ঢাকা ০১:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পরিবেশগত দিক থেকে সংকটাপন্ন ষাটনল পর্যটন কেন্দ্র

মনিরুল ইসলাম মনির : পরিবেশগত দিক থেকে সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকা ষাটনল পর্যটন কেন্দ্র দিন দিন আরও বিপন্ন হচ্ছে। অবৈধভাবে গড়ে উঠা পোল্ট্রি খামারের কারনে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রটি আজ হুমকির মুখে।

Model Hospital

সরকারি ভাবে ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রটিকে ঘোষনা করে ২০০০ সালে মতলব উত্তর উপজেলার ১নং ষাটনল ইউনিয়নে ১৫ একর খাস জমিতে ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম)।

বর্তমানে পর্যটন কেন্দ্রের প্রবেশ মুখেই অবৈধ বালুর ব্যবসা এবং পাশেই রয়েছে অবৈধভাবে গড়ে উঠা পোল্ট্রি খামার। ১টি খামার অন্যত্র সড়িয়ে নেয়ায় বর্তমানে ওখানে রয়েছে ৩ টি মুরগীর খামার। খামারের ৩ হাজার মুরগী ও ২ হাজার হাসের বিষ্টা ফেলা হয় ওখানেই।

ফলে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে আশেপাশের সাধারন মানুষের যাতায়াত প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ কারনে জনপ্রিয় হয়ে উঠা ষাটনল পর্যটন থেকে পর্যটকরা এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। কমে গেছে ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড়।

পরিবেশের ছাড়পত্র ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে রেজিষ্ট্রেশন নেয়া বাধ্যতামূলক হলেও ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রের পাশেই কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে এই পোল্ট্রি খামারগুলো।

খামার ব্যাবসায়ীরা জানান, প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকা করে এবং বছরে ৫০হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে খামার পরিচালনা করছেন।
চাঁদপুর জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধায়নে ২২ বছরে ১টি বিশ্রামাগার, ১টি রন্ধনশালা, ১টি ড্রেসিং ভবন, ১টি ডাইনিং, কয়েকটি টয়েলেট নির্মাণ করা ছাড়া আর কোন অবকাঠামো নির্মাণ না করায় এই পর্যটন কেন্দ্রে আধুনিকতার ছোয়া লাগিনি। এজন্যই ষাটনল পর্যটন কেন্দ্র হতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পর্যটকরা এমনটিই দাবী স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিবর্গের।

ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রের পাশে ষাটনল লঞ্চঘাটের কয়েকজন দোকানদার জানায়, পর্যটন কেন্দ্রে আগের মতো লোক না আসার কারনে তাদের বেচা- কিনা কম।

আরো পড়ুন  শাহরাস্তিতে প্রশাসনের অভিযানে হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা

ষাটনল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলম সরকার জানান, পর্যটন কেন্দ্রে কিছু অবকাঠামো থাকলেও কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। পর্যটকদের সুযোগ- সুবিদার কথা চিন্তা করে আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে সরকারী ভাবে এই পর্যটন কেন্দ্রকে একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। আর তাহলে ভ্রমণ পিপাসুদের সংখ্যা বারবে এবং বহু বেকার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

পর্যটন কেন্দ্রর পাশে বালুর ব্যবসা ও পোল্ট্রি খামার গড়ে উঠা ও অবকাঠামোর বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল হাসান জানান, পর্যটন কেন্দ্রের জায়গায় যদি কেউ অবৈধভাবে পোল্ট্রি খামার করে থাকেন এ ব্যাপারে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করলে আমরা অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পর্যটন কেন্দ্র ও পরিবেশের ক্ষতি করে এমন কোনো বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধার কথা চিন্তা করে আধুনিক অবকাঠামো নির্মানের মাধ্যমে ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রটিকে একটি পুর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্রের রূপ দিতে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দাবী জানিয়েছন এলাকার সর্বস্তরের জনগণ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদপুরের বাগাদীতে ডিবি উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়া দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থেকেই নিচ্ছেন বেতন ভাতা

