখে। বাদী ও বর্নিত স্বাক্ষীগন প্রাণ রক্ষার্থে ডাক চিৎকার দিলে অপরাপর স্বাক্ষীগণ ও স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে আসিলে সকল আসামীগন বাদীকে একা পাইলে সময় সুযোগে হত্যা করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিবে বলিয়া মারাত্মক ভয়ভীতি দেখাইয়া ঘটনাস্থল হইতে দ্রুত চলিয়া যায়।
আসামীদের হুমকি ধমকির কারনে বিগত দিনে আইনগত সহায়তা নিতে পারেননি বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, সাবেক ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমের ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হাসান মামুন, ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য রিয়াজুল হাসান রিয়াজ ও কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছোবহান সরকার শুভাসহ সাড়ে ৩শ’ জনকে এজাহার নামীয় আসামী ও অজ্ঞাত আরও ২৫০ জন সহ মোট ৬০০জনকে আসামী করে গত বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকালে চাঁদপুর মডেল থানায় মামলাটি করেন মুক্তার হোসেন পাটোয়ারী নামের এক ব্যক্তি।
ট্যাগস :

হাজীগঞ্জ থানার নতুন ওসি মহিউদ্দিন ফারুক

হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে

মতলব উত্তরে মামুন, রেজাউল, শুভাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় : ০৭:৪০:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মতলব উত্তরে সাবেক ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এমপির ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হাসান মামুন, ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফরাজীকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য রিয়াজুল হাসান রিয়াজ ও কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছোবহান সরকার শুভাসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এই মামলায় এজাহারনামীয় ২০ জন ও অজ্ঞাত আরও ১২ জনকে আসামি করা হয়।
শনিবার (৩১ আগস্ট) মামলাটি করেন ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দানেশ। রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতলব উত্তর থানার (ওসি তদন্ত) মো. সানোয়ার হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী একজন লিভার ট্রেন্সফার রোগী। দীর্ঘদিন ভারতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ২০১১-২০২১ সাল পর্যন্ত স্থানীয় ১২নং ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। মামলায় উল্লেখিত বিবাদীরা দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী, সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী, ডাকাত প্রকৃতির লোক।
ঘটনার দিন গত ১৬ জুন’ ২৪ সন্ধ্যা সাড়ে টার সময় ১নং আসামী স্থানীয় সাবেক এমপি মায়া চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী, ২নং আসামী কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য, ৩নং আসামী কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ৪নং আসামী ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সকল আসামীরা ১-৪নং আসামীর ছত্রছায়ায় স্থানীয়ভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ঘটনার তারিখ ঈদুল আজহার পূর্বের দিন। মামালার বাদী একজন রাজনৈতিক কর্মী ও জনপ্রতিনিধি হওয়ায় গনমানুষের সাথে সম্পর্ক রেখে জীবন যাপন করছেন। স্থানীয় জনগনের সাথে ঈদের উপহার সামগ্রী বিতরণের উদ্দেশ্যে বাড়িতে আসার বিষয়ে টের পাইয়া রাজনৈতিক শত্রুতার জের ধরিয়া ৪ নং আসামী সকল আসামীদেরকে খবর দেয়। বর্নিত ১-৪নং আসামীর কু-মতলব পূরনে সকল আসামীরা বাদী ও বাদীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের চিরতরে শেষ লক্ষে পরিকল্পিতভাবে একজোটবদ্ধ হইয়া ঘটনাস্থলে চাইনিজ কুড়াল, দা, ছেনি ও লোহার রড সহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সাজ্জিত হইয়া সকল আসামীরা প্রথমেই বাদীর পথরোধ করিয়া হত্যার উদ্দেশ্য এলোপাথারি আক্রমন করে বাদী প্রাণ রক্ষার্থে নিজবসত ঘরে প্রবেশ করিলে সকল আসামীরা বসত ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে।
ঘটনাস্থলে আতংক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সকল আসামীরা তাদের হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল, দা, ছেনা, লোহার রড দিয়া আমার বিল্ডিং এর থাই গ্লাস, দরজা, জানালা, ঘরে থাকা ফার্নিচার, টিভি, ফ্রিজ সহ কিচেন রুমে থাকা প্রয়োজনীয় ব্যবহার সামগ্রী এলোপাথারি পিটাইয়া ও কোপাইয়া দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে।
বাঁধা দিলে ১নং আসামী তার দুই হাত দ্বারা আমার গলা চাপিয়া শ্বাসরোধ করিয়া হত্যার চেষ্টা করে। ১-২০নং আসামীরা বাদীর বসত ঘরের স্টিলের আলমারি, কেবিনেট, সোকেস ভাঙ্গিয়া উক্ত স্টিলের আলমারি, কেবিনেট ও সোকেস এর ড্রয়ারে থাকা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বাদীর স্ত্রীর স্বর্নের কানের দুল ২টি ওজন আট আনা, স্বর্নের গলার হার ১টি ওজন ২.৫ ভরি, একুনে ৩ ভরি স্বর্ণ নিয়া যায়।
অজ্ঞাতনামা আসামীগণ তাদের হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল ও ছেনা দ্বারা হত্যার ভয় দেখাইয়া বাদীর পরিবারের সদস্যদেরকে ও বাদীকে জিম্মি করিয়া রাখে। বাদী ও বর্নিত স্বাক্ষীগন প্রাণ রক্ষার্থে ডাক চিৎকার দিলে অপরাপর স্বাক্ষীগণ ও স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে আসিলে সকল আসামীগন বাদীকে একা পাইলে সময় সুযোগে হত্যা করিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিবে বলিয়া মারাত্মক ভয়ভীতি দেখাইয়া ঘটনাস্থল হইতে দ্রুত চলিয়া যায়।
আসামীদের হুমকি ধমকির কারনে বিগত দিনে আইনগত সহায়তা নিতে পারেননি বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, সাবেক ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমের ব্যক্তিগত সহকারী কামরুল হাসান মামুন, ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য রিয়াজুল হাসান রিয়াজ ও কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছোবহান সরকার শুভাসহ সাড়ে ৩শ’ জনকে এজাহার নামীয় আসামী ও অজ্ঞাত আরও ২৫০ জন সহ মোট ৬০০জনকে আসামী করে গত বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকালে চাঁদপুর মডেল থানায় মামলাটি করেন মুক্তার হোসেন পাটোয়ারী নামের এক ব্যক্তি।