সাফল্য এবং জনপ্রিয়তা যেন প্রতিযোগিতা করেই পিছু ছুটছে তাদের। একাধারে তারা যেমন সফল উদ্যোক্তা, লতেমনি পড়ালেখায়ও খুব মেধাবী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদেরকে অনুসরণ করেন হাজার হাজার মানুষ। গল্পটা চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের দুই তরুণ শুভ ও রিয়াজ।
চাঁদপুর সরকারী কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি দিনের অধিকাংশ সময় ব্যায় করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ওই মাধ্যমকে কাজে লাগিয়েই করছেন জীবিকার নির্বাহ। পরিবারের কাছে হাত না পেতে নিজেরাই নিজেদের সকল স্বপ্ন পূরণ করতে পারছেন তারা। চলতি ইলিশের মৌসুমে চাঁদপুর মাছঘাট থেকে ইলিশ নিয়ে অনলাইনে ইলিশ বিক্রি করে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন এ দুই তরুণ অনলাইন উদ্যোক্তা। ২০১৯ সাল থেকে যথেষ্ট সুনামের সাথে তারা “অনলাইন ইলিশ বাজার” এর মাধ্যমে ব্যবসা করে আসছে। দুইজন মেধাবী শিক্ষার্থীর এমন সফলতা দেখে খুশি পাড়া প্রতিবেশীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
আলাপের এক ফাঁকে উদ্যোক্তা তানজিল পাঠান শুভ জানান, চলতি ইলিশ মৌসুমে গত দুই মাসে প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকার ১০ মন ইলিশ মাছ বিক্রি করেছেন তারা। সকল খরচ বাদ দিয়ে তাদের লাভ হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার মত। অনলাইনে অর্ডার নিয়ে ইলিশের রাজধানী চাঁদপুর মাছ ঘাট থেকে প্রায় প্রতিদিনই মাছ কিনে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেন। গুনে-মানে ঠিক থাকায় ক্রেতারাও একবার কিনে বার বার অর্ডার করেন। ডিমে অল্প লাভ হলেও মানুষ ইলিশের ডিম পছন্দ করে। সে কারণে ইলিশের ডিমও সরবরাহ করার চেষ্টা থাকে তাদের।
তরুণ ওই উদ্যোক্তারা জানান, বাজারে আরও নানা ধরনের ইলিশ পাওয়া যায়। কোনোটি সাগরের আবার কোনোটি নদীর ইলিশ বলে বিক্রি করলেও আসলে এগুলো ক্রেতাদের সাথে একধরনের প্রতারণা। বাজারে ইলিশের সঙ্গে তাদের ইলিশের মানে রয়েছে বিস্তর ফারাক। আর সে কারণেই দাম একটু বেশি। ক্রেতারা খেয়ে মজা পাওয়ার কারণে একটু দাম বেশি দিয়ে হলেও আবার নিয়ে থাকেন।
তারা আরো জানান, আমাদের মাছের অর্ডার আমরা সাধারনত অনলাইন থেকে পেয়ে থাকি। যখন ক্রেতা আমাদের কাছে অর্ডার দেয় তখন আমরা হাফ পেমেন্ট, ফুল পেমেন্ট, কন্ডিশন ও ক্যাশ অন ডেলিভারিতে মাছ বিক্রি করে আসছি। আমরা মাছগুলো চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাট এর আড়ত ও জেলেদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে ককশিট দ্বারা ভালোমত প্যাকেজিং করে ক্রেতাদের কাছে পাঠাই।আমরা সাধারনত চাঁদপুর এর বাইরে কুরিয়ার, বাস ও লঞ্চের মাধ্যমে মাছ পৌঁছাতে চেষ্টা করি। এছাড়াও চাঁদপুর জেলার অভ্যন্তরে ও নিকটবর্তী স্থান গুলোতে আমরা নিজেরা গিয়ে ডেলিভারি দিয়ে আসি।
আরেক অনলাইন উদ্যোক্তা রিয়াজ পাঠান বলেন, শ্রম, মেধা ও পেশাদারিত্ব দিয়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে কাজে লাগিয়েই আয় করছি। বিনিয়োগ খুব বেশি না হলেও ক্রেতাদের বিশ্বাস রক্ষায় কম লাভেই চাঁদপুরের ইলিশ বিক্রি করে আসছি। চ্যালেঞ্জ অনেক আছে সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আরও অনেকে অনলাইনে প্ল্যাটফর্ম কাজে লাগিয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে আসছেন-এটা ইতিবাচক। কিন্তু অনেকেই মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন। সাগরের মাছ চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার বলে চালিয়ে দিচ্ছেন। দামও নিচ্ছেন কম। এ ধরনের অপেশাদার আচরণের কারণে এখানে টিকে থাকা কিছুটা ঝুঁকির।
ফেসবুকে তাদের প্লাটফর্ম: https://www.facebook.com/online.elish.bazar