চাঁদপুরে ব্লাস্টরোগের প্রাদুর্ভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে ইরি ধানের শীষ। এ রোগের আক্রমণে গোড়া থেকে কালো হয়ে হেক্টরে হেক্টরে জমিতে ধানের শীষ মরে যাচ্ছে। এতে ব্যাপক ফলন হ্রাসের আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
গত এক সপ্তাহ ধরে হঠাৎ করেই চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন. বাগাদী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার ধানক্ষেতে এই রোগটি দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত জমি থেকে ধীরে ধীরে বিস্তারলাভ করে আশপাশের জমিগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ছে।
উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের পাইকদি গ্রামের কৃষক আলমগীর খান বলেন, আমার ধানে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করেছে। অনেক ওষুধ ছিটিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।
ভড়ঙ্গারচর গ্রামের কৃষক জহির বেপারী, মোজাম্মেল হক গাজী, ইছহাক গাজীসহ একাধিক কৃষক বলেন, ইরি বোর আবাদ শুরুর দিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তেমন কোন রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়নি। কৃষকরা ভাল ফলনের আশা করেছিল।
কিন্তু ধানে পাক ধরার সাথে সাথে হঠাৎ করেই ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ ছিটিয়ে কোনও কাজ হয়নি। এতে ভয়াবহ ফলন বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে কৃষকেরা আশঙ্কা করছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলতি বছর ইরি বোরো ধান চাষের জন্য ৬ হাজার ৫শত হেক্টর জমি নির্ধারন করা হয়েছে। এ ব্লাস্টার রোগের কারনে যে পরিমান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তা এ রোগের কারনে বাস্তবায়ন সম্ভাব হবেনা। কৃষকদের এ রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
তবে অভিযোগ উঠেছে, শাহমাহমুদপুরের দায়িত্বরত উপসকহারী কৃষি অফিসারকে খোঁজ করে ও পাওয়া যায়নি। কৃষকের এ র্দুদিনে পাশে থেকে বিভিন্ন বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের স্বপ্নের ধান রোগ বালাই থেকে রক্ষা করার জন্য কৃষি কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে ও কৃষকরা প্রশ্ন তুলেছে।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোরসাল আহমেদ বলেন, হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তন, পরাগায়নের সময় বৃষ্টি কিংবা ঝড় হওয়ার কারণে কিছু জমিতে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে আমরা আক্রান্ত জমিগুলো পরিদর্শন করে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। আমাকে শাহমাহমদুপুরে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকেই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বারদের সাথে কথা হয়েছে, বিভিন্ন সমস্যা জানানোর জন্য তাদেরকে বলেছি। ব্লাস্টার রোগের জন্য স্কাউট ঘোষনা করা হয়েছে, সচেতনতা মূলক প্রচারনা চালাচ্ছি, কৃষকদের মাঝে লিপলেট বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ইফতেকার নাঈম বলেন, ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ ঠেকাতে কৃষকদের বৃদ্ধি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ব্লাস্টার রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কৃষকদের মাঝে লিপলেট বিতরণ করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণের নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষিকদের পরামর্শ দিচ্ছি। কৃষি অফিসার ব্লাস্টার রোগ থেকে কৃষকদের ইরি বোর ধান রক্ষা করার তারা তাদের মতো করে কাজ করার চেষ্টা করেন।