ঢাকা ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘কাঁচা রাস্তা পাকা চাই, নইলে ট্রাক চলাচল বন্ধ চাই’ দাবীতে হাজীগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল

সাইফুল ইসলাম সিফাত : চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার বিলওয়াই-কোকাকলা ঘাট সড়কে ‘কাঁচা রাস্তা পাকা চাই, নইলে ট্রাক চলাচল বন্ধ চাই’ দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।

Model Hospital

বুধবার দুপুরে ওই সড়কে এলাকার নারী-পুরুষ বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়।

তারা জানান, এ সড়কে কোকাকলা ঘাটে পাঁচটি বালুমহাল, ব্রিকফিল্ড ও সিমেন্টের চারটি ডিলারশীপের প্রতিনিয়ত শতাধিক ট্রাক চলাচল করে।

সড়কটি ছোট-বড় গর্তে বেহাল দশায় দুর্ভোগের শেষ নেই। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয় এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
ওই সড়কটিতে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ উপজেলা সদরের সঙ্গে একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম সড়কটি। দীর্ঘদিন থেকে সড়কটি সংস্কার না করায় বড় বড় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। ফলে পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

বিশেষ করে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী এবং রোগি বহনে ভোগান্তিতে পড়েন বেশি। বর্তমানে চলাচলে সড়কটি অযোগ্য। প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ ট্রাক ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুঘর্টনা।

এখন সেখানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দের। ফলে সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বৃষ্টি হলে পানি জমে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। সংস্কারের অভাবে সড়কের পুরোটাই খানাখন্দে ভরে গেছে। ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে যানবাহন চলছে এঁকেবেঁকে।

গর্তের অনেক জায়গায় পানি জমে আছে। আবার অনেক জায়গায় গাড়ি চলার সময় আশপাশ ধুলাময় কোথাও কাদাময় হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় জুলফু, খোরশেদ, সাহেদ, ও তারেক বলেন, চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়ক থেকে কোকাকোলা ঘাট পর্যন্ত রাস্তা খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে। তারপরও প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এ রাস্তা দিয়েই বাধ্য হয়ে চলাচল করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব দ্রুত রাস্তাটির সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়ার।

গাড়িচালক হানিফ বলেন, যাত্রীদের গালমন্দ আর গাড়ির ক্ষতি মেনে ওই পথ দিয়েই গাড়ি চালাতাম। তবে মাস দুই ধরে এতটা খারাপ হয়েছে, ওই পথে আর পরিবহণের গাড়ি চলছে না।

গৃহিনী মিনারা বেগম বলেন আমাদের ছেলে-মেয়েদের ভালো কোন সম্বন্দ হয়না। সবাই বলে আপনাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না। আমরা এর একটা প্রতিকার চাই। হাজীগঞ্জ মডেল কলেজ শিক্ষার্থী আঞ্জুমা আক্তার মিশু বলেন, বৃষ্টি হলে পানি জমে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। এছাড়া বালুবহনকারী ট্রাক শ্রমিকরা আমাদের অশ্লীল কথা বলে। প্রতিনিয়ত শ্রমিকদের টিজের শিকার হয় আমরা।

এলাকাবাসী রহমত বলেন, আমি প্রতিবাদ করলে তারা আমাকেও মারধর করে। মেসার্স রাসেল ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী বিল্লাল হোসেনের ছেলে রাসেল বাজারের লোকজন ভাড়া করে এনে আমাকে তুলে নেয়ার চেস্টা করে।

মেসার্স রাসেল ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী বিল্লাল হোসেন ঘটনা অস্বিকার করে বলেন, বাগবিতন্ডা হয়েছে। কোন মারামারি হয়নি। আমরাও দেখছি এলাকাবাসী কতটা দুর্ভোগে রয়েছে। সকল ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্তে ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৫টি প্রতিষ্ঠানের আড়াই লাখ টাকার খোয়া ফেলা হচ্ছে রাস্তায়। আমরাদেরও দাবী সড়কটি পাঁকা করণের।

রাস্তার বেহাল দশা বছরের পর বছর এভাবেই পড়ে থাকলেও টনক নড়েনি পৌর কর্তৃপক্ষের। প্রতি বছর পৌরসভা লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় নিলেও রাস্তাটি পাকা করা হচ্ছে না। সড়কে ট্রাক চালক ও ব্যবসায়ীদের সাথে মাঝে মাঝে মারধরের ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা এক কিলোমিটারের চেয়েও কম রাস্তাটি পাকা করণের দাবী জানান।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় ছাত্রীসহ প্রধান শিক্ষক আটক

