ঢাকা ০৪:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৮ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মতলব উত্তর সুলতানাবাদ ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আহত ৬

মতলব উত্তর ব্যুরো : মতলব উত্তর উপজেলার সুলতানাবাদ ইউনিয়নে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ৬ জন গুরুতর আহত হন। মঙ্গলবার সকালে আমুয়াকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় নৌকার সমর্থকদের সাথে ঘোড়া ও চশমা প্রতিকের সমর্থকদের মধ্যে দাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আহতদের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

আহতরা হলেন, আমুয়াকান্দা গ্রামের মৃত জুলমাদ মোল্লার ছেলে মোহন মোল্লা (৪৫), মোহন মোল্লার স্ত্রী রুমা বেগম (৪৭), মৃত. দিদার বক্স প্রধানের ছেলে নৌকার চীফ এজেন্ট নূরুল ইসলাম (৬০), একই গ্রামের মজলু বেপারি, সোলায়মান প্রধান, মৃত. আলীমুদ্দিন জমাদারের ছেলে শাহজাহান জমাদার (৫৫), সোলায়মান জমাদার (৫০)। তবে তাদের মধ্যে শাহজাহান জমাদার চশমা প্রতিকের কর্মী বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তাদেরকে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে নূরল ইসলাম, মোহন মোল্লা ও রুমা বেগমের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জাবেদ ইকবাল তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে প্রেরন করেন।

ঘটনা সূত্রে যানা যায়, তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে মতলব উত্তর উপজেলার সুলতানাবাদ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। ২৮ নভেম্বর নির্বাচন শেষে ভোট গণনা শেষে বেসরকারি ভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুবকর সিদ্দিক খোকন ঘোড়া প্রতিক জয়ী হয়। আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী হাবিবা ইসলাম সিফাত, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজিম উদ্দীন সোহেল আনারস ও জসিম উদ্দিন জমাদার চশমা প্রতিক পরাজিত হয়েছে। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ ঘটনার সূত্রপাত।

প্রত্যক্ষদর্শী, আমুয়াকানৃদা গ্রামের নূরুল ইসলামের স্ত্রী নূরজাহান বেগম জানান, ৩০ নভেম্বর সকাল ৮টার সময় আমার স্বামী বাজার করতে বাড়ির বাইর হলে বেরীবাধে উপস্থিত হলে ঘোড়া প্রতিকের কর্মী ও চশমা প্রতিকের কর্মীরা মিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে ও এলোপাতাড়ি মারধর করে। আমার স্বামীর ডাক চিৎকার শুনে এগিয়ে কিছু লোকজন এগিয়ে আসলে তাদেরও মারধর করে।

আরো পড়ুন  ফরিদগঞ্জ সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নে নৌকা প্রতিকের গনসংযোগ

রুমা বেগম বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী হাবিবা ইসলাম সিফাতের নির্বাচন করায় ঘোড়া প্রতিকের আবুবকর সিদ্দিক খোকন, চশমা প্রতিকের জসিম উদ্দিন জমাদারের হুকুমে এ হামলা করা হয়েছে। জমি জমাদারের ছোট ভাই জুয়েল জমাদার হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে।

এ বিষয়ে পরাজিত আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতিকের হাবিবা ইসলাম সিফাত বলেন, আবুবকর সিদ্দিক খোকন ও জসিম উদ্দিন জমাদারের কর্মীরা আমার নৌকা প্রতিকের সর্মথকদের উপর হামলা করেছে। আমি এই সন্ত্রাসী হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী জানাই।

এ বিষয়ে সুলতানাাবাদ ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুবকর সিদ্দিক খোকন জানান, আমার বাড়ি থেকে হাবিবা ইসলাম সিফাতের বাড়ি ৩ কিলোমিটার দূরে। সংঘর্ষের ভয়ে ওই গ্রামে আমি প্রচার প্রচারনা করতেও যাইনি। আমি ফোনে খবর পেয়েছি চশমা প্রতিকের জসিম জমাদার ও নৌকা প্রতিকের হাবিবা ইসলাম সিফাতের কর্মীদের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আমার কোন হাত নেই। আমার কোন কর্মীও এই ঘটনার সাথে জড়িত নেই।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) সুদীপ্ত রায় বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে। সুলতানাবাদ ইউনিয়নে ঘটনাটি ঘটেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে আমাদের ধারণা বিষয়টি পারিবারিক অথবা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটতে পারে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে ২টি ঔষধ দোকানিকে ২৫ হাজার টাকা দন্ড

error: Content is protected !!

