ঢাকা ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শাহরাস্তি চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা'র

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির বহু অভিযোগ

►ভর্তিতে অনিয়ম ও রসিদবিহীন টাকা উত্তোলন
► শিক্ষকদের বেতন নিয়ে কারচুপির অভিযোগ
► অর্থ আত্মসাৎ

Model Hospital

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার ঠাকুরবাজারে অবস্থিত শাহরাস্তি চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বেলাল আহমেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ২০১৫ সালে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে একের পর এক মনগড়া সিদ্ধান্ত, অদূরদর্শিতা ও নানা অনিয়মের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বিতর্কিত।

প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী জানান, উপজেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত হলেও এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ মোঃ বেলাল আহমেদ যেন শেষ কথা। নিয়োগ ও ভর্তি বাণিজ্য, রসিদ ছাড়াই অর্থ আদায়, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইনক্রিমেন্ট কর্তনসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিভাবক ও শিক্ষক লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলা প্রশাসকের কাছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্তের নির্দেশনা দেন।

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো হলোঃ
মোঃ বেলাল আহমেদ কোনো মোভমেন্ট রেজিস্টার মেইন্টেন করেন না। নিজের মনগড়া ভাবে মাদরাসায় আসা যাওয়া করেন। মাদ্রাসার ক্লাস তদারকি এবং পড়ালেখার বিষয়ে কোন খোজ খবরও নেন না। কাজে এদিক-সেদিক গিয়ে মাদরাসার কাজে গেছেন বলে চালিয়ে দেন। তিনি কোন ক্লাসে কখনই কোন ঘন্টা নেন না (পড়ান না)।  শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরণ করেন, তাদেরকে অনেক সময় অহেতুক হয়রানি করেন এবং অমার্জিত ভাষা ব্যবহার করেন। বিভিন্ন সময় শিক্ষক মিটিংয়ে কোন শিক্ষক তার মতের বিপরীতে কোন কথা বললে তাকে মিটিং শেষে নিজের রুমে একলা ডেকে নিয়ে ধমক দেন এবং তাকে মারাত্মকভাবে হয়রানি করেন। শিক্ষকদের বেতন স্কেল পরিবর্তন ও বিভিন্ন সরকারী সুবিধা দিতে সরকারি বিধি লংঘন করেন এবং এ সকল কাজের জন্য শিক্ষকদের নিকট থেকে জোর পূর্বক অর্থ আদায় করেন। কেউ দিতে না চাইলে তাকে নানাভাবে হয়রানি করেন। মাদরাসায় জেডিসি, দাখিল ও আলিম পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপনের কথা বলে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে এবং মাদরাসার আয় থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের নিকট থেকে তাদের নাম, পদবী, ব্যাংক একাউন্ট ইত্যাদি সংশোধনের কথা বলে দুইবারে প্রায় লক্ষাধিক টাকা নিয়েছেন, কিন্তু এ সংক্রান্ত কোন কাজই তিনি করেন নি। মিনিস্ট্রি অডিটের সময় শিক্ষকদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাদের নিকট থেকে ৩০০০০০ (তিন লক্ষ) হাতিয়ে নিয়েছেন। মাদরাসার টাকায় কিনা বিভিন্ন আসবাবপত্র নিজের বাসায় নিয়ে যান। সকল আয় রশিদের মাধ্যমে গ্রহণ করেন না। আয়ের টাকা সঠিকভাবে ব্যাংকে জমা না দিয়ে হাতে রেখে খরচ করেন। মিথ্যা ভাউচার বানিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন। একই খরচের জন্য কয়েকবার ভাউচার তৈরি করেন অপ্রদর্শিত আয় থেকে ব্যয় করে প্রদর্শিত আয় থেকে ভাউচার দিয়ে টাকা নেন। ২০২০ সালের আলিম পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপের টাকার ও ব্যবহৃত অংশ শিক্ষার্থীদেরকে ফেরত দেয়ার জন্য মাদরাসার বোর্ড মাদরাসার একাউন্টে উক্ত টাকা প্রেরণ করে। শিক্ষার্থীরা উক্ত টাকার জন্য অধ্যক্ষের নিকট গেলে তিনি শিক্ষার্থীদেরকে প্রাপ্য টাকা না দিয়ে তাদের সাথে অসদাচরণ করে তাদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছেন।

অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে মাদ্রাসায় গিয়ে পাওয়া না গেলে তাকে ফোন দেওয়া হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনার পর ফোনটি বন্ধ করে দেন।

লিখিত অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ ইয়াসির আরাফাত বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে।

ট্যাগস :