‘কাঁচা রাস্তা পাকা চাই, নইলে ট্রাক চলাচল বন্ধ চাই’ দাবীতে হাজীগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল

আপডেট সময় : ০১:৪১:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩

সাইফুল ইসলাম সিফাত : চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার বিলওয়াই-কোকাকলা ঘাট সড়কে ‘কাঁচা রাস্তা পাকা চাই, নইলে ট্রাক চলাচল বন্ধ চাই’ দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।

Model Hospital

বুধবার দুপুরে ওই সড়কে এলাকার নারী-পুরুষ বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়।

তারা জানান, এ সড়কে কোকাকলা ঘাটে পাঁচটি বালুমহাল, ব্রিকফিল্ড ও সিমেন্টের চারটি ডিলারশীপের প্রতিনিয়ত শতাধিক ট্রাক চলাচল করে।

সড়কটি ছোট-বড় গর্তে বেহাল দশায় দুর্ভোগের শেষ নেই। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয় এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
ওই সড়কটিতে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ উপজেলা সদরের সঙ্গে একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম সড়কটি। দীর্ঘদিন থেকে সড়কটি সংস্কার না করায় বড় বড় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। ফলে পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

বিশেষ করে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী এবং রোগি বহনে ভোগান্তিতে পড়েন বেশি। বর্তমানে চলাচলে সড়কটি অযোগ্য। প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ ট্রাক ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুঘর্টনা।

এখন সেখানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দের। ফলে সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বৃষ্টি হলে পানি জমে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। সংস্কারের অভাবে সড়কের পুরোটাই খানাখন্দে ভরে গেছে। ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে যানবাহন চলছে এঁকেবেঁকে।

গর্তের অনেক জায়গায় পানি জমে আছে। আবার অনেক জায়গায় গাড়ি চলার সময় আশপাশ ধুলাময় কোথাও কাদাময় হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় জুলফু, খোরশেদ, সাহেদ, ও তারেক বলেন, চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়ক থেকে কোকাকোলা ঘাট পর্যন্ত রাস্তা খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে। তারপরও প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এ রাস্তা দিয়েই বাধ্য হয়ে চলাচল করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব দ্রুত রাস্তাটির সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়ার।

গাড়িচালক হানিফ বলেন, যাত্রীদের গালমন্দ আর গাড়ির ক্ষতি মেনে ওই পথ দিয়েই গাড়ি চালাতাম। তবে মাস দুই ধরে এতটা খারাপ হয়েছে, ওই পথে আর পরিবহণের গাড়ি চলছে না।

গৃহিনী মিনারা বেগম বলেন আমাদের ছেলে-মেয়েদের ভালো কোন সম্বন্দ হয়না। সবাই বলে আপনাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না। আমরা এর একটা প্রতিকার চাই। হাজীগঞ্জ মডেল কলেজ শিক্ষার্থী আঞ্জুমা আক্তার মিশু বলেন, বৃষ্টি হলে পানি জমে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। এছাড়া বালুবহনকারী ট্রাক শ্রমিকরা আমাদের অশ্লীল কথা বলে। প্রতিনিয়ত শ্রমিকদের টিজের শিকার হয় আমরা।

এলাকাবাসী রহমত বলেন, আমি প্রতিবাদ করলে তারা আমাকেও মারধর করে। মেসার্স রাসেল ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী বিল্লাল হোসেনের ছেলে রাসেল বাজারের লোকজন ভাড়া করে এনে আমাকে তুলে নেয়ার চেস্টা করে।

মেসার্স রাসেল ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী বিল্লাল হোসেন ঘটনা অস্বিকার করে বলেন, বাগবিতন্ডা হয়েছে। কোন মারামারি হয়নি। আমরাও দেখছি এলাকাবাসী কতটা দুর্ভোগে রয়েছে। সকল ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্তে ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৫টি প্রতিষ্ঠানের আড়াই লাখ টাকার খোয়া ফেলা হচ্ছে রাস্তায়। আমরাদেরও দাবী সড়কটি পাঁকা করণের।

রাস্তার বেহাল দশা বছরের পর বছর এভাবেই পড়ে থাকলেও টনক নড়েনি পৌর কর্তৃপক্ষের। প্রতি বছর পৌরসভা লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় নিলেও রাস্তাটি পাকা করা হচ্ছে না। সড়কে ট্রাক চালক ও ব্যবসায়ীদের সাথে মাঝে মাঝে মারধরের ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা এক কিলোমিটারের চেয়েও কম রাস্তাটি পাকা করণের দাবী জানান।