মতলব উত্তর সুলতানাবাদ ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আহত ৬

আপডেট সময় : ০৩:১৩:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১

মতলব উত্তর ব্যুরো : মতলব উত্তর উপজেলার সুলতানাবাদ ইউনিয়নে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ৬ জন গুরুতর আহত হন। মঙ্গলবার সকালে আমুয়াকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় নৌকার সমর্থকদের সাথে ঘোড়া ও চশমা প্রতিকের সমর্থকদের মধ্যে দাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আহতদের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

আহতরা হলেন, আমুয়াকান্দা গ্রামের মৃত জুলমাদ মোল্লার ছেলে মোহন মোল্লা (৪৫), মোহন মোল্লার স্ত্রী রুমা বেগম (৪৭), মৃত. দিদার বক্স প্রধানের ছেলে নৌকার চীফ এজেন্ট নূরুল ইসলাম (৬০), একই গ্রামের মজলু বেপারি, সোলায়মান প্রধান, মৃত. আলীমুদ্দিন জমাদারের ছেলে শাহজাহান জমাদার (৫৫), সোলায়মান জমাদার (৫০)। তবে তাদের মধ্যে শাহজাহান জমাদার চশমা প্রতিকের কর্মী বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তাদেরকে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে নূরল ইসলাম, মোহন মোল্লা ও রুমা বেগমের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জাবেদ ইকবাল তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে প্রেরন করেন।

ঘটনা সূত্রে যানা যায়, তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে মতলব উত্তর উপজেলার সুলতানাবাদ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। ২৮ নভেম্বর নির্বাচন শেষে ভোট গণনা শেষে বেসরকারি ভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুবকর সিদ্দিক খোকন ঘোড়া প্রতিক জয়ী হয়। আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী হাবিবা ইসলাম সিফাত, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাজিম উদ্দীন সোহেল আনারস ও জসিম উদ্দিন জমাদার চশমা প্রতিক পরাজিত হয়েছে। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ ঘটনার সূত্রপাত।

প্রত্যক্ষদর্শী, আমুয়াকানৃদা গ্রামের নূরুল ইসলামের স্ত্রী নূরজাহান বেগম জানান, ৩০ নভেম্বর সকাল ৮টার সময় আমার স্বামী বাজার করতে বাড়ির বাইর হলে বেরীবাধে উপস্থিত হলে ঘোড়া প্রতিকের কর্মী ও চশমা প্রতিকের কর্মীরা মিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে ও এলোপাতাড়ি মারধর করে। আমার স্বামীর ডাক চিৎকার শুনে এগিয়ে কিছু লোকজন এগিয়ে আসলে তাদেরও মারধর করে।

আরো পড়ুন  মৈশাদী ইউনিয়নে জেলা পরিষদের সদস্য প্রার্থী ইকবাল হোসেন পলাশের মতবিনিময়

রুমা বেগম বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী হাবিবা ইসলাম সিফাতের নির্বাচন করায় ঘোড়া প্রতিকের আবুবকর সিদ্দিক খোকন, চশমা প্রতিকের জসিম উদ্দিন জমাদারের হুকুমে এ হামলা করা হয়েছে। জমি জমাদারের ছোট ভাই জুয়েল জমাদার হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে।

এ বিষয়ে পরাজিত আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতিকের হাবিবা ইসলাম সিফাত বলেন, আবুবকর সিদ্দিক খোকন ও জসিম উদ্দিন জমাদারের কর্মীরা আমার নৌকা প্রতিকের সর্মথকদের উপর হামলা করেছে। আমি এই সন্ত্রাসী হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী জানাই।

এ বিষয়ে সুলতানাাবাদ ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুবকর সিদ্দিক খোকন জানান, আমার বাড়ি থেকে হাবিবা ইসলাম সিফাতের বাড়ি ৩ কিলোমিটার দূরে। সংঘর্ষের ভয়ে ওই গ্রামে আমি প্রচার প্রচারনা করতেও যাইনি। আমি ফোনে খবর পেয়েছি চশমা প্রতিকের জসিম জমাদার ও নৌকা প্রতিকের হাবিবা ইসলাম সিফাতের কর্মীদের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আমার কোন হাত নেই। আমার কোন কর্মীও এই ঘটনার সাথে জড়িত নেই।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) সুদীপ্ত রায় বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে। সুলতানাবাদ ইউনিয়নে ঘটনাটি ঘটেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে আমাদের ধারণা বিষয়টি পারিবারিক অথবা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটতে পারে।