ঢাকা ০৭:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেড় যুগ পর হাইমচরে ছাত্রলীগের কমিটি, কে হচ্ছেন সভাপতি ও সম্পাদক

মোঃ সাজ্জাদ হোসেন রনি : প্রায় দেড় যুগ পর গঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হাইমচর উপজেলা শাখা কমিটি। বিভিন্ন মত বিরোধ, গ্রুপিং ও কোন্দলের কারনে স্থবিরতা বিরাজ করা এ কমিটি ফিরে পেতে যাচ্ছে প্রাণ। তবে কে হচ্ছেন এ দীর্ঘ প্রতীক্ষিত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক তা দেখার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষমাণ হাইমচরের আওয়ামী পরিবারসহ ছাত্র সমাজ।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে হাইমচরে ছাত্রলীগের যে কমিটি হয় সেখানে সভাপতি ছিলেন মুজিবুর রহমান বেপারী, সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এস এম আল মামুন সুমন। এ কমিটি ৫ বছর স্থায়ী হয়। সে সময় ছাত্র রাজনীতি ছিল পরিচ্ছন্ন, গোছালো ও সুসংগঠিত।
এ কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে পুনরায় হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। তৎকালীন কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এস এম আল মামুন সুমন, সাধারণ সম্পাদক হন নজরুল ইসলাম রনি। এ কমিটি ঘোষণার পর থেকে নতুন সভাপতি ও সম্পাদকের নেতৃত্বে হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগ পুনরায় সংঘবদ্ধ ছাত্র রাজনীতি শুরু করেছে। দক্ষ নেতৃত্ব ও বিচক্ষণতা দিয়ে হাইমচরে ছাত্র রাজনীতির মডেল তৈরি করেছে।
২০১০ সালে কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার কথা থাকলেও এর ধারাবাহিকতা চলতে থাকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। জেলা ছাত্রলীগের রদবদল, আংশিক কমিটি ও কমিটির মতবিরোধের কারণে দীর্ঘ সময় কমিটি না হওয়ায় হাইমচরের ছাত্র রাজনীতি ঐতিহ্য হারাতে শুরু করে। চলমান কমিটির সভাপতি এস এম আল মামুন সুমন হাইমচর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। এরই মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে থাকে।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সম্ভাবনাময়, পরিচ্ছন্ন ও গোছালো সংগঠক জহিরুল ইসলাম ও সাদ্দাম হোসেন চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগে আসেন। জীবনবৃত্তান্ত জমা নেন উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক বর্তমান কর্মীদের কাছ থেকে। জেলা ছাত্রলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণার প্রেক্ষিতে স্থগিত হয় সে সময়ের সিদ্ধান্ত। পরিশেষে ২০২২ জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা ছাত্রলীগ হাইমচরে কর্মীসভা আহ্বান করেন। সেখানে উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক বর্তমান কর্মীদের পদ প্রত্যামীরা জীবনবৃত্তান্ত সহ উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানান জেলা ছাত্রলীগ।
গত ১১ জুন জমকালো আয়োজনে হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ডজনখানেক সিভি জমা পড়ে। এর মধ্য থেকে কে হচ্ছেন দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এ কমিটির ধারক ও বাহক, কে আসছে নেতৃত্বে তা দেখার জন্য অধির আগ্রহে হাইমচরের ছাত্রজনতা।
নতুন কমিটির নেতৃত্ব নিয়ে হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ বলেন- আমরা চাই, অধ্যয়নরত ও আওয়ামী পরিবারের ছাত্ররা-ই আসুক ছাত্রলীগের কমিটিতে। ছাত্ররা-ই দিবে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব। ছাত্রলীগের কমিটি হোক জামাত, শিবির, রাজাকার ও সন্ত্রাস মুক্ত। প্রকৃত আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান এবং যাদের রক্তে অন্য মতের চিন্তা চেতনা নেই তাদেরকেই দায়িত্ব দিয়ে উপজেলা কমিটি গঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বেপারী বলেন, দুঃসময়ে দলের জন্য যারা সর্বস্ব দিয়ে রাজনীতি করেছে, দলের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে তাদের উত্তরাধিকারী যারা রয়েছে তাদেরকে পদ পদবীতে এনে উপজেলা ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করার দাবি জানাচ্ছি। যারা দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত, যারা মুজিব আদর্শের একনিষ্ঠ সৈনিক, যাদের নেতৃত্বে ছাত্রজনতা সুসংগঠিত ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানরা এ কমিটির পদে আসুক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি এস এম আল মামুন সুমন বলেন- ছাত্রদের হাতেই দেওয়া হোক ছাত্রলীগের পদ পদবী। সেক্ষেত্রে অবশ্যই প্রবীণ আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের প্রাধান্য দিতে হবে। যাদের নেতৃত্বে উপজেলা ছাত্রলীগ সংবদ্ধ সেসকল পরিশ্রমী, পরিচ্ছন্ন ও গোছালো সংগঠকদের উপর উপজেলা ছাত্রলীগের আগামী দায়িত্ব অর্পণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
ইতিমধ্যে হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে যারা সভাপতি হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন তারা হলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক প্রচার সম্পাদক গাজী সুজন, কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন, আখন মোঃ রিয়াদ, রাজু পাটওয়ারী আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতালেব জমাদারের ছেলে মোজাম্মেল হোসেন হৃদয় জমাদার, জাহিদ কোতওয়াল, আরিফ হাওলাদার, সিয়াম হোসেন।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদগঞ্জে ডাকাতিয়া নদী ও বোরোপিট খাল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক

