এদিকে ইলিশের আমদানি বাড়ায় কর্মব্যস্ততা বেড়েছে মৎস্য ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের। বর্তমানে প্রতিদিন কমপক্ষে দুই থেকে তিন হাজার মণ ইলিশ আমদানি হচ্ছে। ফলে ঝিমিয়ে পড়া বড়স্টেশন মাছঘাট যেন হাঁকডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে।
বুধবার ৩ আগষ্ট চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত ইলিশের পাইকারি বাজার। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঘাটে ইলিশের ব্যাপক সরবরাহ। প্রতিটি আড়তের সামনে ইলিশের বড় বড় স্তূপ। পাশেই বরফ ভেঙে প্যাকেটজাত করা হচ্ছে ইলিশ।
চাঁদপুর মাছঘাটে আসা বিক্রমপুর থেকে ক্রেতা রনি বলেন, চাঁদপুর মার্কেটে প্রথম এসেছি। এখানে এসে সত্যিই আমি মুগ্ধ হয়েছি। আমাদের সেখানে ইলিশের অনেক দাম আর এখানে অনেক কম। ওখানে এত বড় ইলিশের দেখা পাওয়া যায় না। যদিও পাওয়া যায়, তা সাধারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে। আমরা কিনতে পারি না। এখানে এত পরিমাণ ইলিশ, যা ভাষায় বলা যাবে না।
মিজানুর রহমান নামে আরেক ক্রেতা বলেন, মূলত চাঁদপুরের ইলিশের প্রতি আমাদের চাহিদা কিন্তু চাঁদপুরে ইলিশ না থাকায় এখন দক্ষিণাঞ্চল ও সাগর মোহনার ইলিশ দিয়েই সেই চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। কিছুদিন আগে ইলিশের অনেক দাম ছিল। ইলিশের আমদানি বাড়ায় দাম কিছুটা কমে এসেছে।
রাসেল নামে এক জেলে জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আমরা নদীতে নেমেছি। সাগরে টানা দুই-তিন দিন জাল ফেলে প্রচুর ইলিশ পেয়েছি। আমরা ৩০ থেকে ৩৫ মণ ইলিশ চাঁদপুর মাছঘাটে নিয়ে এসেছি। আগে ইলিশ অনেক কম ছিল কিন্তু এখন ইলিশ বেড়েছে। চাঁদপুর মাছঘাটে ইলিশের চাহিদা অনেক বেশি থাকায় সবাই চাঁদপুরে ইলিশ নিয়ে আসে।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির দুই বারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হাজী সবেবরাত সরকার বলেন, একটা সময় চাঁদপুরের পদ্মার ইলিশের সরগরম থাকত চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে চাঁদপুরে পদ্মা মেঘনা ইলিশের তেমন দেখা মিলছে না। এতে ইলিশের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তবে অন্যদিকে চাঁদপুরের ইলিশ না থাকলেও দক্ষিণাঞ্চল ও সাগর মোহনার প্রচুর ইলিশ ঘাটে আসছে। ইলিশের আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম অনেকটা কমে এসেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানের চাঁদপুর মাছঘাটে ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ৯০০ থেকে ৮০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম এক হাজার থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা। এ ছাড়া মাঝারি সাইজের ইলিশের মণ ২৬ থেকে ২৮ হাজার টাকা।