স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নে ১নং ওয়ার্ডে বিয়ের ১২ বছর পর যৌতুকের জন্য নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন গৃহবধূ পান্না বেগম। বিয়ের পর থেকেই মাদকাসক্ত স্বামী, আর শ্বাশুড়ির নির্যাতনের স্বীকার হয়ে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাসায় গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তার। গৃহবধূর উপর নির্যাতন আর মারধর এখন নিত্য দিনের।

জানা যায়, মৈশাদী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের আবুল শেখের ছেলে ৩৫ বছর বয়সী মোঃ সেলিম শেখ এর সাথে নুরুল্লাহপুর গ্রামের নুরু মোহাম্মদ গাজীর মেয়ে পান্না বেগমের সাথে ইসলামি সরিয়াহ মতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সেলিম শেখ ও তার মা শাহানারা বেগম পান্নার উপর কথায় কথায় শারীরিক নির্যাতন করে আসছেন। যৌতুকের জন্য বার বার চাপ দেয় সেলিম শেখের পরিবার। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে পান্নার পরিবার কয়েকবার টাকাও দেন। টাকা দেওয়ার পর কয়েক দিন ভাল থাকলেও ফের আবার শুরু করেন নির্যাতন।
পান্নার পরিবার অভিযোগ করে বলেন, সেলিম শেখ পান্নাকে বিয়ের পূর্বে স্বামীর বাড়ির পাশে আরেকটি বিয়ে করেন। ওই স্ত্রীও সেলিম শেখের অত্যাচারে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন বলেন তারা অভিযোগ করেন। সেই হত্যা মামলা এখনো চলমান রয়েছে বলে তারা জানান। তারা অভিযোগ করে বলেন, সেলিম শেখ পূর্বের বিয়ে সম্পূর্ণ গোপন রেখে পান্নাকে দেখতে গিয়ে তড়ি গড়ি বিয়ে করেন। সেলিম শেখ একজন মাদক সেবনকারী, মাদকাসক্ত হয়ে বিভিন্ন সময়ে কারনে অকারনে পান্নাকে মারধর করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে ২ সন্তান রয়েছে।
এ বিষয়ে মৈশাদীর বর্তমান চেয়ারম্যান, এবং সাবেক চেয়ারম্যান কয়েবার দেনদরবারও করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি, উল্টো পান্নার উপর নির্যাতনের পরিমাণ বেড়ে যায়। পান্না তার সন্তানদের কথা চিন্তা করে বাবুরহাট বিসিক শিল্প নগরীর গার্মেন্টসে চাকুরি নেই। আর সেখানেই ১৪নং ওয়ার্ডের রসুল মিজি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। সে ভাড়া বাসায় গিয়েও শান্তি মিলেনি এ হতভাগীর।

মঙ্গলবার পান্না গার্মেন্টস গেলে সেলিম শেখ পান্নার ভাড়া বাসায় ঢুকে মাদক সেবনের জন্য টাকা না পেয়ে বাসায় থাকা ফ্রিজ, রেক, ওয়ার্ড্রোপ, লেপ, তোষক, হান্ডি পাতিল ভাংচুর করেন। ওই সময় বাড়ির মালিক আসলে সাথে সাথেই সে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
নির্যাতিতা পান্নার মামা, আশিকাটির ওয়ার্ড মেম্বার সামছুল হক প্রধানীয়া জানান, বিয়ের পর থেকেই সেলিম, সেলিমের মা পান্নাকে বিভিন্ন ভাবে শারিরিক নির্যাতন করে আসছেন। মোটা অংকের যৌতুক দাবি করছেন। বিয়ের পর একদিনও পান্না সুখে কাটায়নি। সেলিম একজন চিহ্নিত মাদক সেবনকারী, প্রশাসনের কাছে তার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে মৈশাদী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনা সত্য, কয়েকবার আমারা এটা নিয়ে বসেছি, কিন্তু সেলিম আসলেই একটা অপরাধী, সে কোন ভাবেই সচেতন হয়নি, সে আগের স্ত্রী হত্যা মামলার আসামী।
এ বিষয়ে সেলিম শেখের বক্তব্য নেওয়ার জন্য গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।