দেড় যুগ পর হাইমচরে ছাত্রলীগের কমিটি, কে হচ্ছেন সভাপতি ও সম্পাদক

আপডেট সময় : ১২:২৪:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুন ২০২২
মোঃ সাজ্জাদ হোসেন রনি : প্রায় দেড় যুগ পর গঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হাইমচর উপজেলা শাখা কমিটি। বিভিন্ন মত বিরোধ, গ্রুপিং ও কোন্দলের কারনে স্থবিরতা বিরাজ করা এ কমিটি ফিরে পেতে যাচ্ছে প্রাণ। তবে কে হচ্ছেন এ দীর্ঘ প্রতীক্ষিত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক তা দেখার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষমাণ হাইমচরের আওয়ামী পরিবারসহ ছাত্র সমাজ।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে হাইমচরে ছাত্রলীগের যে কমিটি হয় সেখানে সভাপতি ছিলেন মুজিবুর রহমান বেপারী, সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এস এম আল মামুন সুমন। এ কমিটি ৫ বছর স্থায়ী হয়। সে সময় ছাত্র রাজনীতি ছিল পরিচ্ছন্ন, গোছালো ও সুসংগঠিত।
এ কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে পুনরায় হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। তৎকালীন কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এস এম আল মামুন সুমন, সাধারণ সম্পাদক হন নজরুল ইসলাম রনি। এ কমিটি ঘোষণার পর থেকে নতুন সভাপতি ও সম্পাদকের নেতৃত্বে হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগ পুনরায় সংঘবদ্ধ ছাত্র রাজনীতি শুরু করেছে। দক্ষ নেতৃত্ব ও বিচক্ষণতা দিয়ে হাইমচরে ছাত্র রাজনীতির মডেল তৈরি করেছে।
২০১০ সালে কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার কথা থাকলেও এর ধারাবাহিকতা চলতে থাকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। জেলা ছাত্রলীগের রদবদল, আংশিক কমিটি ও কমিটির মতবিরোধের কারণে দীর্ঘ সময় কমিটি না হওয়ায় হাইমচরের ছাত্র রাজনীতি ঐতিহ্য হারাতে শুরু করে। চলমান কমিটির সভাপতি এস এম আল মামুন সুমন হাইমচর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। এরই মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে থাকে।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সম্ভাবনাময়, পরিচ্ছন্ন ও গোছালো সংগঠক জহিরুল ইসলাম ও সাদ্দাম হোসেন চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগে আসেন। জীবনবৃত্তান্ত জমা নেন উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক বর্তমান কর্মীদের কাছ থেকে। জেলা ছাত্রলীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণার প্রেক্ষিতে স্থগিত হয় সে সময়ের সিদ্ধান্ত। পরিশেষে ২০২২ জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা ছাত্রলীগ হাইমচরে কর্মীসভা আহ্বান করেন। সেখানে উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক বর্তমান কর্মীদের পদ প্রত্যামীরা জীবনবৃত্তান্ত সহ উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানান জেলা ছাত্রলীগ।
গত ১১ জুন জমকালো আয়োজনে হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ডজনখানেক সিভি জমা পড়ে। এর মধ্য থেকে কে হচ্ছেন দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এ কমিটির ধারক ও বাহক, কে আসছে নেতৃত্বে তা দেখার জন্য অধির আগ্রহে হাইমচরের ছাত্রজনতা।
নতুন কমিটির নেতৃত্ব নিয়ে হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ বলেন- আমরা চাই, অধ্যয়নরত ও আওয়ামী পরিবারের ছাত্ররা-ই আসুক ছাত্রলীগের কমিটিতে। ছাত্ররা-ই দিবে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব। ছাত্রলীগের কমিটি হোক জামাত, শিবির, রাজাকার ও সন্ত্রাস মুক্ত। প্রকৃত আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান এবং যাদের রক্তে অন্য মতের চিন্তা চেতনা নেই তাদেরকেই দায়িত্ব দিয়ে উপজেলা কমিটি গঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বেপারী বলেন, দুঃসময়ে দলের জন্য যারা সর্বস্ব দিয়ে রাজনীতি করেছে, দলের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে তাদের উত্তরাধিকারী যারা রয়েছে তাদেরকে পদ পদবীতে এনে উপজেলা ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করার দাবি জানাচ্ছি। যারা দীর্ঘদিন ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত, যারা মুজিব আদর্শের একনিষ্ঠ সৈনিক, যাদের নেতৃত্বে ছাত্রজনতা সুসংগঠিত ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানরা এ কমিটির পদে আসুক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি এস এম আল মামুন সুমন বলেন- ছাত্রদের হাতেই দেওয়া হোক ছাত্রলীগের পদ পদবী। সেক্ষেত্রে অবশ্যই প্রবীণ আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের প্রাধান্য দিতে হবে। যাদের নেতৃত্বে উপজেলা ছাত্রলীগ সংবদ্ধ সেসকল পরিশ্রমী, পরিচ্ছন্ন ও গোছালো সংগঠকদের উপর উপজেলা ছাত্রলীগের আগামী দায়িত্ব অর্পণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
ইতিমধ্যে হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে যারা সভাপতি হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন তারা হলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক প্রচার সম্পাদক গাজী সুজন, কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন, আখন মোঃ রিয়াদ, রাজু পাটওয়ারী আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতালেব জমাদারের ছেলে মোজাম্মেল হোসেন হৃদয় জমাদার, জাহিদ কোতওয়াল, আরিফ হাওলাদার, সিয়াম হোসেন।