ঢাকা ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ১, আহত ১

  • এস. এম ইকবাল
  • আপডেট সময় : ০৮:২৯:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
  • 88
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মাদ্রাসার ছাদ থেকে বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে  মো. ইমন হোসেন (১২) নামের এক শিশু মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ইউসুফ আব্দুল্লা (১৩) নামে আরেক শিশু।
উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের পূর্ব ষোলদানা গ্রামের দারুস্সুন্নাত মোহাম্মাদিয়া আয়েশা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ( ২৮ জুলাই) রবিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. ইমন হোসেন একই ইউনিয়নের হামছাপুর গ্রামের মো. ফজল হক তৈয়বের ছেলে। আহত ইউসুফ আব্দুল্লা ষোলদানা গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে। দু’জনই ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
আহত ইউসুফ আব্দুল্লা বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক আশরাফ আলী বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার  ধৌত করে ছাদের রৌদ্রে শুকাতে দেয়। সন্ধ্যায় তাদেরকে ছাদ থেকে বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার আনতে পাঠায় অপর শিক্ষক মাহাদী। এসময় ছাদের পাশে একটি কদম গাছে ফুল দেখতে পেয়ে ছাদে থাকা রড দিয়ে ইমন হোসেন কদম ফুল সংগ্রহ করার সময় মাদ্রাসার ছাদের পাশে থাকা বিদ্যুতের তারের সাথে বিদ্যুতায়িত হয়ে পুরো শরীর পুড়ে যায় তার। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ইমনকে বাঁচানোর চেষ্টা করে বিদ্যুতায়িত হয়ে আহত হয় ইউসুফ আব্দুল্লা। ঘটনা দেখে ডাক চিৎকার দেয় ছাদে থাকা অপর শিক্ষার্থী রহিম হোসেন। পরে স্থানীয়রা গিয়ে মৃত অবস্থায় মো. ইমন হোসেন ও আহত অবস্থায় ইউসুফ আব্দুল্লাকে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাদ্রাসাটি করার সময় দেয়াল ঘেঁষে বিদ্যুতের তার রাখার বিষয়ে প্রতিবাদ করা হলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোন কর্ণপাত করেন নি। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বিদ্যুতের কাভার তারের ব্যবস্থা করেন নি।
নিহত মো. ইমন হোসেনের পিতা মো. ফজল হক তৈয়ব ও মা মর্জিনা বেগম বলেন, আমার ৪ সন্তানের মধ্যে মো. ইমন হোসেন একমাত্র পুত্র সন্তান।  ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছি সে হাফেজ হয়ে আমাদের কবর জিয়ারত করবে জানাজা পড়াবে, কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আমার একমাত্র ছেলেকে হারাতে হলো।
ইউসুফ আব্দুল্লার পিতা মনির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,  ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছি হাফেজ হবে। সেই ছেলেকে দিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক তাঁর ব্যক্তিগত কাজ করানোর সময় বিদ্যুতায়িত হয়েছে এবং মাদ্রাসার দেয়ালের সাথে কাভার বিহীন বিদ্যুতের তাঁর। ঝুকিপূর্ণ জেনেও এভাবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এভাবে ছাত্রদের জীবনের ঝুঁকিতে ফেলছে বিষয়টি  মেনে নেয়ার মতো নয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে মাদ্রাসাটি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। মাদ্রাসার প্রদান শিক্ষক আশরাফ আলীকে পাওয়া যায়নি। মুঠো ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি শিকার করে ওই মাদ্রাসার সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে পরবর্তিতে আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখবো। শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনারপর স্থানীয়দের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাদ্রাসাটি আপতত বন্ধ রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ হোসেন বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মৃত শিক্ষার্থীর পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁর মরদেহ ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করা করা হয়েছে। পরবর্তি তদন্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ট্যাগস :

