ঢাকা ০৮:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার্থীদের থানা ঘেরাও, জ্ঞান হারালেন ওসি

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে থানায় জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি।

Model Hospital

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক মামলার তদন্ত নিয়ে। এদিন দুপুরে মামলাটির তদন্তে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীর দ্বারা লাঞ্চিত হন চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই আব্দুর সামাদ।

শহরের কোরালিয়ায় সেই ঘটনা কোনমতে নিয়ন্ত্রণে আনেন পুলিশ সদস্যরা। পরে মিছিলসহ থানায় প্রবেশ করে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী। থানায় ঢুকে এসআই সামাদকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

সে সময় থানায় উপস্থিত অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) এই প্রতিবেদককে এসব কথা জানান ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের ওয়াট স্টপ সেন্টারে ভর্তি থাকা আহত এসআই সামাদ।

তিনি বলেন, ‘ওরা আমার সন্তানের চেয়েও বয়সে ছোট। আমিতো থানায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে গিয়েছিলাম। উভয় পক্ষ যেন এলাকায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি না করে, সেজন্যই ঊর্দ্ধতনের নির্দেশে দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলাম। আমার সাথে কেনো ওরা এমন আচরণ করলো বুঝতে পারছি না। এই ন্যাক্কারজনক অপমান আমি সইবো কীভাবে?’
চাঁদপুর সদর থানার পুলিশ সূত্র জানায়, কোড়ালিয়ার পাটোয়ারী স্কুল সংলগ্নের হারুন ছৈয়ালের স্ত্রী মাছুয়া বেগম (৪২) নামে এক নারী যৌন নিপীড়ন ও পথরোধ করে টানা হেঁচড়া করে আঘাত প্রদানসহ হুমকি ধামকির অভিযোগ আনেন একই এলাকার নয়ন বেপারী (৩০) ও ফয়সাল (৪৫) গংদের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই সঙ্গীয় ফোর্সসহ তদন্তে যান এসআই সামাদ। আর এরপরই এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে পুলিশ সদস্যের সাথে।

এদিকে হসপিটালে ভর্তি জ্ঞান হারানো চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন রনি বলেন, ‘মানুষ আইনের কাছে আসে বিচার চাইতে। আমরা যাব কোথায়? কতটা অসহায় অবস্থায় আমাদের পুলিশের! পুলিশ স্বাভাবিক আইনী কার্যক্রম পর্যন্ত করতে পারছে না! আমরা এর বিচার চাই।’

বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের একাংশ এসআই সামাদের কাছে লাঞ্ছিতের ঘটনায় ভুল হয়েছে জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের ঊর্দ্ধতনের কয়েকজন দফায় দফায় থানায় আলোচনা করছেন।

এদিকে, পুলিশ সদস্যদের শারিরীক অবস্থা প্রসঙ্গে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ সার্ভিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নার্স ফেরদৌসি জাহান লাভলী বলেন, ‘আমরা রোগীদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছি। চিকিৎসকরাও নিয়মিত তাদেরকে চেকআপসহ মনিটরিং করছেন।’

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সৈয়দ আহমেদ কাজল বলেন, ‘টেনশন ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে ওসি সাহেব দুর্বল হয়ে পড়েন। তার ডায়বেটিস সমস্যাও রয়েছে। মাথা ঘুরে থানায় পড়ে যাওয়ার পর স্ট্রোকের রোগী হিসেবেই তাকে দ্রুত হাসপাতালে আনা হয়। আমরা এখন পর্যন্ত উনাকে শারিরীক পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে মতলব উত্তরে বিএনপির জন সমাবেশ

শিক্ষার্থীদের থানা ঘেরাও, জ্ঞান হারালেন ওসি

আপডেট সময় : ১২:০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে থানায় জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গেলেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি।

Model Hospital

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক মামলার তদন্ত নিয়ে। এদিন দুপুরে মামলাটির তদন্তে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীর দ্বারা লাঞ্চিত হন চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই আব্দুর সামাদ।

শহরের কোরালিয়ায় সেই ঘটনা কোনমতে নিয়ন্ত্রণে আনেন পুলিশ সদস্যরা। পরে মিছিলসহ থানায় প্রবেশ করে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী। থানায় ঢুকে এসআই সামাদকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

সে সময় থানায় উপস্থিত অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) এই প্রতিবেদককে এসব কথা জানান ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের ওয়াট স্টপ সেন্টারে ভর্তি থাকা আহত এসআই সামাদ।

তিনি বলেন, ‘ওরা আমার সন্তানের চেয়েও বয়সে ছোট। আমিতো থানায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে গিয়েছিলাম। উভয় পক্ষ যেন এলাকায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি না করে, সেজন্যই ঊর্দ্ধতনের নির্দেশে দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলাম। আমার সাথে কেনো ওরা এমন আচরণ করলো বুঝতে পারছি না। এই ন্যাক্কারজনক অপমান আমি সইবো কীভাবে?’
চাঁদপুর সদর থানার পুলিশ সূত্র জানায়, কোড়ালিয়ার পাটোয়ারী স্কুল সংলগ্নের হারুন ছৈয়ালের স্ত্রী মাছুয়া বেগম (৪২) নামে এক নারী যৌন নিপীড়ন ও পথরোধ করে টানা হেঁচড়া করে আঘাত প্রদানসহ হুমকি ধামকির অভিযোগ আনেন একই এলাকার নয়ন বেপারী (৩০) ও ফয়সাল (৪৫) গংদের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই সঙ্গীয় ফোর্সসহ তদন্তে যান এসআই সামাদ। আর এরপরই এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে পুলিশ সদস্যের সাথে।

এদিকে হসপিটালে ভর্তি জ্ঞান হারানো চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন রনি বলেন, ‘মানুষ আইনের কাছে আসে বিচার চাইতে। আমরা যাব কোথায়? কতটা অসহায় অবস্থায় আমাদের পুলিশের! পুলিশ স্বাভাবিক আইনী কার্যক্রম পর্যন্ত করতে পারছে না! আমরা এর বিচার চাই।’

বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের একাংশ এসআই সামাদের কাছে লাঞ্ছিতের ঘটনায় ভুল হয়েছে জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের ঊর্দ্ধতনের কয়েকজন দফায় দফায় থানায় আলোচনা করছেন।

এদিকে, পুলিশ সদস্যদের শারিরীক অবস্থা প্রসঙ্গে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ সার্ভিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র নার্স ফেরদৌসি জাহান লাভলী বলেন, ‘আমরা রোগীদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছি। চিকিৎসকরাও নিয়মিত তাদেরকে চেকআপসহ মনিটরিং করছেন।’

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সৈয়দ আহমেদ কাজল বলেন, ‘টেনশন ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে ওসি সাহেব দুর্বল হয়ে পড়েন। তার ডায়বেটিস সমস্যাও রয়েছে। মাথা ঘুরে থানায় পড়ে যাওয়ার পর স্ট্রোকের রোগী হিসেবেই তাকে দ্রুত হাসপাতালে আনা হয়। আমরা এখন পর্যন্ত উনাকে শারিরীক পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’