পরিবেশগত দিক থেকে সংকটাপন্ন ষাটনল পর্যটন কেন্দ্র

আপডেট সময় : ০২:২৭:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

মনিরুল ইসলাম মনির : পরিবেশগত দিক থেকে সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকা ষাটনল পর্যটন কেন্দ্র দিন দিন আরও বিপন্ন হচ্ছে। অবৈধভাবে গড়ে উঠা পোল্ট্রি খামারের কারনে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রটি আজ হুমকির মুখে।

Model Hospital

সরকারি ভাবে ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রটিকে ঘোষনা করে ২০০০ সালে মতলব উত্তর উপজেলার ১নং ষাটনল ইউনিয়নে ১৫ একর খাস জমিতে ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম)।

বর্তমানে পর্যটন কেন্দ্রের প্রবেশ মুখেই অবৈধ বালুর ব্যবসা এবং পাশেই রয়েছে অবৈধভাবে গড়ে উঠা পোল্ট্রি খামার। ১টি খামার অন্যত্র সড়িয়ে নেয়ায় বর্তমানে ওখানে রয়েছে ৩ টি মুরগীর খামার। খামারের ৩ হাজার মুরগী ও ২ হাজার হাসের বিষ্টা ফেলা হয় ওখানেই।

ফলে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে আশেপাশের সাধারন মানুষের যাতায়াত প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ কারনে জনপ্রিয় হয়ে উঠা ষাটনল পর্যটন থেকে পর্যটকরা এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। কমে গেছে ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড়।

পরিবেশের ছাড়পত্র ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে রেজিষ্ট্রেশন নেয়া বাধ্যতামূলক হলেও ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রের পাশেই কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে এই পোল্ট্রি খামারগুলো।

খামার ব্যাবসায়ীরা জানান, প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকা করে এবং বছরে ৫০হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে খামার পরিচালনা করছেন।
চাঁদপুর জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধায়নে ২২ বছরে ১টি বিশ্রামাগার, ১টি রন্ধনশালা, ১টি ড্রেসিং ভবন, ১টি ডাইনিং, কয়েকটি টয়েলেট নির্মাণ করা ছাড়া আর কোন অবকাঠামো নির্মাণ না করায় এই পর্যটন কেন্দ্রে আধুনিকতার ছোয়া লাগিনি। এজন্যই ষাটনল পর্যটন কেন্দ্র হতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পর্যটকরা এমনটিই দাবী স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিবর্গের।

ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রের পাশে ষাটনল লঞ্চঘাটের কয়েকজন দোকানদার জানায়, পর্যটন কেন্দ্রে আগের মতো লোক না আসার কারনে তাদের বেচা- কিনা কম।

আরো পড়ুন  বরিশালের মাদক ব্যবসায়ী চাঁদপুরে ৪ হাজার ৬০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার

ষাটনল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলম সরকার জানান, পর্যটন কেন্দ্রে কিছু অবকাঠামো থাকলেও কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। পর্যটকদের সুযোগ- সুবিদার কথা চিন্তা করে আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে সরকারী ভাবে এই পর্যটন কেন্দ্রকে একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। আর তাহলে ভ্রমণ পিপাসুদের সংখ্যা বারবে এবং বহু বেকার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

পর্যটন কেন্দ্রর পাশে বালুর ব্যবসা ও পোল্ট্রি খামার গড়ে উঠা ও অবকাঠামোর বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল হাসান জানান, পর্যটন কেন্দ্রের জায়গায় যদি কেউ অবৈধভাবে পোল্ট্রি খামার করে থাকেন এ ব্যাপারে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করলে আমরা অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পর্যটন কেন্দ্র ও পরিবেশের ক্ষতি করে এমন কোনো বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

পর্যটকদের সুযোগ-সুবিধার কথা চিন্তা করে আধুনিক অবকাঠামো নির্মানের মাধ্যমে ষাটনল পর্যটন কেন্দ্রটিকে একটি পুর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্রের রূপ দিতে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দাবী জানিয়েছন এলাকার সর্বস্তরের জনগণ।