হাজীগঞ্জ থানার নতুন ওসি মহিউদ্দিন ফারুক

শাহরাস্তি চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা'র

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির বহু অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৯:১৬:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

►ভর্তিতে অনিয়ম ও রসিদবিহীন টাকা উত্তোলন
► শিক্ষকদের বেতন নিয়ে কারচুপির অভিযোগ
► অর্থ আত্মসাৎ

Model Hospital

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার ঠাকুরবাজারে অবস্থিত শাহরাস্তি চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বেলাল আহমেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ২০১৫ সালে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে একের পর এক মনগড়া সিদ্ধান্ত, অদূরদর্শিতা ও নানা অনিয়মের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বিতর্কিত।

প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী জানান, উপজেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত হলেও এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ মোঃ বেলাল আহমেদ যেন শেষ কথা। নিয়োগ ও ভর্তি বাণিজ্য, রসিদ ছাড়াই অর্থ আদায়, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইনক্রিমেন্ট কর্তনসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিভাবক ও শিক্ষক লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলা প্রশাসকের কাছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্তের নির্দেশনা দেন।

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো হলোঃ
মোঃ বেলাল আহমেদ কোনো মোভমেন্ট রেজিস্টার মেইন্টেন করেন না। নিজের মনগড়া ভাবে মাদরাসায় আসা যাওয়া করেন। মাদ্রাসার ক্লাস তদারকি এবং পড়ালেখার বিষয়ে কোন খোজ খবরও নেন না। কাজে এদিক-সেদিক গিয়ে মাদরাসার কাজে গেছেন বলে চালিয়ে দেন। তিনি কোন ক্লাসে কখনই কোন ঘন্টা নেন না (পড়ান না)।  শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে খারাপ আচরণ করেন, তাদেরকে অনেক সময় অহেতুক হয়রানি করেন এবং অমার্জিত ভাষা ব্যবহার করেন। বিভিন্ন সময় শিক্ষক মিটিংয়ে কোন শিক্ষক তার মতের বিপরীতে কোন কথা বললে তাকে মিটিং শেষে নিজের রুমে একলা ডেকে নিয়ে ধমক দেন এবং তাকে মারাত্মকভাবে হয়রানি করেন। শিক্ষকদের বেতন স্কেল পরিবর্তন ও বিভিন্ন সরকারী সুবিধা দিতে সরকারি বিধি লংঘন করেন এবং এ সকল কাজের জন্য শিক্ষকদের নিকট থেকে জোর পূর্বক অর্থ আদায় করেন। কেউ দিতে না চাইলে তাকে নানাভাবে হয়রানি করেন। মাদরাসায় জেডিসি, দাখিল ও আলিম পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপনের কথা বলে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে এবং মাদরাসার আয় থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের নিকট থেকে তাদের নাম, পদবী, ব্যাংক একাউন্ট ইত্যাদি সংশোধনের কথা বলে দুইবারে প্রায় লক্ষাধিক টাকা নিয়েছেন, কিন্তু এ সংক্রান্ত কোন কাজই তিনি করেন নি। মিনিস্ট্রি অডিটের সময় শিক্ষকদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাদের নিকট থেকে ৩০০০০০ (তিন লক্ষ) হাতিয়ে নিয়েছেন। মাদরাসার টাকায় কিনা বিভিন্ন আসবাবপত্র নিজের বাসায় নিয়ে যান। সকল আয় রশিদের মাধ্যমে গ্রহণ করেন না। আয়ের টাকা সঠিকভাবে ব্যাংকে জমা না দিয়ে হাতে রেখে খরচ করেন। মিথ্যা ভাউচার বানিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন। একই খরচের জন্য কয়েকবার ভাউচার তৈরি করেন অপ্রদর্শিত আয় থেকে ব্যয় করে প্রদর্শিত আয় থেকে ভাউচার দিয়ে টাকা নেন। ২০২০ সালের আলিম পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপের টাকার ও ব্যবহৃত অংশ শিক্ষার্থীদেরকে ফেরত দেয়ার জন্য মাদরাসার বোর্ড মাদরাসার একাউন্টে উক্ত টাকা প্রেরণ করে। শিক্ষার্থীরা উক্ত টাকার জন্য অধ্যক্ষের নিকট গেলে তিনি শিক্ষার্থীদেরকে প্রাপ্য টাকা না দিয়ে তাদের সাথে অসদাচরণ করে তাদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছেন।

অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে মাদ্রাসায় গিয়ে পাওয়া না গেলে তাকে ফোন দেওয়া হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনার পর ফোনটি বন্ধ করে দেন।

লিখিত অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ ইয়াসির আরাফাত বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। বিষয়টি তদন্ত চলছে।