ঢাকা ০৪:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৮ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কচুয়ায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে শিশু নুসরাত

টানা ১ মাস ১০ দিন ধরে হাতপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে শিশু নুসরাত আক্তার (৭)। শিশুটি কচুয়ার বড়দৈল গ্রামে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে রাস্তায় সহপাঠিদের সাথে খেলতে গিয়ে বেপরোয়া মাইক্রো চালকের গাড়ি চাপায় বাম পা থেতলে ও ভেঙ্গে যায়।

পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সাচার পরবর্তীতে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে শিশুটি জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে লড়াই করে যাচ্ছে। শিশু নুসরাত আক্তার কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মহিচাইল গ্রামের সাইফুল ইসলামে কন্যা।

দীর্ঘ ৪০দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে এখনো আলোর মুখ দেখেনি শিশুটি। শিশুটির নানা অসহায় সিএনজি চালক মিজানুর রহমান এর শেষ সম্বল সহায় সম্পত্তি বিক্রি ও ধার-দেনা করে মেয়ের নাতনি নুসরাত আক্তারকে চিকিৎসা করিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু যার কারণে দূর্ঘটনা ঘটলো একবারের জন্য খবর নেয়নি পাষন্ড চালক আবুল খায়ের। আবুল খায়ের উল্টো প্রভাব দেখিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলেন অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ নুসরাত আক্তারের নানার পরিবার।

নিরুপায় হয়ে অবেশেষে মঙ্গলবার নুসরাতের নানী শাহিনুর বেগম বাদী হয়ে গাড়ী চালক আবুল খায়ের কে অভিযুক্ত করে কচুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

থানায় বাদীর লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় এলাকাসূত্রে জানা গেছে, কচুয়া উপজেলার বড়দৈল কালাইয়ের বাড়ির অধিবাসী সিএনজি চালক মিজানুর রহমানের মেয়ে হালিমা আক্তারকে পাশ্ববর্তী চান্দিনার মইচাইল গ্রামে বিয়ে দেয়। ঘটনার কয়েক দিন আগে হালিমা আক্তার তার শিশু কন্যা নুসরাতকে নিয়ে বড়দৈল গ্রামে বাপের বাড়িতে বেড়াতে আসে।

পরবর্তীতে ২৯ সেপ্টেবর বিকাল বেলায় নুসরাত আক্তার পাশ্ববর্তী রাস্তায় বাড়ির অন্যান্য শিশুদের সাথে খেলার এক পর্যায়ে একই উপজেলার বেরকোটা গ্রামের আব্দুল রশিদ বেপারীর ছেলে আবুল খায়ের আকস্মিক ভাবে মাইক্রো গাড়ি (যার নং- ঢাকা মেট্রো-চ ১৩-৮৩০৪) চালিয়ে যাওয়ার সময় শিশুটি গাড়ির নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়। শিশুটির আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, আবুল খায়ের ঘটনার সময় চোখে ঘুমঘুম অবস্থায় বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর কারনে শিশুটি তার গাড়ির নিচের চাকায় ধাক্কা খেয়ে বাম পা থেতলে ও ভেঙ্গে যায়।

আরো পড়ুন  জাটকা নিধন অভিযান শতভাগ সফল করতে সবাইকে কাজ করতে হবে; অঞ্জনা খান মজলিশ

পরবর্তীতে আবুল খায়ের সাচারে চিকিৎসার নাম করে একটি প্রাইভেট হাসপাতালের সামনে শিশু নুসরাতকে রেখে গাড়ি নিয়ে গাঁ ঢাকা দেয় এবং ঘটনার প্রায় ৪০দিন অতিবাহিত হলেও কোনো খোঁজখবর ও চিকিৎসার সহায়তা না করে বিভিন্ন ভাবে প্রভাব খাটিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে নানান ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।

শিশু নুসরাত আক্তারের নানা মিজানুর রহমান, নানী শাহিনুর বেগম ও খালা হাজেরা আক্তার কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আবুল খায়ের নুসরাতের দূর্ঘটনার খোঁজখবর না নিয়ে উল্টো নানান ভাবে তালবাহানা করছে। আমরা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় এর ন্যায় বিচার চাই।

এদিকে অভিযুক্ত মাইক্রো চালক আবুল খায়ের বলেন, শিশুটি আকস্মিক ভাবে দৌড়ে আমার গাড়ির সাথে ধাক্কা খায়। পরবর্তীতে আমার বাবা এক্সিডেন্ট হওয়ায় ও গাড়ি সমস্যা হওয়ায় শিশুটির খোঁজখবর নিতে পারেনি। তবে খোঁজখবর নিয়ে তাকে সহযোগিতার চেষ্টা করব।

কচুয়া থানার ওসি মো. মহিউদ্দিন বলেন, শিশুটির আত্মীয় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি সাচার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আনোয়ার হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তপূর্বক দোষীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে ২টি ঔষধ দোকানিকে ২৫ হাজার টাকা দন্ড

error: Content is protected !!

