নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়নে ইতোমধ্যেই নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর। তা বাস্তবায়নে প্রতিটি জেলা, উপজেলা এবং সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৎপর হলেও মানছে না কিন্ডার গার্টেন।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় নতুন কারিকুলাম অমান্য করেই বার্ষিক পরীক্ষা এবং বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ায় ব্যস্ত তারা। এতে করে আর্থিক বাণিজ্য করার সুযোগ পাচ্ছে অসাধু কিন্ডার গার্টেন ব্যবসায়ী ও নেতৃত্বদানকারী লোকেরা। আর এর ভূক্তভোগী হচ্ছে অভিভাবক ও কোমলমতি শিশুরা।
জানা গেছে, মতলব উত্তর উপজেলায় ৫/৬ টি সংগঠন আছে। তাদের প্রতিটি সংগঠনের মধ্যে রয়েছে ১০-১২ টি বা তার চেয়ে বেশি পরিমানে কিন্ডার গার্টেন স্কুল। বিভিন্ন নাম দিয়ে চলছে এই সমিতিগুলো।
মতলব উত্তর উপজেলা কিন্ডার গার্টেন সমিতি, মতলব উত্তর কিন্ডার গার্টেন সমিতি, মতলব উত্তর আইডিয়েল কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশন, রেনেসাঁ কিন্ডার গার্টেন সমিতি, এমন নাম ব্যবহার করে সমিতি খুলে চলছে কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থা।
সরকারের সাথে টেক্কা দিতে তারা পাঠ নিচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত। সরকারি বইয়ের বাইরেও প্রতিটি ক্লাসে রয়েছে ৪/৬ টি অতিরিক্ত বই। যা এই অল্প বয়সী শিশুদের জন্য মারাত্মক হুমকি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, এবারে সরকার নতুন শিক্ষা কারিকুলাম দিয়েছে। ওই কারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষা ব্যবস্থা চলবে। ইতোমধ্যেই ৫ম শ্রেণির বার্ষিক সমাপনী পরীক্ষা বাদ পড়ে গেছে। বার্ষিক বৃত্তি পরীক্ষার নামে যে পরীক্ষাটি হত, নতুন কারিকুলামের নিয়মে সেটাও হবে না। সকল ক্লাসেই শুধু মূল্যায়ন পরীক্ষা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সরকারি কারিকুলামের বাইরে স্কুল চালানোর কোন সুযোগ নেই। সেটা কিন্ডার গার্টেন হোক বা অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোক। সমাপনী বা বৃত্তি পরীক্ষা কোনটাই নিতে পারবে না। এ ব্যাপারে আমরা দ্রুত সোচ্ছার হব। কোথায় কোথায় হচ্ছে তা খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কিন্ডার গার্টেনগুলোতে গলাকাটা ফি ধরা হচ্ছে। বছরে ৪ টি পরীক্ষার কথা বলে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।
যেখানে প্রাইমারী স্কুলে শুধু দুইটি পরীক্ষা হয়। অথচ কিন্ডার গার্টেন স্কুলে হচ্ছে ৪-৫ টি পরীক্ষা। প্রতিটি পরীক্ষার জন্য নেয়া হচ্ছে ২০০, ৪০০, ৬০০ টাকা হারে ফি। এছাড়াও বার্ষিক বৃত্তি পরীক্ষার নামে নেওয়া হচ্ছে শ্রেণী ভিত্তিক ফি।
নার্সারীতে ২০০, প্রথম শ্রেণিতে ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি। বৃত্তি পরীক্ষা কেন্দ্র করে হয়েছে অতিরিক্ত ক্লাস ও মূল্যায়ন পরীক্ষা।
যার ফলে শিশুদের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়েছে। এমন চাঁদাবাজি ও শিক্ষা ব্যবস্থার চাপে পড়ে দিশেহারা অভিভাবকরা।
সরকারি কারিকুলাম অমান্য করে এ ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করতে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন সচেতন অভিভাবক, সুধী সমাজ ও সচেতন জনগণ।