ঢাকা ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শাহরাস্তিতে ‘ম্যানেজ’ করে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি!

নোমান হোসেন আখন্দ : শাহরাস্তি উপজেলায় কৃষি জমির মাটি কাটার মহাউৎসব চলছে।

উপজেলার ২৫টি ইট ভাটার প্রধান কাচাঁমাল কৃষি জমির টপ সয়েল খ্যাত এ মাটি। এ সকল কৃষি জমির মাটি কেটে নেয়ায় উল্লেখযোগ্য হারে ধান উৎপাদনকৃত শত শত একর কৃষি জমি অনাবাদি পড়ে আছে। স্থানীয় ক্ষুদ্র কৃষক ও জমির মালিকরা জানায়, একশ্রেনীর মাটি খেকো দালালরা কৃষি মাঠের মাঝখানে ২/১ জন জমির মালিককে মোটা অংকের অর্থের লোভ দেখিয়ে জমির মাটি কিনে নেয়।

অত্যাধুনিক ভেকু মেশিনের সাহায্যে এ সকল কৃষি জমির মাটি কেটে নেয়ায় জমিগুলো বড় বড় গর্তে পরিনত হয়। মাটি খেকো দালালরা পাশ্ববর্তী জমির মালিকদের বলে, আপনারা এ জমির সমভাবে মাটি না কাটলে কৃষি জমির পানি থাকবেনা, ফসল উৎপাদন হবেনা।

সমানভাবে মাটি কাটার হিড়িকে একে একে সকল কৃষি জমির মালিক তাদের কৃষি জমির মাটি বিক্রি করে ফসলি কৃষি জমিগুলো ধ্বংস করছে। শাহরাস্তি উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় শতাধিক কৃষি মাঠে মাটি খেকো দালালরা ভেকু মেশিন, টাক্ট্রর ও আইসার গাড়ীর সাহায্যে কৃষি জমি নিধন অভিযান অব্যাহত রেখেছে। দেখার যেন কেউ নেই, মাঝে মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকলেও মাটি খেকো দালালদের কৃষি জমির মাটি কাটা নিধন কমছে না।

এদিকে কৃষি মাঠ থেকে মাটি নিয়ে রাস্তায় উঠার জন্য, এ সকল মাটি খেকো দালালরা গ্রামীন সড়ক কেটে ড্রাইব্রেশন করে গ্রামীন জনপদের রাস্তাগুলো ধ্বংস করছে। সরকারের কোটি কোটি টাকা বরাদ্দকৃত গ্রামীন জনপদের এ সড়কগুলো মাটি খেকো দালালদের অভয়ারন্য ধ্বংসে পতিত হয়। স্থানীয় জনসাধারন সড়কের বেহাল দশার কারনে জনদুভোর্গ পোহাতে হয়।

এ সকল কৃষি জমির মাটি পারাপারে মাটি খেকো দালালরা সড়কে নিষিদ্ধ ঘোষিত ট্রাক্টর ও যন্ত্রদানব আইসার ব্যবহারে সড়কে ধুলাবালি, ভযাবহ দুর্ঘটনা ও প্রানহানির মত ঘটনা ঘটছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, কৃষি জমির মাটি কেনা কয়েকজনের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, কৃষি জমিগুলো ধান ক্ষেতের জন্য উপযোগী না হয়ে, বেশী উচুঁ হয়ে যাওয়ায়, জমির মালিকগন আমাদের কাছে, জমির মাটি বিক্রি করছেন। পরবর্তী বৎসর ফসল করতে পারছেন, কিছু টাকা ও পেলেন।

আরো পড়ুন  মতলব দক্ষিণে মাদ্রাসা ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ

তাছাড়া সবকিছু ম্যানেজ করেই আমরা মাটি কাটছি, এখানে দোষের কিছু নেই। বেশ কয়েকজন ইটভাটার মালিকের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, কিছু মাটিওয়ালা মাটি বিক্রি করছে, আমরা কিনছি, তারা মাটি কোথায় থেকে আনলো আমাদের কিছু যায় আসেনা। ইটভাটার প্রধান কাঁচামাল মাটি, সরকার মাটি কাটা বন্ধ করলে ইটভাটা ও বন্ধ করে ফেলুক। প্রতিটি ইটভাটা বাৎসরিক বিপুল পরিমান অর্থ সরকারকে পরিশোধ করতে হচ্ছে। সচেতন মহল মনে করেন অচিরেই এ মাটি কাটার মহাউৎসব বন্ধ না হলে, খাদ্য সংকট, পরিবেশ বিপর্যয়, দরিদ্রর হার বৃদ্ধি সহ নানামুখী সংকটে পড়বে জনসাধারন।

এ বিষয়ে সরকারের আরো যুগোপযোগী উদ্যোগ স্থানীয় প্রশাসনের আরো গতিশীলতা জোরদারকরন সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

৪০ বছর বাইসাইকেলে চড়া শিক্ষক বিদায় নিলেন ফুলের গাড়িতে

error: Content is protected !!

