বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, হত্যাসহ একাধিক মামলায় পুলিশের একজন ডিআইজি ও চারজন পুলিশ সুপারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রংপুর, রাজশাহী ও নীলফামারী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের পর তাদেরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে আনা হয়।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন, রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান ও আবুল হাসনাত এবং নীলফামারীর ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাসহ একাধিক মামলায় অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে রাজশাহী জেলা পুলিশ একাডেমির সহায়তায় শুক্রবার রাতে রাজশাহী সারদা একাডেমিতে সংযুক্ত থাকা গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, বিসিএস ২৭ ব্যাচের আবুল হাসনাত বাগেরহাটের পুলিশ সুপার থাকাকালীন ২০২৪ সালের নির্বাচন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। আর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান কুমিল্লা ও সিলেটে এসপি থাকাকালীন নির্বাচন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শক্তি প্রয়োগ করেন। এর আগে সিটিটিসিতে পুলিশ সুপার থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে জঙ্গি নাটক সাজানোর একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
অন্যদিকে ২৫ ব্যাচের কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। নির্বাচন ও পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শক্তি প্রয়োগ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
আটক ডিআইজি মোল্লা নজরুল ইসলাম গাজীপুর মেট্রোপলিটনের সাবেক কমিশনার ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। একটা সময় তার বিরুদ্ধে খুন-গুমসহ অনৈতিকভাবে শক্তি প্রয়োগের অনেক অভিযোগ উঠেছিল।
মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে সংযুক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীর সালেহীন ইমনকে আটক করেছে ডিবি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল তাকে আটক করে। পরে তাকে ঢাকায় নেয়া হয়।
রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) সারোয়ার জাহান বলেন, গতরাতে ঢাকা থেকে ডিবির টিম এসে এসপি তানভীর সালেহীন ইমনকে নিয়ে গেছে। কেন, কী অভিযোগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা জানা নেই। তারা সহযোগিতা চেয়েছিল, আমাদের ডিবি পুলিশের একটি দল সহযোগিতা করেছে।
এসপি তানভীর সালেহীনের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইকবাল কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি ২৮তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা। কর্মজীবনে তিনি কুমিল্লা জেলা পুলিশের সেরা সার্কেল অফিসার হিসেবে পুরস্কৃত হন।