শাহরাস্তির প্রেসক্লাবের বার্ষিক বনভোজন ও আনন্দ ভ্রমণ প্রকৃতির লীলাভূমি রাঙ্গামাটিতে সুসম্পন্ন হয়েছে।
সম্প্রতি শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের আয়োজনে এটি অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন শাহরাস্তি প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ ও সুধীজন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি নামে খ্যাত পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থানগুলো ট্রলারে করে কাপ্তাই লেকের বিশাল জলরাশিতে দিনব্যাপী চষে বেড়ায়।
ওই বিনোদন যজ্ঞে শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সহ ৫০ জন অতিথি এ বনভোজন ও আনন্দ ভ্রমণে অংশ নেয়। উৎসবের বাড়তি মাত্রা ছিল গান, নাচ,কৌতুক, আবৃত্তি ও নান্দনিক উপস্থাপনার আয়োজনে ঠাসা।
বিশাল ট্রলার যোগে দর্শনীয় স্থান গুলো পরিদর্শন ছিল উড়ন্ত পাখির মতো দুরন্তপনায় ছুটে চলার মত। স্বপ্ন ঘেরা পাহাড়গুলোয় দাড়িয়ে থাকা গাছ আর পাহাড়ের অপরুপ সৌন্দর্য নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না, আল্লাহর সৃষ্টি যে কত অপরুপ! যেন স্বপ্নের বুননে একটু একটু করে জোড়া লাগানো প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য।
ঐতিহ্যবাহী রাঙামাটির প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে রয়েছে, রাজবন বিহার, ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজার বাড়ী, টুক টুক ইকো ভিলেজ, পর্যটন মোটেল ও ঝুলন্ত সেতু, স্পিলওয়ে,রাইংখ্যা পুকুর, পেদা টিং টিং, সুবলং ঝর্ণা, শুকনা ছড়া ঝর্ণা, কর্ণফুলী হ্নদ,কর্ণফুলী জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
শনিবার দুপুরে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মারুফ’এর আমন্ত্রণে জেলা সার্কিট হাউজে এক মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণে সবাই অংশ গ্রহণ করেন।
এ সময় আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্মুখে জেলা প্রশাসক এক সৌজন্য সাক্ষাৎকারে মিলিত হন।
তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, শাহরাস্তি উপজেলার মানুষ আমার আপনজন। শাহরাস্তি উপজেলায় (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব কালীল সময়ে শাহরাস্তির মানুষের আন্তরিক সহযোগিতা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ওই সময় আপনাদের নিষ্কণ্টক সমর্থন ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার সমর্থন না পেলে উন্নয়ন যজ্ঞ পরিচালনা করা সম্ভব হতো না। ওই সময় শাহরাস্তির জনপদে আমি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। ওই বিদ্যালয়টি তথা বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করতে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছি।
যার ফলে বিদ্যালয়টির ভৌত অবকাঠামোসহ, ভিন্নধারার শিক্ষা পদ্ধতি চালু করতে সক্ষম হয়েছি। যার প্রমান বিগত বছরগুলোতে স্কুলটির শিক্ষার্থীদের ঈর্ষান্বিত ফলাফল। তারপরও তিনি বলেন, ওই বিদ্যালয়টিকে তিনি দেশের সেরা বিদ্যালয় এর কাতারে নিয়ে আসতে সংকল্পবদ্ধ। একটি সম্ভব হবে এ জনপদের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের শতভাগ সমর্থন থাকলে। এক পর্যায়ে তিনি বলেন আমি সারাদিন রাঙ্গামাটি কর্মস্থলে থেকেও , স্বপ্ন দেখি শাহরাস্তি বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুলের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন নিয়ে। কিভাবে বিদ্যালয়টি সেরাদের সেরা করা যায়।
মতবিনিময় সভা শেষে শাহরাস্তি প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেষ্ট, লোগো সম্বলিত মগ, টি শার্ট ও ক্যাপ পরিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ মারুফকে অসামান্য শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানান। তিনিও শাহরাস্তি প্রেসক্লাব ক্ষুদ্র এ প্রয়াসকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেন।
শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নোমান হোসেন আখন্দের সার্বিক পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সভাপতি মো হাবিবুর রহমান ভুইঁয়া, শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক নোমান হোসেন আখন্দ প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য ও চেড়িয়ারা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ আবুল কালাম, কার্যকরী সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী হুমায়ুন কবির, কার্যকরী সদস্য ও সাবেক প্রাণীসম্পদ অফিসার ডাঃ দুলাল চন্দ্র ঘোষ, প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আমরুজ্জামান সবুজ।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সদস্য মো: রুহুল আমিন তরুণ, মনিরুজ্জামান শান্ত, মাহবুব হাসান বাবলু, মো: নুরে আলম, মো: হেলাল উদ্দীন, ইমতিয়াজ সিদ্দিকী তোহা, মো: গিয়াস উদ্দিন, রাফিউ হাসান হামজা, মাহবুব আলম সুমন, জাকির হোসেন নয়ন, শামীম আহমেদ মো: ইউসুফ আলী সহ প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্স প্রবাসী মো: শহিদ উল্ল্যাহ বাদল, আবদুর রাজ্জাক রাজু, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও শিক্ষানুরাগী মিজানুর রহমান বেপারী, সোহেল রানা, মিজানুর রহমান, লিটন মাষ্টার, শরীফুল ইসলাম মাষ্টার, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী এমরান হোসেন কামরুল, মো: হানিফ মিয়াজী প্রমুখ।
আনন্দ ভ্রমণ শেষে প্রেসক্লাবের নবাগত সদস্য ও অতিথিদের মাঝে প্রেসক্লাবের লোগো সম্বলিত মগ ও উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।