শাহরাস্তিতে ‘ম্যানেজ’ করে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি!

আপডেট সময় : ০৫:১৭:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০২৩

নোমান হোসেন আখন্দ : শাহরাস্তি উপজেলায় কৃষি জমির মাটি কাটার মহাউৎসব চলছে।

উপজেলার ২৫টি ইট ভাটার প্রধান কাচাঁমাল কৃষি জমির টপ সয়েল খ্যাত এ মাটি। এ সকল কৃষি জমির মাটি কেটে নেয়ায় উল্লেখযোগ্য হারে ধান উৎপাদনকৃত শত শত একর কৃষি জমি অনাবাদি পড়ে আছে। স্থানীয় ক্ষুদ্র কৃষক ও জমির মালিকরা জানায়, একশ্রেনীর মাটি খেকো দালালরা কৃষি মাঠের মাঝখানে ২/১ জন জমির মালিককে মোটা অংকের অর্থের লোভ দেখিয়ে জমির মাটি কিনে নেয়।

অত্যাধুনিক ভেকু মেশিনের সাহায্যে এ সকল কৃষি জমির মাটি কেটে নেয়ায় জমিগুলো বড় বড় গর্তে পরিনত হয়। মাটি খেকো দালালরা পাশ্ববর্তী জমির মালিকদের বলে, আপনারা এ জমির সমভাবে মাটি না কাটলে কৃষি জমির পানি থাকবেনা, ফসল উৎপাদন হবেনা।

সমানভাবে মাটি কাটার হিড়িকে একে একে সকল কৃষি জমির মালিক তাদের কৃষি জমির মাটি বিক্রি করে ফসলি কৃষি জমিগুলো ধ্বংস করছে। শাহরাস্তি উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় শতাধিক কৃষি মাঠে মাটি খেকো দালালরা ভেকু মেশিন, টাক্ট্রর ও আইসার গাড়ীর সাহায্যে কৃষি জমি নিধন অভিযান অব্যাহত রেখেছে। দেখার যেন কেউ নেই, মাঝে মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকলেও মাটি খেকো দালালদের কৃষি জমির মাটি কাটা নিধন কমছে না।

এদিকে কৃষি মাঠ থেকে মাটি নিয়ে রাস্তায় উঠার জন্য, এ সকল মাটি খেকো দালালরা গ্রামীন সড়ক কেটে ড্রাইব্রেশন করে গ্রামীন জনপদের রাস্তাগুলো ধ্বংস করছে। সরকারের কোটি কোটি টাকা বরাদ্দকৃত গ্রামীন জনপদের এ সড়কগুলো মাটি খেকো দালালদের অভয়ারন্য ধ্বংসে পতিত হয়। স্থানীয় জনসাধারন সড়কের বেহাল দশার কারনে জনদুভোর্গ পোহাতে হয়।

এ সকল কৃষি জমির মাটি পারাপারে মাটি খেকো দালালরা সড়কে নিষিদ্ধ ঘোষিত ট্রাক্টর ও যন্ত্রদানব আইসার ব্যবহারে সড়কে ধুলাবালি, ভযাবহ দুর্ঘটনা ও প্রানহানির মত ঘটনা ঘটছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, কৃষি জমির মাটি কেনা কয়েকজনের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, কৃষি জমিগুলো ধান ক্ষেতের জন্য উপযোগী না হয়ে, বেশী উচুঁ হয়ে যাওয়ায়, জমির মালিকগন আমাদের কাছে, জমির মাটি বিক্রি করছেন। পরবর্তী বৎসর ফসল করতে পারছেন, কিছু টাকা ও পেলেন।

আরো পড়ুন  যাচাই-বাছাই শেষ, চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল

তাছাড়া সবকিছু ম্যানেজ করেই আমরা মাটি কাটছি, এখানে দোষের কিছু নেই। বেশ কয়েকজন ইটভাটার মালিকের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, কিছু মাটিওয়ালা মাটি বিক্রি করছে, আমরা কিনছি, তারা মাটি কোথায় থেকে আনলো আমাদের কিছু যায় আসেনা। ইটভাটার প্রধান কাঁচামাল মাটি, সরকার মাটি কাটা বন্ধ করলে ইটভাটা ও বন্ধ করে ফেলুক। প্রতিটি ইটভাটা বাৎসরিক বিপুল পরিমান অর্থ সরকারকে পরিশোধ করতে হচ্ছে। সচেতন মহল মনে করেন অচিরেই এ মাটি কাটার মহাউৎসব বন্ধ না হলে, খাদ্য সংকট, পরিবেশ বিপর্যয়, দরিদ্রর হার বৃদ্ধি সহ নানামুখী সংকটে পড়বে জনসাধারন।

এ বিষয়ে সরকারের আরো যুগোপযোগী উদ্যোগ স্থানীয় প্রশাসনের আরো গতিশীলতা জোরদারকরন সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী।