মাসুদ হোসেন : চাঁদপুরের প্রায় প্রতি ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি-কাশি ও ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। সেই সাথে রয়েছে ডায়রিয়াও। তবে জ্বর নিয়ে ভীতি থাকলেও করোনা পরীক্ষা নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই মানুষের। গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড গরম এবং কোরবানে মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়ার কারণেই ডায়রিয়া রোগী বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। তবে করোনা মহামারিতে এই সময়ে যে কারণেই সর্দি-কাশি-জ্বর ও ডায়রিয়া দেখা দিক না কেন, অবহেলা না করে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
ভুক্তভোগীরা জানান, এবারের জ্বরে অন্যান্য বারের তুলনায় ভিন্ন লক্ষণ দেখা দিয়েছে। অন্যান্য সময়ে জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি ছিল। এবার ওইসব লক্ষণের পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তিরা শরীরে ব্যথা অনুভব করছেন। একবার শুরু হলে জ্বর থাকছে দীর্ঘ সময়। এসব রোগে সমানে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও। আক্রান্তদের সিংহভাগ গ্রামের পল্লী চিকিৎসকদের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেলার বেশিরভাগ বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত। তাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। এভাবে অনেকে সুস্থ হয়েও উঠছেন।
আবার কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়েও চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে করোনা টেস্ট করার ব্যাপারে আগ্রহ খুব কম মানুষেরই লক্ষ্য করা গেছে।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত চিকিৎসকরা জানান, তাদের কাছে আসা বেশিরভাগ রোগী জ্বর-সর্দি আর শরীর ব্যাথা নিয়ে আসছে। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও জ্বরের রোগী বেড়েছে। জ্বর, কাঁশি ও গলা ব্যথায় দুদিনের বেশি সময় ধরে যারা আক্রান্ত রয়েছেন তাদের দ্রুত করোনা স্যাম্পল দিতে পরামর্শ দেন তারা। অথচ প্রতিদিনই জেলায় করোনা শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছেই।
২৫০ শয্যা চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজেদা বেগম পলিন বলেন, সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন সরকারী বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার কিংবা প্রাইভেট চেম্বারে জ্বর-সর্দি-কাশি ও ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন উপসর্গে আক্রান্ত রোগী বেড়েছে।
এসব উপসর্গের করোনার সাথে মিল রয়েছে। কিন্তু এসব উপসর্গে আক্রান্ত অধিকাংশ মানুষ এখন নমুনা দিয়ে করোনা পরীক্ষা করাচ্ছে না। মূলত হোম কোয়ারেন্টাইন ও হোম আইসোলেশনে থাকার ভয়ে লোকজন এখন টেস্ট করাতে চাচ্ছে না। জ্বরসহ অন্যান্য উপসর্গে আক্রান্ত লোকজন করোনা টেস্ট করালে প্রকৃত তথ্য পাওয়া যেত। জানা যেত করোনায় আক্রান্তের প্রকৃত অবস্থা।