ঢাকা ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এশার নামাজ পড়তে গিয়ে সাইমন মায়ের কোলে ফিরলেন রক্তভেজা শরীরে

এশার নামাজ পড়তে গিয়ে সাইমন মায়ের কোলে ফিরলেন রক্তভেজা শরীরে। কান্নায় বার বার ভেঙে পড়ছেন সাইমনের মা। বলতে চাইলেন আমার ছেলেকে কেনো নির্মমভাবে হত্যা করেছে।

Model Hospital

এভাবে ১৬ বছর বয়সী কিশোর ছেলে হত্যার বর্ননা দিলেন ২০ সেপ্টেম্বর রাতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মকিমাবাদে দু’গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত কিশোর সাইমনের মা বিউটি আক্তার।

প্রতিদিনই এশার নামাজ আদায় করতে মসজিদে যাওয়ার সময় বলে যায়। এদিনও মসজিদে গিয়েছে কিন্তু আমার কাছে বলে যায়নি। তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি এলাকায়। রাত ৮টার পরে লোকজন বাসার সামনে নিয়ে আসে। কিন্তু রুক্তভেজা শরীরে। এসব কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাইমনের মা।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সাইমনের গ্রামের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের দিকধাইর গ্রামের সরদার বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।

এদিকে সাইমন হত্যার ঘটনায় জনৈক সাইফুল ইসলাম মামা পরিচয়ের ব্যাক্তি হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক। তিনি বলেন, মামলায় ৩০০ থেকে ৪০০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।

বিউটি আক্তার বলেন, স্বপ্ন ছিলো ছেলে কোরআনের হাফেজ হবে। যে কারণে গত দুই বছর আগে হাজীগঞ্জে সাউদুল কুরআন হিফজ মাদ্রাসায় ভর্তি করাই। সেখানে হিফজ বিভাগে পড়াশুনা করত সাইমন।

তিনি বলেন, সাইমনের বয়স যখন ৯ বছর। তখন তার পিতা সাইফুল ইসলাম আমাদের ছেড়ে চলে যান। তিনি অন্যত্র বিয়ে করেন। আমার সাথে ডিভোর্স হয়। ওই বয়সে সাইমনকে নিয়ে আমি বাপের বাড়িতে চলে আসি। গত ৩ বছর পূর্বে মো. ইউনুছ এর সাথে বিয়ে হয় আমার।

সাইমনের বর্তমান বাবা ইউনুছ বলেন, সাইমুন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক জামে মসজিদে এশার নামাজ পড়তে আসে। আমিও সেখানে এশার নামাজ আদায় করতে যাই। ৪ রাকাত নামাজ শেষে একজন পরিচিত ব্যাক্তি ফোন দিয়ে জানালো সংঘর্ষে সাইমন আহত হয়েছে। তখন দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মাঝে অনেক কষ্ট করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাই। সেখান থেকে কুমিল্লা রেফার করে। রাতেই কুমিল্লা থেকে পাঠায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসারত অবস্থায় শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ৭টায় সাইমন মারা যায়। সেখানে হাসপাতালের খরচ আসে সব মিলিয়ে প্রায় ৭২হাজার টাকা। অভাবের সংসারে আমাদের সামর্থ না থাকায় এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে ঢাকা থেকে চাঁদপুরে আসি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শাহরাস্তিতে ১৫০ দিনে কোরআনে হাফেজ হলেন ফাহিম

এশার নামাজ পড়তে গিয়ে সাইমন মায়ের কোলে ফিরলেন রক্তভেজা শরীরে

আপডেট সময় : ০৫:২৬:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এশার নামাজ পড়তে গিয়ে সাইমন মায়ের কোলে ফিরলেন রক্তভেজা শরীরে। কান্নায় বার বার ভেঙে পড়ছেন সাইমনের মা। বলতে চাইলেন আমার ছেলেকে কেনো নির্মমভাবে হত্যা করেছে।

Model Hospital

এভাবে ১৬ বছর বয়সী কিশোর ছেলে হত্যার বর্ননা দিলেন ২০ সেপ্টেম্বর রাতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মকিমাবাদে দু’গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত কিশোর সাইমনের মা বিউটি আক্তার।

প্রতিদিনই এশার নামাজ আদায় করতে মসজিদে যাওয়ার সময় বলে যায়। এদিনও মসজিদে গিয়েছে কিন্তু আমার কাছে বলে যায়নি। তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি এলাকায়। রাত ৮টার পরে লোকজন বাসার সামনে নিয়ে আসে। কিন্তু রুক্তভেজা শরীরে। এসব কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাইমনের মা।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সাইমনের গ্রামের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের দিকধাইর গ্রামের সরদার বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।

এদিকে সাইমন হত্যার ঘটনায় জনৈক সাইফুল ইসলাম মামা পরিচয়ের ব্যাক্তি হাজীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক। তিনি বলেন, মামলায় ৩০০ থেকে ৪০০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।

বিউটি আক্তার বলেন, স্বপ্ন ছিলো ছেলে কোরআনের হাফেজ হবে। যে কারণে গত দুই বছর আগে হাজীগঞ্জে সাউদুল কুরআন হিফজ মাদ্রাসায় ভর্তি করাই। সেখানে হিফজ বিভাগে পড়াশুনা করত সাইমন।

তিনি বলেন, সাইমনের বয়স যখন ৯ বছর। তখন তার পিতা সাইফুল ইসলাম আমাদের ছেড়ে চলে যান। তিনি অন্যত্র বিয়ে করেন। আমার সাথে ডিভোর্স হয়। ওই বয়সে সাইমনকে নিয়ে আমি বাপের বাড়িতে চলে আসি। গত ৩ বছর পূর্বে মো. ইউনুছ এর সাথে বিয়ে হয় আমার।

সাইমনের বর্তমান বাবা ইউনুছ বলেন, সাইমুন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক জামে মসজিদে এশার নামাজ পড়তে আসে। আমিও সেখানে এশার নামাজ আদায় করতে যাই। ৪ রাকাত নামাজ শেষে একজন পরিচিত ব্যাক্তি ফোন দিয়ে জানালো সংঘর্ষে সাইমন আহত হয়েছে। তখন দুই গ্রুপের সংঘর্ষের মাঝে অনেক কষ্ট করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাই। সেখান থেকে কুমিল্লা রেফার করে। রাতেই কুমিল্লা থেকে পাঠায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসারত অবস্থায় শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ৭টায় সাইমন মারা যায়। সেখানে হাসপাতালের খরচ আসে সব মিলিয়ে প্রায় ৭২হাজার টাকা। অভাবের সংসারে আমাদের সামর্থ না থাকায় এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে ঢাকা থেকে চাঁদপুরে আসি।