নিজস্ব প্রতিনিধি : চাঁদপুরে বহু বছর যাবত রেলওয়ের শত-শত একর জায়গা দখল করে বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করে যাচ্ছে এবং দিনে ও রাতে নির্মিত স্থাপনা বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যক্তিরা বিক্রি করে হাতবদল করে লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাচ্ছে।
চাঁদপুরে রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ন জায়গা নিয়ে এখন চলছে হরিলুট। শহরের প্রাণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত স্থানগুলোর মধ্যে শহরের মিশন রোড হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ন স্থান। এ মিশন রোডে অবস্থিত রেলওয়ের রেলক্রসিংয়ের পাশে গড়ে উঠেছে, শাহী জামে মসজিদ নামের একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের কমিটি এখানে মসজিদ নির্মান করায় ধর্মপ্রান মুসলমানরা নামাজ পড়ছেন প্রতিদিন। বর্তমানে শাহী মসজিদের পাশে চাঁদপুর পৌরসভা মেয়রের নাম বাঙিয়ে পাকা ও ছাদ দিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। রেলওয়ের এ সম্পত্তি দেখার লোক সরকারিভাবে থাকলেও দেখা যায়-চাঁদপুুরের এ সম্পত্তি দেখার যেন কেহ নেই।
তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ ও খবর নিয়ে জানগেছে, মসজিদ নির্মাণকারীরা এ মসজিদ নির্মাণ করতে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা বা কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে কোন প্রকার অনুমতি বা অনুমোদন নেয়নি। যেখানে ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী কোন ব্যাক্তি মালিকানা সম্পত্তিতে মসজিদ নির্মান হলে সে জায়গা সমজিদকে ওয়াকফ্ করে দিতে হয়। অথচ দেখা যাচ্ছে মসজিদ নির্মাণে ধর্মীয় বিধান থাকলেও সরকারি জায়গায় বিশেষ করে রেলওয়ের জায়গায় যে কেউ নিজেদের বা এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে নিজেদের ইচ্ছামত মসজিদ নির্মাণ করছেন।
রেলওয়ের নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানাগেছে, চাঁদপুরে শুধু শাহী জামে মসজিদই নয়, বিগত বছরগুলোতে পুরো চাঁদপুর শহরে রেলওয়ের জায়গায় বিভিন্নস্থানে অসংখ্য মসজিদ বিনা অনুমতিতে ও কোন প্রকার অনুমোদন (লীজ ছাড়া) ছাড়াই নির্মাণ হয়েছে।
সরেজমিন চাঁদপুর শহরের শাহী মসজিদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মসজিদের পাশে বিগত বছরগুলোতে বহুস্থাপনা নির্মাণ করে সেখানে ভাড়া দিয়ে মাসিক ভাড়া উত্তোলন করছে কমিটির দায়িত্বরতা। তবে সেখান থেকে সরকার বা বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি টাকাও রাজস্ব পাচ্ছে না।
বর্তমানে দেখা যায়, শহরের মিশননেরাডস্থ শাহী মসজিদের সামনে ও পাশে প্রচুর স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এমনকি মসজিদের সামনে একটি বাজার মিলে প্রতিদিন সকাল ও বিকালে। সেখানে অনেকে লাখ-লাখ টাকার পুজি বিনিয়োগ করে হাজার হাজার টাকা লাভবান হচ্ছেন। তবে সরকারকে কোন প্রকার রাজস্ব নাদিয়ে তাদের ব্যবসা করা বা মসজিদ কমিটিকে মাসিক ভাড়া দেয়ার প্রবণতা কতটুকু সঠিক তানিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে স্থানীয় মহলে।
মসজিদ কমিটির নাম ভাঙিয়ে নির্মান করা দোকানগুলোর ব্যবসায়ীরা ওইসব ব্যক্তিদেরকে মাসে-মাসে ৫ থেকে ১৫হাজার টাকা দিয়ে যাচ্ছে বলে জানান। বর্তমানে শাহী জামে সমজিদের পাশে একটি বিশাল স্থাপনা গড়ে উঠেছে। যেটি দৈর্ঘ্যে হবে প্রায় ৪০ফুট ও প্রস্থ প্রায় ১৫ফুট। সে অবৈধ দোকানটিতে গড়ে উঠেছে একটি ফার্মেসী। যার নাম দেওয়া হয়েছে, একতা ফার্মেসী। এ একতা ফার্মেসিটি ৩ ব্যাক্তি তাদের নামে স্ট্যাাম্পের মাধ্যমে ভাড়া নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা হচ্ছে-আকতার হোসেন, ওহিদুর রহমান খান উৎপল ও শাহ আকতার হোসেন। তারা ৪ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে এবং মাসিক ১৫ হাজার টাকা ভাড়া নিয়েছেন বলে জানান।
বর্তমানে অবৈধভাবে নির্মিত হওয়া একতা ফার্মেসীর পাশে পূনরায় আবারও একটি অবৈধভাবে ১৮ফুট দৈর্ঘ্য ও ১১ফুট প্রস্থের একটি আরসিসি পিলারের মাধ্যমে পাকা ছাদ নির্মাণ স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে দ্রুত গতিতে। এ নির্মান কাজটি করছেন, রাজমিস্ত্রি মো: সিরাজুল ইসলাম বেপারী, মো: ইদ্রিস দর্জি ও শ্রমিক মো: হাসিম পাটওয়ারী। তাদেরকে তদারকি করছেন বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি মো: শাহজাহান ভুঁইয়া।
এ বিষয়ে শাহজাহান ভুঁইয়া জানান, মসজিদের স্বার্থে জনগণের প্রয়োজনে এ স্থাপনা নির্মান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পৌর মেয়র জানেন। তিনি এ কাজ করার ব্যাপারে অর্থদিয়ে সহায়তা করছেন।
তিনি আরো বলেন, রেলওয়ে জায়গায় হচ্ছে, তাতে সমস্যা কোথায়। জনগণের স্বার্থে মসজিদের প্রয়োজনে করা হচ্ছে। এ নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি করার প্রয়োজন নাই।