শাহারাস্তি ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় ২৮ টি ইটভাটায় প্রায় ৬ হাজার শ্রমিক মানবতার জীবন যাপন করছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে শ্রমিকরা।
সরকারের হঠাৎ সিদ্ধান্তে ইট তৈরির কাঁচামাল মাটির অভাবে বন্ধের মুখে প্রায় সকল ইটভাটা এবং কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কায় বহু শ্রমিক।
চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি ও হাজিগঞ্জ উপজেলায় সর্বমোট ২৮ টি ইটভাটা রয়েছে। যার মধ্যে শাহরাস্তি উপজেলায় ১৯ টি এবং হাজীগঞ্জে নয়টি ইট ভাটা অবস্থিত।
এই শ্রম নির্ভর ইট ভাটায় প্রায় ছয় হাজারের মতো শ্রমিক মাটিকাটা ও শ্রমিক বহন কাজে নিয়োজিত ট্রাক চালক ও তাদের সহযোগী কর্মরত রয়েছেন।
![](https://priyochandpur.com/wp-content/uploads/2024/02/Priyo-Chandpur-000169.jpg)
সূত্রে জানা যায়, এ বছর ইট ভাটায় বিনিয়োগকারীরা অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে এমনইতেই লোকসানের মুখে পড়েছে। মালিকগণ ব্যাংক ঋণ করে ব্যবসায় বিনিয়োগ করে এখন সবমিলিয়ে দিশেহারা।
ইট ভাটার মালিকগণ জানান, শ্রমিকরা ইট ভাটার মালিকদের কাছ থেকে আগাম দাদন নিয়ে খরচ করে ফেলেছে, যা মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া তাদের পক্ষে কোন ভাবেই সম্ভব নয়। সরকারের নীতি নির্ধারকদের এমন হীন সিদ্ধান্তহীনতায় মৌসুমের শেষ প্রান্তে এসেও তারা শ্রম বিক্রি করতে পারেনি। যার ফলে ঋণের দায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে এই শ্রমিকরা।
মালিকপক্ষের মূল চিন্তার কারণ কিভাবে তারা তাদের ব্যাংক ঋণ শোধ করবে। অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাতের ফলে মৌসুমের শুরুতে তারা ইট পোড়াতে পারেনি। আর বর্তমানে ইটভাটা গুলি মাটির অভাবে ভাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।
![](https://priyochandpur.com/wp-content/uploads/2024/02/Priyo-Chandpur-000170.jpg)
সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২৫ সালের পর থেকে কোনভাবেই কৃষি জমির মালিকরা টপ সয়েল মাটি কেটে ইট ভাটায় ইট পোড়াতে পারবে না মর্মে নির্দেশ জারি করেছে সরকার। যার ফলে আগামী বছর থেকে এমনিতেই এ সকল ইটভাটা বন্ধ হয়ে যাবে কিন্তু এবার লাইসেন্স নবায়নের পূর্বে কোন ধরনের নির্দেশনা না থাকায় ইট ভাটা শিল্পে শুধু শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় বিনিয়োগ করা হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার অধিক। সরকারের নীতি নির্ধারকদের সিদ্ধান্তহীনতার ফলে চরম ব্যবসায়িকভাবে লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছে ইট ভাটা মালিকরা।
কর্মহীন হয়ে পড়া এসব শ্রমিকগণ তাদের শ্রেণীর কথা বিবেচনা রেখে সরকারের নীতি নির্ধারকদের প্রতি বিনীত আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যে কোনো ভাবেই হোক এই মৌসুমে তাদের কাজ করার সুযোগ দিলে তারা ঋণের দায়ে জর্জরিত হতে হবে না। পরিবার নিয়ে তাদের পথে বসতে হবে না।
ইটভাটার শ্রমিকরা স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্য মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম ও উপজেলা প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছে, যে কোন ভাবেই হোক তাদের জীবন জীবিকা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে এই বছর তাদের কাজের অনুমতি দেয়ার জন্য।
সিদ্ধান্ত নিতে দীর্ঘ সূত্রিতার ফলে বিপাকে পড়েছে শ্রমিক মালিক ও ইট ব্যবহারকারী সকলেই। বহুবার ইটভাটা মালিক সংগঠন থেকে বিভিন্ন প্রশাসনের দপ্তরে মাটি তোলার আবেদন জানালেও কোন সুরাহা মেলেনি। তার জেরে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন ভাটা মালিক ও শ্রমিকরা।