ঢাকা ০৮:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হৃদয়বিদারক : ফরিদগঞ্জে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু

এস এম ইকবাল : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বড়ভাইয়ের হঠাৎ মৃত্যুর খবর শুনে মেঝ ভাইইয়ের মৃত্যু হয়েছে।
৪ মে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ওয়াপদার দক্ষিণ পাশে ডা. ওয়ালীউল্লাহর বাড়ির পুকুরপাড়ে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
মৃত দুই ভাই হলেন, ওয়ালীউল্লাহ বাড়ির মৃত বিল্লাল হোসেনের ছেলে রুবেল হোসেন (২৮) ও সোহেল রানা (২৬)।
এদিকে একসঙ্গে দুই সন্তানকে হারিয়ে তাদের মা জেসমিন আক্তার শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। হঠাৎ করে তার সন্তানদের মৃত্যু হওয়ায় তাকে সান্ত্বনা দিতে ছুটে আসেন এলাকার অনেকেই।
মৃত রুবেল হোসেন ও সোহেল রানার ছোটভাই আরিফ হোসেন জানান,  সকলে বৃষ্টির মধ্যে তার বড়ভাই রুবেল হোসেন বাড়ির পুকুরপাড়ে উজানের কৈই  মাছ ধরতে যান। দুই ঘণ্টা পরও রুবেল ঘরে ফিরে না আসায় সোহেল রানাও সেখানে যায়। এরমধ্যে পুকুরপাড়ে বড়ভাই মৃত এমন দৃশ্য দেখে সোহেল রানা চিৎকার শুরু করেন। একপর্যায়ে তারও চিৎকার বন্ধ হয়ে যায়।
এসময় বাড়ির অন্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে যাওয়ার পর দুই ভাইকে একই অবস্থায় দেখেন আরিফ হোসেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক মোজাম্মেল হোসেন জানান, স্থানীয়রা দুই ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই এই দুজন মারা গেছেন। শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকায় প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে পরপর দু’জন মারা যান।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন জানান, দুটি মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।  কি কারনে রুবেলের মৃত্যু হয়েছে তা জানার জন্য তার লাশ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং সোহেলের লাশ পরিবারের লোকজনের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মৃত দুজনের শরীরের কোথাও জখম কিংবা আঘাতের চিহ্ন নেই। তারপরও মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে রুবেল মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।
মৃতদের স্বজনরা জানান,  রুবেল ও সোহেলের বাবা তাদের ছোট রেখে মারা যান। পরে মায়ের সঙ্গে তিনভাই থাকতেন। আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। বাবা না থাকায় তাদের মা অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করেছেন।  রুবেল দলিল লেখকের কাজ করতো, সোহেল ছোটখাটো চাকরি করতো। তবে তাদের কেউ বিয়ে করেননি।
ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় হঠাৎ করে একসঙ্গে দুইভাইয়ের মৃত্যুতে স্বজনদের বাইরে আশপাশের লোকজনও শোকার্ত হয়ে পড়েন। এতে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
এদিকে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক প্রচার করা হয়েছে।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে মতলব উত্তরে বিএনপির জন সমাবেশ

হৃদয়বিদারক : ফরিদগঞ্জে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু

আপডেট সময় : ১২:৪১:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ মে ২০২২
এস এম ইকবাল : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বড়ভাইয়ের হঠাৎ মৃত্যুর খবর শুনে মেঝ ভাইইয়ের মৃত্যু হয়েছে।
৪ মে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ওয়াপদার দক্ষিণ পাশে ডা. ওয়ালীউল্লাহর বাড়ির পুকুরপাড়ে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
মৃত দুই ভাই হলেন, ওয়ালীউল্লাহ বাড়ির মৃত বিল্লাল হোসেনের ছেলে রুবেল হোসেন (২৮) ও সোহেল রানা (২৬)।
এদিকে একসঙ্গে দুই সন্তানকে হারিয়ে তাদের মা জেসমিন আক্তার শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। হঠাৎ করে তার সন্তানদের মৃত্যু হওয়ায় তাকে সান্ত্বনা দিতে ছুটে আসেন এলাকার অনেকেই।
মৃত রুবেল হোসেন ও সোহেল রানার ছোটভাই আরিফ হোসেন জানান,  সকলে বৃষ্টির মধ্যে তার বড়ভাই রুবেল হোসেন বাড়ির পুকুরপাড়ে উজানের কৈই  মাছ ধরতে যান। দুই ঘণ্টা পরও রুবেল ঘরে ফিরে না আসায় সোহেল রানাও সেখানে যায়। এরমধ্যে পুকুরপাড়ে বড়ভাই মৃত এমন দৃশ্য দেখে সোহেল রানা চিৎকার শুরু করেন। একপর্যায়ে তারও চিৎকার বন্ধ হয়ে যায়।
এসময় বাড়ির অন্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে যাওয়ার পর দুই ভাইকে একই অবস্থায় দেখেন আরিফ হোসেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক মোজাম্মেল হোসেন জানান, স্থানীয়রা দুই ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই এই দুজন মারা গেছেন। শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকায় প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে পরপর দু’জন মারা যান।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন জানান, দুটি মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।  কি কারনে রুবেলের মৃত্যু হয়েছে তা জানার জন্য তার লাশ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং সোহেলের লাশ পরিবারের লোকজনের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মৃত দুজনের শরীরের কোথাও জখম কিংবা আঘাতের চিহ্ন নেই। তারপরও মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে রুবেল মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।
মৃতদের স্বজনরা জানান,  রুবেল ও সোহেলের বাবা তাদের ছোট রেখে মারা যান। পরে মায়ের সঙ্গে তিনভাই থাকতেন। আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। বাবা না থাকায় তাদের মা অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করেছেন।  রুবেল দলিল লেখকের কাজ করতো, সোহেল ছোটখাটো চাকরি করতো। তবে তাদের কেউ বিয়ে করেননি।
ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় হঠাৎ করে একসঙ্গে দুইভাইয়ের মৃত্যুতে স্বজনদের বাইরে আশপাশের লোকজনও শোকার্ত হয়ে পড়েন। এতে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
এদিকে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক প্রচার করা হয়েছে।