১০ দিনেও উদঘাটন হয়নি চাঁদপুরে আবাসিক হোটেলে রুবেলের মৃত্যুর রহস্য

ফরিদগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ১, আহত ১

আপডেট সময় : ০৮:২৯:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মাদ্রাসার ছাদ থেকে বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে  মো. ইমন হোসেন (১২) নামের এক শিশু মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ইউসুফ আব্দুল্লা (১৩) নামে আরেক শিশু।
উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের পূর্ব ষোলদানা গ্রামের দারুস্সুন্নাত মোহাম্মাদিয়া আয়েশা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ( ২৮ জুলাই) রবিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. ইমন হোসেন একই ইউনিয়নের হামছাপুর গ্রামের মো. ফজল হক তৈয়বের ছেলে। আহত ইউসুফ আব্দুল্লা ষোলদানা গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে। দু’জনই ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
আহত ইউসুফ আব্দুল্লা বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক আশরাফ আলী বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার  ধৌত করে ছাদের রৌদ্রে শুকাতে দেয়। সন্ধ্যায় তাদেরকে ছাদ থেকে বিছানার চাদর ও বালিশের কাভার আনতে পাঠায় অপর শিক্ষক মাহাদী। এসময় ছাদের পাশে একটি কদম গাছে ফুল দেখতে পেয়ে ছাদে থাকা রড দিয়ে ইমন হোসেন কদম ফুল সংগ্রহ করার সময় মাদ্রাসার ছাদের পাশে থাকা বিদ্যুতের তারের সাথে বিদ্যুতায়িত হয়ে পুরো শরীর পুড়ে যায় তার। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ইমনকে বাঁচানোর চেষ্টা করে বিদ্যুতায়িত হয়ে আহত হয় ইউসুফ আব্দুল্লা। ঘটনা দেখে ডাক চিৎকার দেয় ছাদে থাকা অপর শিক্ষার্থী রহিম হোসেন। পরে স্থানীয়রা গিয়ে মৃত অবস্থায় মো. ইমন হোসেন ও আহত অবস্থায় ইউসুফ আব্দুল্লাকে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাদ্রাসাটি করার সময় দেয়াল ঘেঁষে বিদ্যুতের তার রাখার বিষয়ে প্রতিবাদ করা হলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোন কর্ণপাত করেন নি। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বিদ্যুতের কাভার তারের ব্যবস্থা করেন নি।
নিহত মো. ইমন হোসেনের পিতা মো. ফজল হক তৈয়ব ও মা মর্জিনা বেগম বলেন, আমার ৪ সন্তানের মধ্যে মো. ইমন হোসেন একমাত্র পুত্র সন্তান।  ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছি সে হাফেজ হয়ে আমাদের কবর জিয়ারত করবে জানাজা পড়াবে, কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আমার একমাত্র ছেলেকে হারাতে হলো।
ইউসুফ আব্দুল্লার পিতা মনির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,  ছেলেকে মাদ্রাসায় দিয়েছি হাফেজ হবে। সেই ছেলেকে দিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক তাঁর ব্যক্তিগত কাজ করানোর সময় বিদ্যুতায়িত হয়েছে এবং মাদ্রাসার দেয়ালের সাথে কাভার বিহীন বিদ্যুতের তাঁর। ঝুকিপূর্ণ জেনেও এভাবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এভাবে ছাত্রদের জীবনের ঝুঁকিতে ফেলছে বিষয়টি  মেনে নেয়ার মতো নয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে মাদ্রাসাটি তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। মাদ্রাসার প্রদান শিক্ষক আশরাফ আলীকে পাওয়া যায়নি। মুঠো ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি শিকার করে ওই মাদ্রাসার সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে পরবর্তিতে আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখবো। শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনারপর স্থানীয়দের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাদ্রাসাটি আপতত বন্ধ রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ হোসেন বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মৃত শিক্ষার্থীর পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁর মরদেহ ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করা করা হয়েছে। পরবর্তি তদন্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।