ঢাকা ০২:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মতলব উত্তরে আমনের ভালো নিয়ে শঙ্কায় চাষীরা

মতলব উত্তরে আমন ধান কাটতে ব্যস্ত শ্রমিকরা।

মতলব উত্তর ব্যুরো : চলতি মৌসুমে মতলব উত্তরে আমনের ভালো ফলন নিয়ে শঙ্কায় চাষীরা। ধান রোপনের শুরুতেই দুই দফা অতিবৃষ্টিতে ধানের জমিতে পানি জট হয়। ধানের চারা একাধিকবার পোরণ করতে হয়েছে অনেক চাষীকে। মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে পানি নিষ্কাশন করতে না পারায় এবার আমনের বাম্পার ফলন না হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছে চাষীরা। এরপর ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় আমন চাষিরা। কিছু কিছু এলাকায় শ্রমিক সংকট থাকায় ধান কাটতে বিলম্ব হচ্ছে। এতে জমিতে পাকা ধান ঝরে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা।

Model Hospital

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠে আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। সোনালি ধান কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। কেউ কেউ কাটা ধান আঁটি বেঁধে মাথায় করে, কেউবা পরিবহনে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। গত ১ সপ্তাহে উপজেলায় ১০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে দৌলতখান উপজেলায় প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে। ২০২১-২০২২ অর্থ-বছরের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের সহায়তায় মতলব উত্তরে উপজেলায় ৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

গজরা ইউনিয়নের আমুয়াকান্দি গ্রামের কৃষক আক্তার হোসেন বলেন, নিয়মিত পরিচর্যা ও সময়মতো সার প্রয়োগের ফলে ফলন ভালো হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকট থাকায় জমি থেকে ধান কাটতে সময় বেশি লাগছে। ব্যয়ও বেড়েছে। যাঁরা হারভেস্টর মেশিন দিয়ে ধান কাটতে পারছেন, কম সময় ও খরচে ফলন ঘরে তুলতে পারছেন।

একই এলাকার কৃষক জাকির হোসেন বলেন, গত মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে আমনের ফলন ভালো হয়নি। এ বছর অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এবং পোকার আক্রমণ ও রোগ-বালাই কম হওয়ায় ফলন হয়েছে বেশি। যদি ধানের ভালো দাম পাওয়া যায়, লাভ হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহনাজ পারভীন জানান, সরকার যদি উন্নয়ন সহায়তা বৃদ্ধি করে এবং ভর্তুকি মূল্যে আরও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দেয়, চাষাবাদে কৃষকের খরচ কমে যাবে। এতে কৃষকেরা ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। চাষিরা কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে চাষা করায় ফলন ভালো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা স্থানীয় কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ ও নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা দিয়ে থাকেন। চলতি আমন মৌসুমে সরকার ভর্তুকির মাধ্যমে উপজেলায় কৃষকদের ৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর বরাদ্দ দিয়েছে। এতে অল্প খরচে ধান কাটা, মাড়াই এবং মাঠ থেকে ধান আনা সহজ হবে।

পর্যায়ক্রমে কৃষকেরা যান্ত্রিক নির্ভরশীল হলে, শ্রমিক সংকট কেটে যাবে এবং ফসল উৎপাদন বাড়বে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

‘আজিজের আলুপুরি’ খেতে এত ভিড় কেন?

মতলব উত্তরে আমনের ভালো নিয়ে শঙ্কায় চাষীরা

আপডেট সময় : ০৬:২৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

মতলব উত্তর ব্যুরো : চলতি মৌসুমে মতলব উত্তরে আমনের ভালো ফলন নিয়ে শঙ্কায় চাষীরা। ধান রোপনের শুরুতেই দুই দফা অতিবৃষ্টিতে ধানের জমিতে পানি জট হয়। ধানের চারা একাধিকবার পোরণ করতে হয়েছে অনেক চাষীকে। মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে পানি নিষ্কাশন করতে না পারায় এবার আমনের বাম্পার ফলন না হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছে চাষীরা। এরপর ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় আমন চাষিরা। কিছু কিছু এলাকায় শ্রমিক সংকট থাকায় ধান কাটতে বিলম্ব হচ্ছে। এতে জমিতে পাকা ধান ঝরে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা।

Model Hospital

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠে আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। সোনালি ধান কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। কেউ কেউ কাটা ধান আঁটি বেঁধে মাথায় করে, কেউবা পরিবহনে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। গত ১ সপ্তাহে উপজেলায় ১০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে দৌলতখান উপজেলায় প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। আমনের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে। ২০২১-২০২২ অর্থ-বছরের সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের সহায়তায় মতলব উত্তরে উপজেলায় ৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

গজরা ইউনিয়নের আমুয়াকান্দি গ্রামের কৃষক আক্তার হোসেন বলেন, নিয়মিত পরিচর্যা ও সময়মতো সার প্রয়োগের ফলে ফলন ভালো হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকট থাকায় জমি থেকে ধান কাটতে সময় বেশি লাগছে। ব্যয়ও বেড়েছে। যাঁরা হারভেস্টর মেশিন দিয়ে ধান কাটতে পারছেন, কম সময় ও খরচে ফলন ঘরে তুলতে পারছেন।

একই এলাকার কৃষক জাকির হোসেন বলেন, গত মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে আমনের ফলন ভালো হয়নি। এ বছর অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এবং পোকার আক্রমণ ও রোগ-বালাই কম হওয়ায় ফলন হয়েছে বেশি। যদি ধানের ভালো দাম পাওয়া যায়, লাভ হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহনাজ পারভীন জানান, সরকার যদি উন্নয়ন সহায়তা বৃদ্ধি করে এবং ভর্তুকি মূল্যে আরও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দেয়, চাষাবাদে কৃষকের খরচ কমে যাবে। এতে কৃষকেরা ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠবেন। চাষিরা কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে চাষা করায় ফলন ভালো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা স্থানীয় কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ ও নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা দিয়ে থাকেন। চলতি আমন মৌসুমে সরকার ভর্তুকির মাধ্যমে উপজেলায় কৃষকদের ৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর বরাদ্দ দিয়েছে। এতে অল্প খরচে ধান কাটা, মাড়াই এবং মাঠ থেকে ধান আনা সহজ হবে।

পর্যায়ক্রমে কৃষকেরা যান্ত্রিক নির্ভরশীল হলে, শ্রমিক সংকট কেটে যাবে এবং ফসল উৎপাদন বাড়বে।