ঢাকা ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিয়েভ অস্ত্র না ফেললে যুদ্ধ বন্ধ হবে না: পুতিন

ইউক্রেন অস্ত্র না ফেললে দেশটিতে চলমান রুশ অভিযান বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন পুতিন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর কাছে এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন তিনি।

Model Hospital

রোববার ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধ, যুদ্ধবিরতি ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশের সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে টেলিফোন করেছিলেন এরদোয়ান ও ম্যাক্রোঁ। তাদের উভয়কেই পুতিন বলেন, ‘কিয়েভ যদি না চায় (অস্ত্র না ফেলে) সেক্ষেত্রে অভিযান বন্ধ হবে না।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন থেকে দেওয়া এক বিবৃতির বরাত দিয়ে রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অভিযান একাদশতম দিনে পৌঁছেছে। দেশটির ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে রুশ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ হচ্ছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর। তবে বর্তমানে সংঘাত সবচেয়ে তীব্র হয়ে উঠেছে উপকূলীয় শহর ইউক্রেনের সমুদ্র-তীরবর্তী দুই শহর মারিউপোল ও ভোলনোভখায়।

এই দু’শহরের বেসামরিক লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে শনিবার ৫ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল বেলারুশে বৈঠকে বসা রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিরা; কিন্তু দুই শহরে লড়াইরত রুশ ও ইউক্রেন বাহিনী কোনো যুদ্ধবিরতি মানেনি।

এরদোগান ও ম্যাক্রোঁর সঙ্গে রোববারের ফোনালাপে এজন্য কিয়েভকে দায়ী করেছেন পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, কিয়েভ যদি সত্যিই যুদ্ধ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়— তাহলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপে বসতে প্রস্তুত আছেন তিনি।

কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করে ইউক্রেন। তারপর থেকেই এই ব্যাপারটিকে ঘিরে দ্বন্দ্ব শুরু হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে।

এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।

কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।

অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রোববার একাদশতম দিনে পৌঁছেছে এই অভিযান। প্রাণ বাঁচাতে ইতোমধ্যে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্শিতী রাষ্ট্র পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ ইউক্রেনীয়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ দিনের সামরিক অভিযানে ইউক্রেনে সাড়ে ৩ শ’রও বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশুও।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় ছাত্রীসহ প্রধান শিক্ষক আটক

কিয়েভ অস্ত্র না ফেললে যুদ্ধ বন্ধ হবে না: পুতিন

আপডেট সময় : ০৫:৫১:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মার্চ ২০২২

ইউক্রেন অস্ত্র না ফেললে দেশটিতে চলমান রুশ অভিযান বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন পুতিন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর কাছে এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন তিনি।

Model Hospital

রোববার ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধ, যুদ্ধবিরতি ও কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশের সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে টেলিফোন করেছিলেন এরদোয়ান ও ম্যাক্রোঁ। তাদের উভয়কেই পুতিন বলেন, ‘কিয়েভ যদি না চায় (অস্ত্র না ফেলে) সেক্ষেত্রে অভিযান বন্ধ হবে না।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন থেকে দেওয়া এক বিবৃতির বরাত দিয়ে রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অভিযান একাদশতম দিনে পৌঁছেছে। দেশটির ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে রুশ বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ হচ্ছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর। তবে বর্তমানে সংঘাত সবচেয়ে তীব্র হয়ে উঠেছে উপকূলীয় শহর ইউক্রেনের সমুদ্র-তীরবর্তী দুই শহর মারিউপোল ও ভোলনোভখায়।

এই দু’শহরের বেসামরিক লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে শনিবার ৫ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল বেলারুশে বৈঠকে বসা রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিরা; কিন্তু দুই শহরে লড়াইরত রুশ ও ইউক্রেন বাহিনী কোনো যুদ্ধবিরতি মানেনি।

এরদোগান ও ম্যাক্রোঁর সঙ্গে রোববারের ফোনালাপে এজন্য কিয়েভকে দায়ী করেছেন পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, কিয়েভ যদি সত্যিই যুদ্ধ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়— তাহলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপে বসতে প্রস্তুত আছেন তিনি।

কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করে ইউক্রেন। তারপর থেকেই এই ব্যাপারটিকে ঘিরে দ্বন্দ্ব শুরু হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে।

এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।

কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।

অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রোববার একাদশতম দিনে পৌঁছেছে এই অভিযান। প্রাণ বাঁচাতে ইতোমধ্যে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্শিতী রাষ্ট্র পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১০ লাখ ইউক্রেনীয়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ দিনের সামরিক অভিযানে ইউক্রেনে সাড়ে ৩ শ’রও বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে আছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশুও।