শাহরাস্তি উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি), এসিল্যান্ড ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা চৌধুরীর শুদ্ধাচার সম্মানে ভূষিত হয়ে জেলায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন।
তিনি চা়ঁদপুর জেলায় এ সম্মাননা পেলেন। চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জাতীয় শুদ্ধাচার পুরস্কারটির জন্য তিনি রেজুলেশন ভূক্ত বা মনোনীত হওয়ার গৌরব অর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি যে কোনদিন সুবিধাজনক সময়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের (চাঁদপুর) হাত থেকে এটি গ্রহন করবেন বলে কথা রয়েছে।
এ শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে নগদ অর্থ, সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ।
এদিকে সহকারী কমিশনার ভূমি রেজওয়ানা চৌধুরীর এ অর্জনের সংবাদটি চাউর হতেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: ইয়াসির আরাফাত তার কার্যালয়ে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, গ্রেড ২-৯ ভুক্ত কর্মচারীদের শুদ্ধাচার পুরস্কার ১০টি মূল্যায়ন সূচক থাকে, ধার্যকৃত সূচকে ১০ নাম্বার করে ১০০ নাম্বার অর্জন করে তিনি এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হন।
তিনি সেই ১০ টি মূল্যায়ন সূচক যেমন সততা ও নৈতিকতা, সেবাগ্রহীতাদের সেবা প্রদান, পেশাগত দক্ষতা ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার (ই-নথি, ই-সার্ভিস ইত্যাদি), অধঃস্তন কর্মচারীদের তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ,দলগত কাজে সমন্বয়, সময়ানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলাবোধ, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এবং শুদ্ধাচার কৌশল কর্ম-পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তৎপরতা,কর্তব্যনিষ্ঠা ও স্ব-প্রণোদিত উদ্যোগ,উদ্ভাবন ও সংস্কার কার্যক্রমে আগ্রহ, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব পালনের মত ধাপগুলো তিনি সফলতার সহিত উত্তীর্ণ হয়ে এই সম্মানের যোগ্য বলে বিবেচিত হলেন।
এ বিষয়ে রেজওয়ানা চৌধুরী বলেন, উপজেলা পর্যায়ে সকলকে নিয়ে কাজ করার ফলেই এই পুরস্কার অর্জিত হয়েছে। এ প্রাপ্তি ভবিষ্যতে আমাকে কাজের প্রতি আরও বেশি দায়বদ্ধতা এবং দায়িত্বশীল করে তুলবে। আগামী দিনগুলোতে নিজের সর্বোচ্চ মেধা, শ্রম ও যোগ্যতা দিয়ে দেশ এবং মানুষের সেবা করতে নিজেকে আরও বেশি উৎসর্গ করে দিতে চাই। এক পর্যায়ে স্থানীয় সাংসদ মেজর (অব:) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইয়াসির আরাফাত এর প্রতি কৃতজ্ঞচিত্তে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
তিনি ২০২৩ সালের ২ মে মঙ্গলবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে শাহরাস্তি উপজেলায় যোগদান করেন। তার সততা ও কর্মদক্ষতায় পাল্টে গেছে উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও সার্বিক চিত্র। সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি দপ্তরের কর্মকাণ্ডে পূর্বের চেয়েও ফিরে এসেছে গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা। কমেছে জনভোগান্তি আর বৃদ্ধি পেয়েছে জনসেবার মান।
শাহরাস্তি উপজেলার কৃষি জমির টপসয়েল লুন্ঠকারিদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান, ভূমিদস্যু ,অবৈধ ড্রেজার,জনগণের পথে অবৈধ বেড়া উন্মুক্ত করন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ভেজাল খাদ্য তথা খাদ্য নিরাপত্তায় অভিযান, ভূমি সেবা সহজিকরণ,বয়োজ্যেষ্ঠ, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দ্রুত সেবা প্রদান,সহকারী কমিশনার(ভূমি) কার্যালয়ে নারীদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা চালু করন ইত্যাদি।
এছাড়া সহকারী ভূমি অফিসের আঙ্গিনায় দাপ্তরিক কাজ সামলিয়ে তিনি হোম গার্ডেনিং ও কৃষি উৎপাদনে ঈর্ষান্বিত সফলতা দেখিয়েছেন। ওই সফলতার গল্প ইতোমধ্যে জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় ফলাওভাবে প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে এই জনপদের আবাল-বৃদ্ধ বনিতার জীবন মান উন্নয়নে তার সংশ্লিষ্ট সেবাসমূহ নিরলসভাবে বিলিয়ে দিয়ে মাঠ পর্যায়ে একজন সরকারি কর্মকর্তা হওয়ার চূড়ান্ত স্বপ্ন দেখছেন।
তিনি চট্টগ্রামের বিখ্যাত প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি হতে ইংরেজি ভার্সনে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন শেষে ৩৭ তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন।
পরে সহকারী কমিশনার হিসেবে ভোলা, বান্দরবান, নারায়ণগঞ্জ ডিসি অফিসে চাকুরী শেষে সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিসে যোগদান করেন। এরপর বিগত ২০২৩সালের মে মাসে(২-মে) শাহরাস্তি উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে প্রথম কর্মময় জীবন শুরু করেন।
তিনি চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলার অধিবাসী। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। স্বামী রেজোয়ান সাঈদ, সহকারি পুলিশ সুপার হিসেবে এএসপি কচুয়া (সার্কেল), সুনামের সহিত কর্মরত রয়েছেন।