প্রবাদে আছে চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী ” তাই সত্যি হয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলমের বেলাতেও।

তিনি আগে অর্থাৎ ২০২০ সালে চাঁদপুরে একই পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় চান্দ্রার মাদক নিয়ে তাকে জরিয়ে যে প্রপাগান্ডা করা হয়েছে সেটি ও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তাদের যোগসাজস ছিল। তার অপবাদ চাপানো হয় সহকারী পরিচালক দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে।
২০২৩ সালের জুন মাসে তাকে উদ্ধতন কতৃপক্ষ পুনরায় চাঁদপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হিসেবে স্থলাভিষিক্ত করেন। জুন, জুলাই, আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসে তিনি ব্যাপক অভিযান করেছেন তার সহকর্মীদের নিয়ে। এ তিন মাসে ৩২৪ টি অভিযান পরিচালনা করে ৩১টি মামলা দায়ের করেছেন।
এ মামলায় ৩৬ জনকে আটক করে নিয়মিত মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। ৩ মাসে উদ্ধার করেছেন গাঁজা ১৪৮ কেজি, ইয়াবা ৬ হাজার ৭ শ ৮১ পিচ, ফেন্সিডিল ৩ বোতল, মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত ২ টি প্রাইভেট কার, ১ টি মাইক্রোবাস জব্দ করেছেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়, হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে যে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছিল সেখান থেকে এক হাজার ইয়াবা অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা লুকোচুরি করার চেষ্টা করেছিল।
এ বিষয়টি জানতে পেরে সহকারি পরিচালক এ কে এম দিদারুল আলম তার সহকর্মীদের জিজ্ঞাসা করার প্রেক্ষিতে তারা প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে। তাছাড়া গত কয়েকদিন পূর্বে চাঁদপুর শহরে বড় স্টেশন ক্লাব রোড এলাকায় ইয়াবার একটি বড় চালান এসে পৌঁছানোর কথা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে আসলে অভিযানের বিষয়ে পরিচালক তার দপ্তরের কর্মকর্তাদের ব্রিফিং দেন। এ ব্রিফিং এর মাধ্যমে কারবারীদের কাছে মুহূর্তের মধ্যে পৌঁছে যায়। মাদক কারবারীরা ওই মাদকের চালানটি নিয়ে চাঁদপুরে ভিন্ন রোডে প্রবেশ করে বলে সহকারি পরিচালক এ কে এম দিদারুল আলম জানান। অভিযানটি শেষ পর্যন্ত পন্ড হয়ে যায়। যে রূপরেখা করা হয়েছিল অভিযান পরিচালনার জন্য সেই রূপরেখা চলে যায় মাদককারীদের কাছে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে এ কে এম দিদারুল আলমের দিক নির্দেশনায় অভিযানে যান, সেন্টু রঞ্জন নাথ (পরিদর্শক), মোহাম্মদ পিয়ার হোসেন (এস আই) দুপিয়ার হোসেন মোহাম্মদ, সাইফুল ইসলাম, (এ এস আই) , মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, (সিপাই ) হাবিবুল্লাহ,সাজ্জাদ হোসেন (সিপাই) সাজ্জাদ হোসেন, শরীফুল ইসলাম (সিপাই) মোঃ শরীফুল ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেন (ওয়্যারলেস অপারেটর), সাখাওয়াত হোসেন, ওমর ফারুক রাজন (গাড়ী চালক)।
অভিযানের নামে তারা তাদের সোর্স উত্তর শ্রীরামদীর জামতলা এলাকায় রিপন ঢালী (৩২)কে আটক করে। এতদিন এই রিপন ঢালীকে দিয়েই সেন্টু রঞ্জন নাথ গংরা মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করতো। আজ তাকে আটকের নাটক সাজিয়ে সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে চিঠি চালাচালি করছে বলে সহকারি পরিচালক এ কে এম দিদারুল আলম জানান।
তিনি আরো জানান, এরা একেক জন চাঁদপুরে ৫/৭ বছর ধরে কর্মরত থাকায় মাদক কারবারিদের সাথে বেশ সক্ষতা গড়ে উঠেছে। যার জন্য অভিযানের নামে তারা নানা অপকর্ম করছে বলে আমি শুধু প্রতিবাদ করেছি।
অভিযোগের বিষয়ে চাঁদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক একেএম দিদারুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা অভিযোগ করেছে তারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করেছে।
তারা নিজেরাই মাদকের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পর্ক করায় মাদক নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না, তাই তাদেরকে সতর্ক করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এটি করেছে। যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে তারা সেদিন থেকে অফিসে আসে না, এমন কি অভিযান ও পরিচালনা করছে বলে আরেকটি সূত্র থেকে জানা যায়।