কচুয়ায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে শিশু নুসরাত

আপডেট সময় : ০৪:৫২:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ নভেম্বর ২০২১

টানা ১ মাস ১০ দিন ধরে হাতপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে শিশু নুসরাত আক্তার (৭)। শিশুটি কচুয়ার বড়দৈল গ্রামে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে রাস্তায় সহপাঠিদের সাথে খেলতে গিয়ে বেপরোয়া মাইক্রো চালকের গাড়ি চাপায় বাম পা থেতলে ও ভেঙ্গে যায়।

পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সাচার পরবর্তীতে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে শিশুটি জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে লড়াই করে যাচ্ছে। শিশু নুসরাত আক্তার কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মহিচাইল গ্রামের সাইফুল ইসলামে কন্যা।

দীর্ঘ ৪০দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে এখনো আলোর মুখ দেখেনি শিশুটি। শিশুটির নানা অসহায় সিএনজি চালক মিজানুর রহমান এর শেষ সম্বল সহায় সম্পত্তি বিক্রি ও ধার-দেনা করে মেয়ের নাতনি নুসরাত আক্তারকে চিকিৎসা করিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু যার কারণে দূর্ঘটনা ঘটলো একবারের জন্য খবর নেয়নি পাষন্ড চালক আবুল খায়ের। আবুল খায়ের উল্টো প্রভাব দেখিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলেন অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ নুসরাত আক্তারের নানার পরিবার।

নিরুপায় হয়ে অবেশেষে মঙ্গলবার নুসরাতের নানী শাহিনুর বেগম বাদী হয়ে গাড়ী চালক আবুল খায়ের কে অভিযুক্ত করে কচুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

থানায় বাদীর লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় এলাকাসূত্রে জানা গেছে, কচুয়া উপজেলার বড়দৈল কালাইয়ের বাড়ির অধিবাসী সিএনজি চালক মিজানুর রহমানের মেয়ে হালিমা আক্তারকে পাশ্ববর্তী চান্দিনার মইচাইল গ্রামে বিয়ে দেয়। ঘটনার কয়েক দিন আগে হালিমা আক্তার তার শিশু কন্যা নুসরাতকে নিয়ে বড়দৈল গ্রামে বাপের বাড়িতে বেড়াতে আসে।

পরবর্তীতে ২৯ সেপ্টেবর বিকাল বেলায় নুসরাত আক্তার পাশ্ববর্তী রাস্তায় বাড়ির অন্যান্য শিশুদের সাথে খেলার এক পর্যায়ে একই উপজেলার বেরকোটা গ্রামের আব্দুল রশিদ বেপারীর ছেলে আবুল খায়ের আকস্মিক ভাবে মাইক্রো গাড়ি (যার নং- ঢাকা মেট্রো-চ ১৩-৮৩০৪) চালিয়ে যাওয়ার সময় শিশুটি গাড়ির নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়। শিশুটির আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, আবুল খায়ের ঘটনার সময় চোখে ঘুমঘুম অবস্থায় বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর কারনে শিশুটি তার গাড়ির নিচের চাকায় ধাক্কা খেয়ে বাম পা থেতলে ও ভেঙ্গে যায়।

আরো পড়ুন  মানুষের কল্যাণে জীবনের শেষ সময়টুকু পর্যন্ত কাজ করে যাবো :  মেজর রফিকুল ইসলাম

পরবর্তীতে আবুল খায়ের সাচারে চিকিৎসার নাম করে একটি প্রাইভেট হাসপাতালের সামনে শিশু নুসরাতকে রেখে গাড়ি নিয়ে গাঁ ঢাকা দেয় এবং ঘটনার প্রায় ৪০দিন অতিবাহিত হলেও কোনো খোঁজখবর ও চিকিৎসার সহায়তা না করে বিভিন্ন ভাবে প্রভাব খাটিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে নানান ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।

শিশু নুসরাত আক্তারের নানা মিজানুর রহমান, নানী শাহিনুর বেগম ও খালা হাজেরা আক্তার কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আবুল খায়ের নুসরাতের দূর্ঘটনার খোঁজখবর না নিয়ে উল্টো নানান ভাবে তালবাহানা করছে। আমরা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় এর ন্যায় বিচার চাই।

এদিকে অভিযুক্ত মাইক্রো চালক আবুল খায়ের বলেন, শিশুটি আকস্মিক ভাবে দৌড়ে আমার গাড়ির সাথে ধাক্কা খায়। পরবর্তীতে আমার বাবা এক্সিডেন্ট হওয়ায় ও গাড়ি সমস্যা হওয়ায় শিশুটির খোঁজখবর নিতে পারেনি। তবে খোঁজখবর নিয়ে তাকে সহযোগিতার চেষ্টা করব।

কচুয়া থানার ওসি মো. মহিউদ্দিন বলেন, শিশুটির আত্মীয় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি সাচার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আনোয়ার হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্তপূর্বক দোষীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।