রাজনৈতিক দলের নাম ব্যবহার করে রমরমা মাদকের ব্যবসা
স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর সদরের চান্দ্রা ইউনিয়নের ২ যুবক থেকে ১৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
২১ ফেব্রুয়ারী মধ্যরাতে চান্দ্রা চৌরাস্তা এলাকা থেকে যুবকদের গাঁজাসহ আটক করা হয়। আর এর পরপরই বিষয়টি সচেতন মহলে আবারো আলোচনার জন্ম দেয়।
এ বিষয়ে চান্দ্রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটওয়ারী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, কতিপয় লোক শহরের অদূরের এই চান্দ্রা ইউনিয়নটি মাদকের চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করে ইউনিয়নের বদনাম করে দিচ্ছে। আমি একজন শহীদ পরিবারের সন্তান হিসেবে চাই রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত হয়ে পুলিশ যেন ইউনিয়নকে মাদকের ছোবল থেকে মুক্ত করে। যেকোন প্রয়োজনে দল-মত-নির্বিশেষে সকলকে সাথে নিয়ে আমি মাদকের বিরুদ্ধে সব সময় পুলিশসহ প্রশাসনের সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকবো।
এদিকে পুলিশের এই মাদক বিরোধী অভিযানের পর পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় চান্দ্রা ইউনিয়ন যুবলীগের সাম্প্রতি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের বেশ কিছু ছবি গণমাধ্যমকর্মীদের দৃষ্টিগোচর হয়। এতে দেখা যাচ্ছে চান্দ্রা ইউনিয়ন যুবলীগের সেই ছবিগুলোতে সরব ওই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বালিয়ার মৃত শাহজাহান গাজীর ছেলে সালাম গাজী (৩৭)। আর তাতেই ইউনিয়ন যুবলীগের ছত্রছায়াকে পুঁজি করে অনুপ্রবেশকারীরা মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতাকর্মীদের।
এদিকে অভিযান প্রসঙ্গে চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই ইকবাল হোসেন, এএস আই হেলাল উদ্দিন, এ এস আই মোঃ শহিদুল্লাহ, এ এস আই শাখাওয়াত হোসেন জানান, চাঁদপুর সদর মডেল থানাধীন ১২নং চান্দ্রা ইউপিস্থ ৮নং দক্ষিন বালিয়া সাকিন চান্দ্রা চৌরাস্তা টু চান্দ্রা বাজারগামী সড়কে জসিম মিজির বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার উপর হতে মাদক ব্যবসায়ী ২ যুবককে ১৪ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় হচ্ছেন কুমিল্লা জেলা সদর দক্ষিণের জুলাই সুদর্নপুর গ্রামের সেকান্দার কাজীর বাড়ীর মৃত আঃ রহমানের ছেলে মোঃ ইয়াছিন (৪১) এবং চান্দ্রা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বালিয়ার মৃত শাহজাহান গাজীর ছেলে সালাম গাজী(৩৭)। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে মাদক মামলা দেয়া হয়েছে।
এদিকে চাঁদপুর সদর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক অ্যাড. হুমায়ন কবির সুমন, যুগ্ম আহ্বায়ক শিমুল হাসান সামনু ও তাজুল ইসলাম মিয়াজী দলের সাংগঠনিক অনুষ্ঠানগুলোতে পূর্বেই ইউনিয়ন যুবলীগের নেতাকর্মীদের নিশ্চিত করেছেন অনুপ্রেবশকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক হতে হবে এবং মাদকসহ সামাজিক ব্যাধিমূলক অপকর্মে কারো সংস্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদেরসহ তাদের আশ্রয় পশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স নীতি চলমান থাকবে।
চান্দ্রা ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি জানান, চান্দ্রা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়কের নেতৃত্বে অন্যান্য যুবলীগের সদস্যরা মাদকের রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে চান্দ্রা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য কালা চান গাজী ও ৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম গাঁজা পাচারকারী ও বিক্রির সাথে জড়িত রয়েছে। তাদের গডফাদার চান্দা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক ঢাকায় কাপড়ের ব্যবসা অন্তরালে বিভিন্ন জায়গায় মাদকের বড় চালান পাচার করে। পুলিশের হাতে গাঁজাসহ আটক হওয়া সালাম গাজী চান্দ্রা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক ও মাদক ব্যবসায়ী কালাচান গাজী এবং শাহ আলমের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা একই সাথে কক্সবাজার ঘুরতে গিয়ে মাদকের বড় বড় চালান এনে চান্দ্রা ইউনিয়নসহ অন্যান্য এলাকায় পাচার করেছে। চান্দ্রা ইউনিয়ন থেকে মাদক নির্মূল করতে হলে এ সকল নামধারী নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দলকে সুসংগঠিত করা প্রয়োজন।