প্রিয় চাঁদপুর রিপোর্ট : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় চাঁদপুরের মতলব উত্তরে বিজয়ী মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়ি-ঘরে হামলা ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মতলব উত্তরের ১৩নং ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড নাগপাড়া প্রধানীয়া বাড়িতে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
এতে নারী-পুরুষসহ অন্তত ১০জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রীকৃষ্ণ শিং এর স্ত্রী স্বপ্না শিং এর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন- নাগপাড়া প্রধানীয়া বাড়ির মৃত মন্টু দাসের মেয়ে ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রীকৃষ্ণ শিং এর স্ত্রী স্বপ্না শিং (৪৫), সুরেশ প্রধানের ছেলে রঞ্জিত প্রধান (৩০), বলরামের ছেলে সুশীল (৪২), সুশীলের ছেলে দীপক প্রধান (২২), শ্রীধাম প্রধানের ছেলে পিন্টু প্রধান (২০), নিখিল প্রধানের ছেলে সুমন প্রধান, মুকুন্দ প্রধানের ছেলে জিতেন্দ্র প্রধান (৩৫) সহ কয়েকজন। বাকি আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতরা জানান, গত ২৮ নভেম্বর মতলব উত্তর উপজেলার ১৩ নং ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পরাজিত মেম্বার প্রাথী ফুটবল প্রতীকের সুখরঞ্জন সরকার সুকেনের কর্মী-সমর্থকরা মোড়গ প্রতীকের বিজয়ী মেম্বার প্রার্থী রঞ্জিত প্রধানীয়ার সমর্থকদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়েছে। তারা জানান, একই ওয়ার্ডের হিসেবে তারা নির্বাচনে কাজ করেন। এতে সুখরঞ্জন সরকার সুকেন পরাজিত হওয়ায় বিজয়ী প্রার্থী রঞ্জিত প্রধানীয়ার কর্মী-সমর্থকদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।
নির্বাচনের পরের দিন ২৯ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ১০টায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অমৃত লাল নাগ বিজয়ী সমর্থক নিখিল প্রধানকে ফোন করে বলে তোরা কখন লাগতে আসবি আমাকে জানা। যতলোক পারস নিয়ে রেডি থাক। আমরা প্রস্তুত আছি বলে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে। এক পর্যায়ে অমৃত লাল নাগের ছোট ছেলে গোবিন্দ নাগ তার বাবার হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে তার বাবার ব্যবহারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তারপর আবারও অমৃত লাল নাগ ফোন করে নিখিলকে রাস্তা (সরকারি) ব্যবহার না করতে হুমকি দেয়। ওই ঘটনায় নিখিল ভয় পেয়ে পূজা পরিষদের সভাপতি ভক্ত প্রধান, ইউপি চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন মুকুল, সাবেক চেয়ারম্যান সাজেদুল হাসান বাবু বাতেনকে অমৃত লালের হুমকির বিষয়টি অবগত করেন। ওই হুমকির জের ধরেই উভয়ের মাঝে উত্তেজনা তৈরি হতে থাকে।
বিকেল ৪টায় নাগ বাড়িতে পরাজিত প্রার্থী সুখরঞ্জন সরকার সুকেন, সুরেশ সরকার ওরপে কালা ও ইন্দ্রজিত সরকার অমৃত লাল নাগের বাড়িতে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে উঠে। ওই সময় পরাজিত মেম্বারপ্রাথী সুখ রঞ্জন সরকার সুখেন বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথাবার্তা বললে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
এসময় মনোহর চন্দ্র সরকারের ছেলে অরুণ সরকার (৪৫), সতীশ চন্দ্র সূত্রধরের ছেলে সঞ্জিত চন্দ্র সরকার সূত্রধর (৩৫), পবিত্র নাগের ছেলে শ্রীবাস নাগ (১৭), গৌর প্রসাদ নাগ (২১), মৃত শচীন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে অশোক চন্দ্র বিশ্বাস (৫০), শচীন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে দীপক বিশ্বাস (৫৫) এবং মনোহর সরকারের ছেলে শান্তি সরকার (৪৯), অমৃত নাগের ছেলে গোবিন্দ নাগ, সঞ্জীব নাগ সহ আরো কয়েকজন এক প্রকার গায়ে পড়ে তাদের কয়েক জনের ওপর হামলা চালান। মুহূর্তের মধ্যেই কয়েকটি বাড়ি ঘরে ও কর্মীসমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদেরকে রক্তাক্ত জখম করে গুরুতর আহত করেন। খবর পেয়ে বিজয়ী মেম্বার প্রার্থী রঞ্জিত প্রধানিয়া স্থানীয় গণ্যমান্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণের চেস্টা করে। এবং উত্তেজিতদের শান্ত করে যার যার বাড়িতে চলে যেতে অনুরোধ করেন।
পরবর্তীতে ট্রিপল নাইনে কল করলে মতলব উত্তর থানার পুলিশ সহ স্থানীয় নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন মুকুল ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।