নিজস্ব প্রতিবেদক : স্থানীয় সরকারের অধিনে ইউনিয়ন পর্যায়ে জনগনের ভোটে ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হোন একজন জনপ্রতিনিধি। তার কাছে ইউনিয়ন বাসীর নানা অভিযোগ, অনুযোগ, চাওয়া, পাওয়ার প্রত্যাশা থাকে। জনগনের ভোটের মূল্যায়ন ধরে রাখতে পরিষদের একজন চেয়ারম্যান তাদের কথা শুনার আগ্রহে বসে থাকেন। কিন্তু ব্যতিক্রম এক জনপ্রতিনিধি হচ্ছেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ১১ নং হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান এ কে এম মজিবুর রহমানকে।
২০১৯ সালের শেষ দিকে হঠাৎকরে ঢাকা থেকে এলাকায় এসে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ধড্ডা গ্রামের বাসিন্ধা এ কে এম মজিবুর রহমান। তার পর তাকে আর এলাকায় দেখা যায়নি। হঠাৎকরে আবার এলাকায় এসে ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সেই সময়ে নিজ দলের নেতাকর্মীরা নির্বাচনে শ্রম ঘাম দিলেও তাদের সাথে কোন প্রকার মূল্যায়ন কিংবা সৌজন্য আচরন না দেখিয়ে তড়িঘড়ি করে পরিষদের দায়িত্ববার গ্রহণ করেন। নতুন পরিষদের এক সপ্তাহের মাথায় প্যানেল চেয়ারম্যান ঘোষণা দিয়ে চেয়ারম্যান এ কে এম মজিবুর রহমান এলাকা থেকে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মায়ায় ঢাকা পাড়ি দেন। মাঝে মধ্যে রাষ্ট্রীয় কিংবা উপজেলা আইন শৃঙ্খলা মিটিং এ যোগ দিয়ে পূণরায় ঢাকা চলে যান।
এদিকে ইউনিয়ন পরিষদে মানুষ জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সনদ, নানা আচার বিচারের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষায় প্রহর গুনে আসছেন। চেয়ারম্যান সময়মত না থাকায় এসব কাজের ভোগান্তিতে সাধারন সেবা গৃহীতারা নাভিশ্বাস হয়ে পড়েছে।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২০ এপ্রিল সরেজমিন তদন্তে গিয়ে কথা হয় ইউনিয়নের ভুক্তভোগী কয়েকজন বাসিন্ধার সাথে। এরা ইউনিয়নের কাঠালি গ্রামের ফরহাদ, মুরাদ মুন্সী, ফারুক হোসেন, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের রাসেল, আমেনা বেগম এবং পাতানিশ গ্রামের চাঁন মিয়ার সাথে। তাদের অভিযোগ গত কয়েকদিন ধরে আমরা চেয়ারম্যানের খোঁজে পরিষদে এসে না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাই। কিন্তু খবর পেয়ে আজকে পরিষদে আসলে চেয়ারম্যান মানুষের চাপে দ্রুত পরিষদ ত্যাগ করে চলে যান। আর কবে চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ পাবো তা সঠিক বলতে পারছেনা পরিষদের সচিবও।
এদিকে স্থানীয় খাঁন বাড়ীর নাম প্রকাশে অনিশ্চুক কয়েকজন বলেন, গত কিছুদিন পূর্বে ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তার কাজে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দের মধ্যে মাত্র ২ হাজার ইট বসানো হয়েছে। বাকী ইট চেয়ারম্যান কোথায় লাগিয়েছেন এমন প্রশ্ন সবার মুখে।
এ বিষয়ে হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ইয়াকুব আলী বলেন, আমার চাকুরীর মেয়াদ আছে আর মাত্র ৮ মাস। শেষ সময়ে মানুষের এতো চাপ একা শামাল দিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। চেয়ারম্যানকে সময়মত মানুষ না পেয়ে আমার সাথে এক প্রকার খারাপ ব্যবহার করে।
হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান এ কে এম মজিবুর রহমান বলেন, আমি সপ্তাহে ৫ দিন থাকার চেষ্টা করি, যারা এসব বলে তারা সুবিবাদী। মাত্র চেয়ারে বসে পরিষদের কাজ পেয়েছি, তা ততটুকু হয়েছে উপজেলা প্রৌকশলী জানেন। সচিব কি বললো না বলিলো তা দেখার বিষয় নয়।